পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
১০৫
শিরোনাম সূত্র তারিখ
প্ররোচনার মুখে ভারতের সংযমকে দুর্বলতা মনে করলে পাকিস্তান মারাত্মক পরিণতির মুখে পড়বে-রাষ্ট্রপতির সতর্কবাণী দৈনিক যুগান্তর ২৩ অক্টোবর, ১৯৭১

পাকিস্তানকে রাষ্ট্রপতির হুঁশিয়ারী

 নয়াদিল্লী, ২২শে অক্টোবর (পিটিআই)-রাষ্ট্রপতি শ্রী ভি ভি গিরি আজ পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, গুরতর ও ক্রমবর্ধমান প্ররোচনা সত্ত্বেও ভারত যে সংযম ও ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে তাকে যেন দুর্বলতার চিহ্ন বলে কেউ ভুল না করেন।

 তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।

 আজ সকালে ইরাকের রাষ্ট্রদূত মিঃ আবদুল্লা সালেমুস আলসামারায়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে যখন তাঁর পরিচয়পত্র পেশ করছিলেন তখন রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন যে, পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের অত্যাচারের ফলে পূর্ববঙ্গ থেকে ৯৫ লাখেরও বেশী শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নেওয়ায় ভারতের সামনে বিরাট সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এই শরণার্থী আগমন বন্ধ করতে হবে এবং এরা যাতে নিরাপদে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারেন তার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। রাষ্ট্রপতি বলেন যে, এ ধরনের গুরত্বপূর্ণ বিষয়ে বন্ধু দেশগুলো নীরব থাকলে শান্তি আসতে পারে না।

 রাষ্ট্রপতি বলেন, সমস্যাটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নয়, এটা হল পূর্ববঙ্গবাসী এবং পাক জঙ্গীশাহীর পরিচালিত নির্বাচনে, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পদদলিত হওয়ায় এর উদ্ভব। পূর্ব পাকিস্তান থেকে ব্যাপকভাবে শরণার্থী আগমনের কথা উল্লেখ করে ইরাকী রাষ্ট্রদূত বলেন, ইরাক বাংলাদেশের শরণার্থী সমস্যার মানবিক দিক এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের অসুবিধা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল।

 তিনি বলেন, উন্নতিশীল দেশগুলোর ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি থাবা বিস্তারে উদ্যত। তাদের এই অপপ্রয়াস ব্যর্থ করে দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধুর প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হোক, গণতন্ত্রী ইরাক সরকার তা আশা করেন।