পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

198 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড কমাণ্ডার-এর আদেশ অমান্য করে বলেন যে, আমি তার সঙ্গে যাব। এবং আমার কোম্পানী নিয়ে ১৭ তারিখেই চিটাগাং শহরে মুভ করি। সেদিনই কি পাকিস্তান আর্মি সারেণ্ডার করে? জী। এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন সারেণ্ডার করানো হয়নি। পাকিস্তানী সেনার যে ২৪ এফ-এফ ব্যাটালিয়ন এখানে তাদেরকে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে আনা হয় এবং তারা সেখানে সারেণ্ডার করে। আমি এই কলেজে পড়াশুনা করেছি, আর সেই কলেজেই পাকিস্তান আর্মি সারেণ্ডার করছেএটা আমার কাছে খুব আনন্দের বিষয় ছিল। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, আমার সি-ও যিনি ছিলেন লেঃ কর্নেল জাফর ইমাম উনি ২৪ এফ-এফএ ছিলেন। তারই ব্যাটালিয়ন এখানে সারেণ্ডার করলো আমাদের কাছে, এটা বেশ আনন্দের ব্যাপার ছিল। তাকে যখন তার ব্যাটালিয়ন-এর লোকজনকে দেখতে হলো তখন অনেকেই কান্নাকাটি করলো। লেঃ কর্নেল জাফর ইমামের ব্যাটসম্যান নানা কথা জিজ্ঞাসা করতে করতে অঝোরে কাঁদতে থাকে। আপনাদের ফরমেশন-এ যেসব গেরিলা বা এফ-এফ ছিল তাদের সঙ্গে কিভাবে সম্বনয় সাধন করতেন? আমার ব্যাটালিয়ন কমাণ্ডার প্রথমে সাবসেক্টর কমাণ্ডার ছিলেন। তিনি সাবসেক্টর চালাতেন। তারপর ক্যাপ্টেন মজিবুল হক। যিনি পরে এবং এখনও বোধ হয় ট্রেনিং কলেজ-এর প্রিন্সিপাল। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। আমরা একসঙ্গে কাজে করতাম, লোকাল যারা গেরিলা ছিল তারা আমাদের কোন অসুবিধা হতো না। আমরা তাদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারতাম। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে কিভাবে সমন্বয় সাধন করা হতো ? সম্পর্ক কেমন ছিল? এমনিতে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালই ছিল। তবে আমাদের সেনাবাহিনী চায় নাই যে, ৩রা ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করুক। সেদিন আমাদের অনেক লোকই কেদেছিল। ইতিমধ্যে, আপনার কথায় দেখতে পাচ্ছি যে, অনেকখানি জায়গা পুনঃদখল করে ভিতরে পৌছে গেছেন? জী, আমদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, আরও হয়তো দু’বছর লাগবে কিন্তু বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবেই হবে।