পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/২৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
২৬৫

আজকে শুধু সাহায্য বা স্বীকৃতি নয়, আজকে এই আন্দোলন যাতে জয়যুক্ত হয় ভারত যেন সেই কার্যক্রম গ্রহণ করেন এবং সেটা করবার জন্য আমরা এই সরকার পক্ষে যতজন আছি, আমরা ঐক্যবদ্ধ, দৃঢ়বদ্ধ মত পোষণ করি যে, আমরা এটা সমর্থন করি। এটা জয়যুক্ত হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি এবং তাই শুধু ওদেতর জীবনপণ নয়, আমাদেরও জীবনপণ করে আমরা সকলেই একে সমর্থন জানাচ্ছি। জয় হিন্দু।

 শ্রী সব্রত মুখোপাধ্যায়: মাননীয় ডিপুটি স্পীকার মহাশয়, আমি প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী কর্তৃক আনীত যে প্রস্তাব সেই প্রস্তাবকে সর্বান্তঃকরণে সমর্থন জানাচ্ছি। সমর্থন জানাচ্ছি আরও যাঁরা এখানে তাঁদের বক্তব্য রেখেছেন তাদের মধ্যে বিরোধী দলের অন্য সকলকে বাদ দিলেও সুবোধ বাবুর কিছু কিছু আ্যানালিসিসকে। যদিও তার সমস্ত বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারিনি তবুও তার বক্তব্য অন্যান্য বিরোধী দলের প্রবীণ অভিজ্ঞ নেতার চেয়ে অনেক দৃঢ় এবং প্রস্তাবের স্বপক্ষে অনেক কার্যকরী সহায়তা হবে এবং অনেকটা সহযোগিতা করেছে। আমি অবাক হয়ে দেখেছি যে, এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে যখন আমাদের সদস্যদের একটা প্রচণ্ড দায়িত্ব রয়েছে অত্যন্ত গভীরভাবে এটা চিন্তা করার, সেই মুহূর্তে আমরা অনেক জায়গায় সেটাকে লাইট করে দিয়েছি। অনেক জায়গায় প্রবীণ অভিজ্ঞ সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তারা সেটাকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করার অপচেষ্টা করেছেন, সেটা অস্বীকার করে লাভ নেই। অনেক বক্তব্য প্রস্তাবের স্পিরিটকে শক্তিশালী করার চেয়ে তাদের দলের স্বার্থে ব্যবহার করার অপচেষ্টা করেছেন, সেটা অস্বীকার করে লাভ নেই। অনেক বক্তব্য প্রস্তাবের স্পিরিটকে শক্তিশালী করার চেয়ে তাদরে দলের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন, বা জয়নাল আবেদীন মহাশয় তার বক্তৃতায় বলেছেন। সেটা অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার। আপনারা অনেকে প্রস্তাবকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দলগত নির্বিশেষে এই প্রস্তাবকে গ্রহণ করার জন্য আমি বিরোধী এবং অন্যান্য সকল সদস্যকে অভিনন্দন জানাই আর অভিনন্দন জানাই শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর বাংলাদেশ সম্পর্কিত এ যাবত সমস্ত কার্যাবলীকে এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি যে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন তার জন্য। এটা আমার মুখের কথা নয়। হয়ত আমাদের দাবি আছে অনেক, অনেক আমাদের বক্তব্য আছে। আমাদের দাবি আদায়ের জন্য হয়ত কোন কোন জায়গায় একটু চাপ সৃষ্টি করতে হবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এটাও সত্যি কথা, সীমান্তে গিয়ে দেখে আসুন যে, পূর্ব বাংলার একটা বিশেষ একটা অংশ একদিন সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা সত্ত্বেও আজকে তারা শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর নামে জয়ধ্বনি করছে যখন ইন্দিরা গান্ধীর সাহায্য ওপার বাংলায় যাচ্ছে। আমি সীমান্তে গিয়েছি। যারা সেখানে গিয়েছেন তারাও নিশ্চয়ই দেখেছেন। অবশ্য সকলে গিয়েছেন কিনা আমি জানি না। তবে গেলে দেখবেন যে, এপারের বহু নরনারী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর দেশ থেকে যে সাহায্য যাচ্ছে তাকে দু’হাত নেড়ে তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা হচ্ছে যে, প্রস্তাবের সমস্ত অংশটাকে বাদ দিয়ে ‘অস্ত্র’ এবং ‘ইন্দিরা গান্ধী’ এই দুটো শব্দকে প্রাধান্য দিয়েছেন বিরোধীরা। কিসের জন্য বাংলাদেশের এই প্রস্তাবের স্পিরিটকে আপনারা নিতে পারলেন না? নিলেন শুধুমাত্র দলীয় স্বার্থকে বড় করে দেখবার জন্য। আজকে ‘ইন্দিরা গান্ধী’ এবং ‘অস্ত্র’ এই দুটো কথা বাংলাদেশের বুকে খবরের কাগজে বড় করে দেখাবার প্রচেষ্টা করলেন। আমরা চেয়েছিলাম নেচার অফ দি মুভমেণ্ট তাকে অ্যানালিসিস করা হবে। আমি বিরোধী দলের সদস্যদের কাছে চেয়েছিলাম যখন সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবটা নেওয়া হয়েছে, আপনারা আ্যানালিসিস করুন, আপনারা প্রবীণ সদস্য আপনাদের অ্যানালিসিস থেকে আমরা কিছু গ্রহণ করব। আমরা ট্রেজারি বেঞ্চ-এর সদস্য বলে অপরাধ করিনি। অন্ততপক্ষে ঐতিহাসিক রেজিলিউশন-এ একটা সুযোগ চেয়েছিলাম যেটা আমরা পাইনি। আমি অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে,বিভিন্ন জায়গায় জোর করে কংগ্রেসদল এবং ইন্দিরা গান্ধীর সমালোচনার চেষ্টা হয়েছে আমি তার দু-একটা কথা এখানে বলতে চাই। যেভাবে ওখানে ইয়াহিয়ার দ্বারা মানুষ অত্যাচারিত হয়েছে সেকথা করোর অজানা কথা নয়। সেই মুক্তি সংগ্রামীরা কেমন সাংঘাতিকভাবে লড়াই করছে সেটা আমাদের অ্যানালিসিস করে দেখতে হবে। শুধু মুজিবর জিন্দাবাদই নয়। শুধুমাত্র বিরাট বিরাট প্রস্তাব ইত্যাদি বাংলাদেশের মানুষের সামনে তুলে দেওয়া নয়, সঙ্গে সঙ্গে এটাও সি পি এম সমর্থকরা চিন্তা করুনজাতীয়তাবাদী শব্দটি ব্যঙ্গ করেছেন-বুর্জোয়াদের শোষণ করার শব্দ বলে অ্যানালিসিস করে বারবার বক্তৃতায় বলেছেন, ময়দানে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সেই শব্দের যে কত জোর অ্যানালিসিস করে দেখুন। মুখ্যমন্ত্রী, আমাদের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী তখনকার গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে এই