পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/২৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খণ্ড
208

কোম্পানী- লেফটেন্যাণ্ট নজরুল ইসলাম, এ কোম্পানী- লেফটেন্যাণ্ট শামসুল হুদা বাচ্চু। গ) এডজুট্যাণ্ট- লেফটেন্যাণ্ট কবির। ঘ) মেডিক্যাল অফিসার- মইনুল হোসেন।

 ৪। ৩নং সেক্টরঃ ক) কমাণ্ডার মেজর নুরুজ্জামান খ) সিভিলিয়ান স্টাফ অফিসার- নুরুউদ্দীন মাহমুদ ও এম. এ. মহী। গ) কোম্পানী কমাণ্ডারগণ হলেনঃ মেজর মতিন, ক্যাপ্টেন এজাজা আহমদ চৌধুরী, লেঃ সাদেক, লেঃ মজুমদার, লেঃ জাহাঙ্গীর (এরা প্রত্যেকে দুটো করে কোম্পানী পরিচালনা করত)। এ্যাসিস্ট্যাণ্ট সিভিলিয়ান অফিসার- আলকাস মিঞা ও আশেক হোসেন।

 ৩নং সেক্টরকে আমি ‘এস' ফোর্স থেকে পৃথক করে দেই যাতে তারা সীমান্ত এলাকায় বহাল রাখতে পারে। ‘এস’ ফোর্স-কে পৃথক জায়গায় নিয়ে যাই যাতে তারা কনভেনশনাল ওয়ারফেয়ার-এর জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে। এছাড়াও যেহেতু ব্যাটালিয়নে লোকসংখ্যা কম ছিল সেহেতু তাদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য নতুন করে লোক নিয়োগ করা দরকার ছিল। এ ব্যাটালিয়নগুলোর শক্তি বৃদ্ধির জন্য আমি ১২০০ নতুন লোক ভর্তি করি। এ ভর্তি শেষ হয় সেপ্টম্বরের শেষের দিকে। অক্টোবর এবং নভেম্বর মাস পর্যন্ত তাদের “নিয়মিত” যুদ্ধ করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

 এই ট্রেনিং-এর সময় আমাকে ২ ইস্ট বেঙ্গল থেকে এক কোম্পানী সৈন্য পাঠাতে হয়েছিল বেলুনিয়ার যুদ্ধে ১০ ইস্ট বেঙ্গলের সাথে ২নং সেক্টরে যুদ্ধ করার জন্য। নভেম্বর মাসের ২১/২২ তারিখের দিকে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং বেলুনিয়া সেক্টর আমাদের হস্তগত হবার পর নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখে আমি তাদেরকে আমার এলাকায় ফিরিয়ে আনি এবং আখাউড়া আক্রমণের পরিকল্পনা নেই।

 “আখাউড়া যুদ্ধের” জন্য আমি দুই ব্যাটালিয়ন সৈনিক নিয়োগ করেছিলাম। এক ব্যাটালিয়ন অর্থাৎ ১১ ইস্ট বেঙ্গলকে (এই ব্যাটালিয়ন-এর সৈনিকদের ১৫৭ জন ব্যতীত সবই নতুন ছিল) এ ভার দেওয়া হয় যে, তারা যেন পাকিস্তানী কোন সৈনিককে সিলেটের দিক থেকে অগ্রসর হতে না দেয়। আর ২ ইস্ট বেঙ্গলকে এ কাজ দেয়া হয় তারা যেন সিংগারবিল থেকে আখাউড়া পর্যন্ত সমস্ত এলাকা শত্রুমুক্ত করে। এ দু ব্যাটালিয়ন সৈন্য ছাড়াও আমি ৩নং সেক্টর থেকে দু কোম্পানী সৈন্য মোতায়েন করি যাতে পাকিস্তানী সৈন্যরা আগরতলা বিমানবন্দরের দিক থেকে আক্রমণ করে ২য় ইস্ট বেঙ্গলের কোনো ক্ষতি করতে না পারে।

 এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হয় ৩০শে নভেম্বর/১লা ডিসেম্বর রাতে। ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত আমার সৈন্যগণ এভাবে মোতায়েন করা হয়ঃ

 ১১ ইস্ট বেঙ্গল, মুকুন্দপুর, হরশপুর এলাকাগুলো তাদের নিয়ন্ত্রাধীনে আনে। এ ব্যাটালিয়নের নেতৃত্ব দেন মেজর নাসিম (বর্তমানে লেফটেন্যাণ্ট কর্নেল)।

 তিন নং সেক্টরে যে দুটো কোম্পানী নিয়োগ করা হয়েছিল তারা আগরতলা বিমানবন্দরের উত্তর পশ্চিমাংশে খনন করে তাদের অবস্থা শক্তিশালী করে। এ কোম্পানী দুটোর নেতৃত্ব দেন মেজর মতিন।

 দ্বিতীয় ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেণ্ট আক্রমণের জন্য তাদের স্টার্ট লাইনে তৈরী। এ ব্যাটালিয়নে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা হলেন ব্যাটালিয়ন কমাণ্ডার মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরী এবং কোম্পানী কমাণ্ডারের মধ্যে ছিলেন- এ কোম্পানী- মেজর মতিয়র রহমান, বি কোম্পানী- লেফটেন্যাণ্ট বদিউজ্জামান, সি কোম্পানী- লেফটেন্যাণ্ট ইব্রাহীম, ডি কোম্পানী লেফটেন্যাণ্ট মোরশেদ।

 আক্রমণের সময় ছিল রাত ১টা। ১লা ডিসেম্বরের সকাল ৬টা পর্যন্ত ব্যাটালিয়ন যুদ্ধ করে আজমপুর রেলওয়ে স্টেশনের উত্তরাংশ পর্যন্ত দখল করে। বেলা প্রায় তিনটা পর্যন্ত আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন এবং তার দক্ষিণাংশ আমাদের হস্তগত হয়। ১লা/২রা ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আজমপুরে অবস্থানরত