পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৪৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

465 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড কোম্পানী ভোর পাচটার সময় হালুয়াঘাট ক্যাম্প থেকে রওনা হয়। এক কোম্পানী রামচন্দ্রকোরা বি-ও-পি হয়ে আমাদের হাইড-আউট ডালুর পূর্ব দিকে অবস্থান নেয়। আর এক কোম্পানী হাতি পাগার বি-ও-পি হয়ে আমাদের হাইড-আউটে আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। আর এক কোম্পানী সোজা ডালু চেকপোষ্ট অভিমুখে অগ্রসর হয়। আমার তিন দিক থেকে ঘেরাও হয়ে যাই। তখন ক্যাপ্টেন ত্যাগীও আমাদের সাথে ছিলেন। আমরা খুব অসুবিধায় পড়ে যাই এবং তাদের সাথে মোকাবেলা করি। আমাদের পক্ষে দু’জন শহীদ হন। এই আক্রমণে ভারতীয় বি-এস-এফ’এর ১১ জন সিপাহী নিহত হন এবং তাদের একজন জমাদার নায়েক সুবেদারকে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। ২৭শে জুলাই ল্যান্স নায়েক মেজবাহউদ্দিন ও তার দলের সংগে নালিতাবাড়ি থানার অন্তগত তন্তর এবং মায়াঘাসিতে পাকিস্তানী সৈন্যের এক পেট্রোল পার্টির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে ১৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। মেজবাহউদ্দিন ও মারাত্মক ভাবে আহত হন। ৬ই আগষ্ট বান্দরকাটা বি-ও-পি ২ কোম্পানী এফ-এফ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র মাসুদ, ছাত্রনেতা হাশেম এবং আমাদের নেতৃত্বে আক্রমণ চালানো হয়। বান্দরকোটা বি-ও-পিতে পাকিস্তানীদের যথেষ্ট হতাহত হয়। শত্রপক্ষের ৩০ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়। আমাদের পক্ষে পাচজন শাহাদাৎ বরণ করেন। স্বাক্ষরঃ মোহাম্মদ জিয়াউল হক/২৭-৬-৭৪ সুবেদার মেজর সাক্ষাৎকারঃ সুবেদার মোসলেহউদ্দীন আহমদ ২৬-৬-৭৩ আগষ্ট মাসের ৩০ তারিখে ঢাকা সেনানিবাসের কড়া পাহারার মধ্যে দিয়ে অন্ধকার রাত্রিতে পাহারাদারের কাছ থেকে রাইফেল হস্তগত করে পালাতে সক্ষম হই। অতঃপর সেনানিবাসের কিছু দুরে এক জঙ্গলে রাত্রি অতিবাহিত করি। পরের দিন সকালে রাইফেলটি একটি গর্তে পুঁতে ছদ্মবেশে ময়মনসিংহের পথে রওনা হই। ১০ দিন চলার পর নেত্রকোনা মহকুমার উত্তর অংশের সীমান্ত মহেশখোলা দিয়ে ভারত প্রবেশ করি। ঐদিন ছিল মে মাসের ৯ তারিখ। সেখানে ডাক্তার আখলাক হোসেন এম-পি-এর কাছে হাজির হই। তার কাছ থেকে পরিচয়পত্র নিয়ে তুরা চলে যাই। সেখানে আমাদের ১১ নং সেক্টরের হেডকোয়াটার ছিল। তখন ঐ সেক্টরের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কর্নেল আবু তাহের। তিনি কামালপুরের যুদ্ধে আহত হওয়ার পর স্কোয়াড্রন লীডার হামিদুল্লাহ নেতৃত্ব দেন। সেই সময় সাবসেক্টরের (কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা) নেতৃত্ব দিতেন ভারতীয় আর্মির একজন ক্যাপ্টেন। এর কিছুদিন পর বাংলাদেশ আর্মির ক্যাপ্টেন হামিদ (বর্তমানে মেজর মতিয়ার রহমান) ঐ কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা অর্থাৎ ১১নং সেক্টরের অধিনায়ক নিযুক্ত হন। ক্যাপ্টেন হামিদের নেতৃত্বে আর্মি মেডিক্যাল অফিসার মনোনীত হয়ে কয়েকশত মুক্তিযোদ্ধাসহ মহেশখোলা দিয়ে বাংলাদেশের ভিতরে প্রবেশ করি। সেখান থেকে নৌকাতে হাসপাতালের যাবতীয় ঔষধপত্র ও সরঞ্জাম নিয়ে বাংলাদেশের ভিতরে ধরমপাশা থানার দিকে রওনা হই। বাংলাদেশে প্রবেশ করার পথেই আমাদেরকে যোগাযোগ এবং নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীবৃন্দের সহায়তায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প তৈরী করে আসি। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যায় যে, আমাদের প্রধান এবং প্রথম কাজ ছিল ধরমপাশা থানা মুক্ত করা। কারণ সেখানে তিন মাইল চর্তুদিকে খানদসু্যরা অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন, হত্যা, লুণ্ঠন ও ব্যভিচার করে উক্ত স্থানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। উক্ত থানা হেডকোয়াটারে প্রায় ২৫০ জন পাকসেনা, রাজাকার, আলবদর