পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৫৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

506 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড এজন্য যে, তাদের বুঝিয়েছিলাম আমাদের অপারেশন এখনও চলছে এবং আমরা অপারেশন করার মত সামর্থ্য রাখি। আমরা ফিজিক্যালী রেইড করিনি। আমরা ফায়ারের মাধ্যমে রেইড করেছিলাম। মটার ফায়ার দিয়ে রেইড’ করার কথা ছিল। আমরা একটা হিলটপে ছিলাম। বিওপিটিা অন্য হিলটপে ছিল। মাঝখানে দুতিনশ গজের পার্থক্য। প্রশ্নঃ আপনারা কতজন ছিলেন? উত্তরঃ এই রেইডে আমি এক কোম্পানী নিয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের ব্যাটালিয়নে ৩" মর্টার ছিল। মর্টার দিয়েই ফায়ার করা হয়েছিল। এটাতে কোন ক্যাজুয়ালটি হয়নি। এটা একটা মোরাল বুষ্টিং-এর মত অপারেশন ছিল। এরপর আমি ইউনিটে ফিরে আসি। এ সময় আমাদেরকে বলা হয়, তোমাদের বাংলাদেশের ভিতর জায়গা ক্লিয়ার করে ডিফেন্স নিতে হবে। ২২শে নভেম্বর আমরা বাংলাদেশে প্রবেশ করি। সিলেট বড়লেখা বলে একটা জায়গা আছে, সেই জায়গাতে আমরা ডিফেন্স নেই। এই ডিফেন্স নেয়ার সময় আমাদের উপর ২/৩ বার আক্রমণ চালায় পাকিস্তান আর্মি। কিন্তু আমরা প্রতিবারই এই আক্রমণ সাফল্যের সাথে দমন করি। মুজিব ব্যাটারী-২ যেটাতে মেজর রাশেদ এবং মেজর সাজ্জাদ ছিলেন- সেই ব্যাটারী প্রথমবারের মত ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ফায়ারিং সাপোর্ট দেয় এবং ফায়ার সাপোর্টের প্রথম গোলাই টার্গেটের উপর পড়ে। ২৯শে নভেম্বর আমরা কৈলাশ শহরে কনসেনট্রেট করি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চূড়ান্তভাবে প্রবেশের জন্য। ২৯ তারিখ রাতে বাংলাদেশে ঢোকার জন্য মার্ট করে যাই পুরো ব্যাটালিয়ন। এই সময় ইন্ডিয়ান বিগ্রেডের একটা কাজের জন্য আমাদেরকে বলা হয়। ব্রিগেডের প্ল্যান ছিল শমসেরনগরের উপর আক্রমণের। আমাদেরকে বলা হয় শমসেরনগর থেকে শ্রীমঙ্গলে যে এক্সসেস আছে সেটাকে গার্ড করতে হবে। ভানুগাছে কিছু এ্যানিমি ট্রপস আছে সেখানে আমাদেরকে কাট-অফ করে একটা ডিফেন্স লাগাতে হবে। আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে ভানুগাছে এক আর্মি প্লাটুন আছে। আমরা সেভাবে ডিফেন্স নেই। কিন্তু আমরা যখন ১লা ডিসেম্বর ভানুগাছে পৌছি তখন দেখি সেখানে এক প্লাটুনের বেশী আর্মি আছে এবং কিছু ১২০ মিঃ মিঃ মর্টারও ছিল সেখানে। তারপর ২/৩ তারিখ ডিসেম্বরে আমাদেরকে ওদের উপর আক্রমণ চালাতে বলা হয়। প্রথমে আমাদের দুই কোম্পানী আক্রমণ চালায়। দুই কোম্পানী আক্রমণ চালালে আমাদের বেশ কিছু-প্রায় ১৭ জন নিহত ও বেশ কিছু আহত হয়। প্রশ্নঃ দুই কোম্পানী কে কে নিয়ে গিয়েছিলেন? উত্তরঃ একটা মেজর মাহবুব ও আর একটা মেজর ওয়ালিউল ইসলাম। একটা ছিল ব্রেভো কোম্পানী আর একটা ছিল আলফা কোম্পানী। পরে চালি কোম্পানীকে পাঠানো হয় এবং আমরা ইন্ডিয়ান আর্টিলারীর সাপোর্ট নিয়ে সেই আক্রমণকে সাকসেসফুল করি এবং পরের দিন সকালবেলায় আমরা ভানুগাছ দখল করি। প্রশ্নঃ সেটা কত তারিখে হবে? উত্তরঃ সেটা ডিসেম্বর ৩/৪ তারিখে হবে। আমার মনে আছে ভানুগাছে থাকতেই যুদ্ধ ঘোষণা করা হয় এবং ইন্দিরা গান্ধীর বক্তৃতা ভানুগাছেই শুনেছিলাম। এটা করার পর আমাদেরকে বলা হয় মঙ্গলাবাজার হয়ে ফেঞ্চগঞ্জ আসতে হবে। আমরা ভানুগাছ থেকে মঙ্গলাবাজার রওনা হই। মঙ্গলাবাজারে আমাদের বেশকিছু ক্যাজুয়ালটি হয়। মাইন ক্যাজুয়ালটি ছিল। একটা ট্রাক এবং একটা বাস এন্টিট্যাঙ্ক মাইনে উড়ে যায়, ফলে বেশকিছু ক্যাজুয়ালটি হয়। প্রশ্নঃ এটা কবে হয়? উত্তরঃ এটা ৭/৮ ডিসেম্বরে। ভানুগাছ থেকে একটা কাঁচা রাস্তা আছে ফেঞ্চগঞ্জের দিকে। আমরা সেই রাস্তা দিয়ে আসার সময় আমাদের ক্যাজুয়ালটি হয়। ফেঞ্চগঞ্জ হয়ে সিলেটের কাছে গোলাপগঞ্জ বলে একটা