পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৩১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
২৮৫

বৈঠকে আলোচনা ও আবেদন

 বাংলাদেশ থেকে শরণার্থীদের অভূতপূর্ব ভিড়ের চাপ যে অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে পাঁচটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তা আলোচনা করেন। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা আঠারো লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাঁরা এভাবে আসতে থাকলে অবিলম্বে এই সংখ্যা বিশ লক্ষের উপরে উঠে যাবে।

 বৈঠকে এই মত প্রকাশ করা যে, শুধু সংশ্লিষ্ট রাজ্যেগুলির বহন করার পক্ষে এ সমস্যা অত্যন্ত গুরুভার। বহু জায়গায় এই শরণার্থীদের মাথার উপর কোন আচ্ছাদন নাই। কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় যে খাদ্যশস্য মঞ্জুর করছেন তার সরবরাহও অনিয়মিত। লবণ, চিনি, কেরোসিন, বাসনপত্র এবং কাপড়চোপড়ের সরবরাহও সর্বদাই প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। যানবাহনের ঘাটতির ফলে পাঠাবার ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা সম্পর্কে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কলেরা দেখা দিচ্ছে বলে খবর আসছে।

 মুখ্যমন্ত্রীরা আশা করেন তাঁদের আবেদনে ভারতের সব রাজ্য এই গুরু দায়িত্ব বহন করতে এগিয়ে আসবেন। বাংলদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দিকে দিকে স্বতঃস্ফূর্ত সহানুভুতির প্রকাশ হয়েছে। বংলাদেশের জংগী নির্যাতনের কবল থেকে যাঁরা দলে দলে ছলে আসছেন অবিলম্বে তাঁদের খাদ্য, আশ্রয় ও স্বাস্থ্যরক্ষার ব্যাপারে এই সহানুভূতিকে সক্রিয় করে তোলা প্রয়োজন।

 মানবিকতার প্রশ্নে ভারতের এই দায়িত্ব বহনে অংশগ্রহণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এবং সব স্বাধীন রাষ্ট্রকেও অনুরোধ জানাতে মনস্থ করেন।