পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খণ্ড
145

 ৯ম বেঙ্গল উত্তর এবং দক্ষিণ দিক থেকে ময়নামতি এলাকা সম্পূর্ণরূপে ঘিরে ফেলে। কুমিল্লার হাজার হাজার গেরিলা ৯ম বেঙ্গলের সঙ্গে যোগ দিয়ে পশ্চিম দিকে অবস্থান নিয়ে ময়নামতিকে ঢাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ১৫ তারিখ বিকেলে অবরোধ সম্পন্ন হয়। এ সময় পাকসেনাদেরকে আত্মসমর্পণের আদেশ দেয়া হয়। পাকসেনারা সেই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে তাদের প্রতিরক্ষার কাজে অটল থাকে। ময়নামতি ছাউনীতে চূড়ান্ত আক্রমনের জন্য ৯ম বেঙ্গল গেরিলা এবং মিত্র বাহিনী প্রস্তুতি নেয়। ১৬ই ডিসেম্বর ময়নামতি গ্যারিসন কমাণ্ডার আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করে সংবাদ পাঠায়। সেই দিনই বিকেল চারটায় ময়নামতি গ্যারিসনে অবস্থানরত পাকসেনারা অন্যান্য জায়গার মত আনুষ্ঠানিকভাবে ৯ম বেঙ্গল এবং মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণের পর সমস্ত পাকসেনাকে বিভিন্ন জায়গাতে ৯ম বেঙ্গলের তত্ত্বাবধানে স্থানান্তরিত করা হয় এবং তাদের অস্ত্রশস্ত্র বেঙ্গল লাইনে একত্রে জমা করে। ৯ম বেঙ্গল আবার জয়ী হয়ে তাদের পুরানা বেঙ্গল লাইনে ফিরে এসে বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়ে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ন’মাসের পূর্বে এখান থেকে যে ৪র্থ বেঙ্গলের সৈনিকরা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্য দেশমাতৃকার প্রতি পাণের টানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই ৪র্থ বেঙ্গলেরই অধিকাংশ সৈনিক ও নতুন রিক্রট করা সৈনিকদের নিয়ে যুদ্ধকালীন বিপর্যস্ত সময়ে ৯ম বেঙ্গল রেজিমেণ্ট গড়ে উঠেছিল।