পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

279 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড প্রশ্নঃ আপনার ক’জন রওনা হলেন? উত্তরঃ আমরা চারজন ছিলাম। তিনজন কুমিল্লার ছেলে ছিল আর আমি একা সিলেটের ছেলে ছিলাম। আমরা সিলেট টাউনে আসলাম তিনদিন হাঁটার পর। প্রশ্নঃ আপনার সঙ্গে কে কে ছিল? উত্তরঃ আমার সঙ্গে কুমিল্লার একজন ছেলে ছিল রেবতী নাম, আর একটা ছেলে ছিল? ওর নাম হলো সিদিক, আর একজন ছিলেন উনি মারা ঘেছেন, উনার নাম ছিল হাফিজ। প্রশ্নঃ আপনাদের সাথে আর্মস কি ছিল? উত্তরঃ আমাদের সাথে শুধু গ্রোনড ও এক্সপ্লোসিভ ছিল। সিলেট টাউনে আমি তিন দিন হাঁটার পর। সিলেটে একদিন ছিলাম। সিলেট টাউনে আমাদের বাড়িটা খালি ছিল। ওটাতেই এক রাত্রি আমরা কাটালাম। প্রশ্নঃ কোন লোক জানতে পারেনি? উত্তরঃ না, জানতে পারেনি। সিলেটের কয়েকজন লোক আমাকে দেখেছে, কিন্তু দেখে সন্দেহ করেনি। কারণ আমি কোন পলিটিক্যাল পার্টি বা কোন ষ্টুডেন্ট অরগানাইজেশনের মেম্বার ছিলাম না। এই জন্য ওরা আমাকে সন্দেহ করেনি। যেদিন পৌছলাম সেদিন রাত্রে আমরা সিলেট টাউনটা রেকি করলাম। এর পরের দিন রাত্রি আনুমানিক একটার সময় সিলেট টাউনের সেন্টারে- সিলেট টাউনে নাইয়ার পুল নামক একটা জায়গায় আছে রামকৃষ্ণ মিশন। রামকৃষ্ণ মিশনের সামনে একটি ট্রান্সফরমার ছিল এবং টেলিফোনের একটি জংশন বক্স ছিল। ওই দুটা আমি সিলেক্ট করি। আমি দেখলাম টাউনের বাইরে করলে খুব একটা এ্যাফেক্ট হবে না, এটা টাউনের হার্ট, এখানে করা উচিত – তখন আমরা ওইখানে প্রশ্নঃ আচ্ছা, ওখানে কোন গার্ড ছিল না? উত্তরঃ ওখানে যখন আমরা প্রথম গেলাম তখন রাস্তায় আমাদের সাথে পুলিশের দেখা হলো পুলিশ টর্চলাইট আসলাম। একটি পুকুর ছিল, পুকুরটার সাইডে কচুরিপানার ভিতর দিয়ে আসলাম এবং ওখানে গার্ড ছিল। গার্ডও ওখান থেকে ৫০/৬০ গজ দূরে একটি দোকানের আড়ালে ছিল। ওরা খেয়াল করেনি। তখন হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলো। বৃষ্টির মধ্যে আমরা আমাদের এক্সপ্লোসিভ বাঁধলাম। আমরা চারজন ছিলাম। দু’জন টেলিফোনে বাঁধলাম আর দু’জন ট্রান্সফরমারে বাঁধলাম। টেলিফোনেরটা আমরা কমপ্লিট করতে পেরেছিলাম, ট্রান্সফরমারটায় করেছিলাম একটু তাড়াহুড়ার ভিতরে, ওটার এয়ারটাইট হতে পারেনি, এদিকে গাড়ির পেট্রোল আসছিল, সেহেতু ওটা তাড়াতাড়ি আমাদের এক্সপ্লোশান করতে হলো ট্রান্সফরমার যেটা ছিল ওটা এক্সপ্লোশান হয়নি। টেলিফোনটা এক্সপ্লোশান হয়েছিল। আমার টোটাল সময় ছিলাম ৩৬/৩৭ মিনিট। ওটা এক্সপ্লোশান হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে আমরা উইথড্র করে বেরিয়ে আসি এবং সিলেট টাউনের কুশিয়ারা নদীর পার হয়ে আসি। ওরা আমাদের পারসু করেছিল কিন্তু ধরতে পারেনি। ঐদিন আমরা পুরা দিন হাঁটি। সন্ধ্যার দিক আমরা বর্ডারের কাছে এসে পৌছি। সন্ধ্যার দিকে বর্ডারে ফিরে একটি গ্রামে আমরা রাত্রে থাকি। পরের দিন সকালে আমরা রওনা দিই। রওনা দেয়ার সময় আমাদেরকে কিছু লোক ধরে ফেলেছিল। ওখানে কিছু লোক সন্দেহ করে এবং আমাদেরকে একটি ঘরে বন্ধ করা হয়েছিল। বন্ধ করে পাকিস্তান আর্মিকে খবর দেয়া হয়েছিল। আমরা চারজন ছিলাম। আমি ওদেরকে বলালাম যে এখন পাকিস্তান আর্মি আসলেও আমরা মারা যাবো আর এভাবেও আমরা মারা যাবো। কিন্তু এখান থেকে বর্ডার মাত্র পার্চ মাইল, আমরা শেষ চেষ্টা করি। তখন