পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৪৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

467 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড মুক্তিবাহিনীর নিহতদের মধ্যে আমানুল্লাহ কবিরের নাম বিশেষভাবে বলা যায়। আব্দুল মালেকসহ আরও কয়েকজন আহত হন। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি মেজর তাহেরের নেতৃত্বে ৮টি কোম্পানীকে নিয়ে ভারতীয় সৈন্যসহ কামালপুর আক্রমণ করা হয়। রাত ১২টার দিকে ডিফেন্স পজিশনে চলে যাই। ভোর ৪টা ৩০মিনিটে আমরা কামালপুর আক্রমণ করি। আমরা ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা মেজর তাহেরের সঙ্গে ছিলাম। আমাদের ওপর নির্দেশ ছিল কামালপুর দখলের পরপরই অস্ত্রশস্ত্র দখল করে নিয়ে আসতে হবে। ভোর ছটার দিকে মেজর তাহের সহ আমরা নয়াপাড়ার শেষপ্রান্তে গিয়ে পৌছাই। আমাদের অস্ত্র ছিল ২টি ষ্টেন, ৮টি এস-এল-আর এবং আমার সঙ্গে একটি অয়্যারলেস সেট ছিল। মেজর তাহেরের সঙ্গে একটি অয়্যারলেস সেট ছিল এবং তার সঙ্গে সর্ব মুহুর্তের জন্য একটি ছড়ি থাকতো। রাস্তার পাশে আমরা পজিশন নিলাম। উভয়পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। সকাল প্রায় ৮টার দিকে একটি শেল মেজর তাহেরের বাঁ পায়ে এসে পড়ে। মেজর তাহের চিৎকার করে ওঠেন। আমি তার ছড়ি এবং অয়্যারলেস সেটটি নিয়ে নিই। আমি এবং সফি মেজর তাহেরকে ধরে পেছনে নিয়ে আসি। লেঃ মিজান তাড়াতাড়ি এসে ধরলেন। আমরা কাঁদছিলাম। মেজর তাহের চুপ করতে বলে সবাইকে অগ্রসর হতে বললেন। সেদিন কামালপুর দখলের পূর্ব মুহুর্তে এই দুর্ঘটনার পর কামালপুর আর দখল করা সম্ভব হয়নি। ভারতীয় ৩০শে নভেম্বর আমরা প্রায় ৫০০ জন মুক্তিযোদ্ধা কামালপুর ঘিরে রাখি। কামালপুর পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রাখি। ৩০শে নভেম্বর ভারতীয় বাহিনীর একটি সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। ৪ঠা ডিসেম্বর পাকসেনারা কামালপুরে আত্মসমপণ করে। বিকাল ৪টায় ভারতীয় অফিসার আমাকে ডেকে জানতে চাইলেন কে চিঠি এবং পতাকা নিয়ে কামালপুর যেতে পারবে। মুক্তিযোদ্ধা বশীরকে নির্বাচন করি। আমার জাম্পারটি সবুজ রংয়ের ফুলহাতা ছিল। বশীরকে তা দিয়ে দিই ভারতীয় অফিসারের কথা মত। বশীর জাম্পারটি পরে আমার ষ্টেনটি নিয়ে রওনা হয়ে যায়। অপরদিক থেকে সঞ্জ নামক মুক্তিযোদ্ধাকে পাঠানো হয়েছিল। সন্ধ্যা ৬টায় বশীর এবং সঞ্জ ফিরে আসে। পাকসেনারা ছিল ১৬১ জন এবং দু’জন অবাঙ্গালী অপারেটর ছিল। দু’জনের মধ্যে ১জন মেয়েও ছিল। পাক সেনারা ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমপণ করে। কামালপুর মুক্ত হয়। পরে ১১ই ডিসেম্বর জামালপুর মুক্ত হয়। মেজর তাহেরকে উদ্ধার করার জন্য সরকার আমাকে বীরপ্রতীক উপাধিতে ভূষিত করেন। ᎼᎼ-ᎼᏐ-ᎼᎼᎸ☾ সাক্ষাৎকারঃ লেঃ কর্নেল এম, এ, মান্নানঞ্চ ծ ծ-ՋՀ-Գծ আমি (৩০-৩১ জুলাই জেড ফোর্সের কামালপুর সংঘর্ষে) আহত হওয়ার পর আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় পুনা। সেখানে একদিন চিকিৎসার পর হেলিকপ্টার যোগে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় ১৫১ বেইস হাসপাতাল গৌহাটিতে। সেই হাসপাতালে আমি এক মাসাধিককাল চিকিৎসাধীন ছিলাম। আগষ্ট মাসের শেষের দিকে জেঃ জিয়া আমাকে দেখতে সেখানে যান। ক্রমে আমি কিছুটা আরোগ্য লাভ করি। আমি খবর পাই যে, আমার

  • ১৯৭১ সালে লেফটেন্যান্ট হিসাবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে লেঃ কর্নেল পদে উন্নীত হন। বিবরণটি প্রকল্প কর্তৃক ১১-১২-৭৯ তারিখে গৃহীত সাক্ষাৎকার থেকে সংকলিত।