পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

280 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড আমরা একটু হৈ চৈ করলাম। ওদের একটা লোক আসলো। তখন আমি বললাম, দেখ আমাদের কাছে এখন ২৪টা গ্রেনেড আছে। আমরা যদি দুটা গ্রেনেড মারি তখন তোমাদের এখানে কিছু থাকবে না, বেশী ঝামেলা করো না। এই কথা বলে আমি একটি গ্রেনেড বাইরে থ্রো করলাম, থ্রো করতেই লোকজন সরে গেল। ওই সুযোগেই আমরা বলতে গেলে পাঁচ মাইল দৌড়ে চলে এসেছি। প্রশ্নঃ ওটাই কি সিলেট শহরে ফাস্ট এক্সপ্লোশান ? উত্তরঃ ওটাই সিলেটের ফাস্ট এক্সপ্লোশান, বলতে গেলে ওটাই লাষ্ট এক্সপ্লোশান। এরপর কোন এক্সপ্লোশান সিলেট শহরে হয়নি। তিনদিনের মত লেগেছিল সেক্টর হেডকোয়ার্টারে পৌছাতে। তার আগে সিলেট টাউন থেকে লোক পালায়, বর্ডার ক্রস করে। যখন আমরা বর্ডারে পৌছাই করিমগঞ্জে, তখন আমরা পৌছার সঙ্গে সঙ্গে সিভিলিয়ানরা যারা ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বা মুক্তিযোদ্ধারা, ওরা জায়গায় অপারেশন করছো। যে জায়গায় আমরা পৌছেছি সে জায়গাটার নামটা বলছিল। তখন ‘বাংলাদেশ’ নামে একটা পেপার বের হতো। পেপারে দেখলাম খবরটা ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। হেডকোয়ার্টারে পৌছানোর পর আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেন এবং পরে জেনারেল দলও জিজ্ঞাসাবাদ করলেন- কেমনে কি করলাম, কোথায় থাকা হলো। প্রশ্নঃনেক্সট টাস্ক আপনাকে কবে দেয়া হলো? উত্তরঃ এরপর আমি টাস্ক করতে পারিনি। কারণ যেদিন পৌছলাম তার একদিন পর কমিশনের ইন্টারভিউর জন্য ডাকলো। প্রশ্নঃআচ্ছা, তারপর আপনি চলে গেলেন ট্রেনিং-এ —মূর্তিতে। ওখানে কতদিন ট্রেনিং নেন? উত্তরঃ ওখানে তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মতো ট্রেনিং দেয়া হয়। প্রশ্নঃকমিশন পাওয়ার পর কোথায় আসলেন? উত্তরঃ আমি আবার ফোর সেক্টরে চলে আসি। এখানে আসার পর আমাদের আবার এক সপ্তাহের ট্রেনিং-এ ইন্দ্রনগরে পাঠানো হলো, যেখানে আমরা এফ-এফ হিসাবে ট্রেনিং করেছিলাম। ওই জায়গায় আমাদের পাঠানো হলো এবং ওই জায়গায় আমাদের টাস্ক দেওয়া হলো, মহড়া হিসেবে। আমাদের সেক্টর কমাণ্ডার কতটুকু ট্রেনিং নিচ্ছে এবং কার কতটুকু ক্যাপাবিলিটি আছে সেটা জানার জন্য উনি কিছু টাস্ক নেন। ওই টাস্কটা নেওয়ার পর আমরা আবার শিলচর চলে আসলাম। শিলচরে চলে আসার পর আমরা বিভিন্ন যে অফিসার চার-পাঁচজন ছিলাম, আমাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হলো। আমাকে দেয়া হলো কৈলাশ শহর সাব-সেক্টরে সাব-সেক্টর কমাণ্ডার হিসেবে। কারণ আমার আগে যিনি ছিলেন উনি একজন ইণ্ডিয়ান অফিসার ছিলেন। উনার নাম ছিল ক্যাপ্টেন হামিদ। প্রশ্নঃ ওই সাব-সেক্টরে জয়েন করার পর আপনার প্রথম টাস্ক কি ছিল? উত্তরঃ এই সাব-সেক্টরে জয়েন করার পর, ওখানে কিছু এলাকা ছিল আমাদের ছেলেরা দখল করে মানে ডিফেন্স লাগায়। আমাকে টাস্ক দেওয়া ওই ডিফেন্সে প্রায়ই এ্যাটাক আসতো পাকিস্তান আর্মির। কারণ আমাদের জায়গাটা ছিল একটা খালের পাড়ে। প্রশ্নঃ ওটা কি বাংলাদেশের মধ্যেই ? উত্তরঃ বাংলাদেশের মধ্যেই।