পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৩৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

327 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় পত্র আর এই ক্ষমতালোভী স্বার্থপর মহলের পদলেহন করে তাদের মনস্তুষ্টির জন্যে চাটুকারিতা করে চলেছে বাংলার কিছু সংখ্যক বিশ্বাসঘাতক, পিশাচ হানাদারদের সাময়িক সাফল্যকে তারা স্থায়ী সাফল্য বলে মনে করে, হানাদার পশুদের সাথে হাত মিলিয়ে বাংলার গণজীবনে হাহাকার সৃষ্টি করেছে। বিশ্বাসঘাতকদের কেউ কখনো বিশ্বাস করে না-ইতিহাস তার সাক্ষী। মীরজাফরকে রেহাই দেওয়া হয়নি। বিশ্বাসঘাতক যাদের জন্যে দেশ ও জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, স্বার্থসিদ্ধির পর তারাই তাদের খতম করে দেয়। তাই বিশ্বাসঘাতকের জান-মাল দু’দিক থেকেই বিপন্ন। বাংলার মুক্তিকামী মানুষ, বাংলার মাটি থেকে এসব বিশ্বাসঘাতক মোনাফেক, পরগাছাদের নিমূল করে দিতে বদ্ধপরিকর। এ অভিযান চলছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকজন বিশ্বাসঘাতককে বিলোপ করে দেয়া হয়েছে। বিশ্বাসঘাতককে তাদের কাজের জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। কোন ক্ষমা নেই। তাদের উৎখাত করা হবেই-তাদের পাঞ্জাবী প্রভুদের বেষ্টনী ভেদ করে মুক্তি সংগ্রামী বুলেট বিশ্বাসঘাতকের লাগবেই। নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের তীব্র জুলায় বিশ্বাসঘাতকদের ধন-সম্পত্তি দাউ দাউ করে জুলবে। জাতীয় স্বার্থে বাঙ্গালী শত্রকে ক্ষমা করবে না, করতে পারে না-তাদের চরম শাস্তি দেওয়া হবে। আজকের এ সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। বাঙ্গালীর এ সংগ্রাম বাঁচার সংগ্রাম , সত্য ও ন্যায়ের সংগ্রাম । মানুষ নিজের গরজে রাষ্ট্র সৃষ্টি করে। রাষ্ট্রের জন্য মানুষের সৃষ্টি নয়। মানুষকে মেরে রাষ্ট্র হতে পারে না। বাঙ্গালী তাদের দু’যুগের তিক্ত অভিজ্ঞতায় নিজেরাই নিজেদের শাসন করার দাবী জানিয়েছে;বাঁচার মত বাঁচতে দাবী জানিয়েছে। বাঙ্গালী তাদের সন্তানদের জন্যে উপযুক্ত শিক্ষা লাভের, চিকিৎসার দাবী জানিয়েছে ; জানিয়েছে, বেকারত্বের অবসানে কর্মসংস্থানের দাবী জানিয়েছে। মানুষের মৌলিক অধিকারে শান্তিতে ও সুখে বাস করার দাবী জানিয়েছে। অন্য কোন অপরাধ করেনি। বাঙ্গালীর অটুট সঙ্কল্প, ঐক্য ও দৃঢ়তা তার মুক্তি আনবে; বাঙ্গালী পশ্চিম পাকিস্তানী অক্টোপাসের কবল থেকে মুক্ত হবেই। আল্লাহতা'লা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনঃ সত্যের জয় ও মিথ্যার বিনাশ অবশ্যম্ভাবী। বাঙ্গালী এত সম্পূর্ণ বিশ্বাসী। জয়বাংলা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রচার দপ্তর হইতে প্রকাশিত।