পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
১২

থাকবে। ইন্দিরাজী বলেন যে, বাংলাদেশের ব্যাপারকে কেন্দ্র করে কিছু লোক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাইছে। সকলকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

 স্বীকৃতির স্বপক্ষে জোর দাবি: অধিকাংশ বিরোধী নেতা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের জন্য জোর দাবি জানান। পরিস্থিতির সম্পর্কে ইন্দিরাজীর বিশ্লেষণ তাঁরা মেনে নেননি। তাঁরা বলেন যে, বাংলাদেশ এখন একটি বাস্তব সত্য। স্বীকৃতি দিয়ে সরকার শুধু সেই সত্যটিকেই মেনে নেবেন আর তাতে সেইখানকার আন্দোলন জোরদার হবে। ভারত এ বিষয়ে জোর করলে ভারতেরই ক্ষতি হতে পারে।

 এই দাবি জানান—সি পিএম, সি পি আই, ডি এম কে, আদি কংগ্রেস, পি এস পি, এম এস পি, ফঃ বঃ আর এস পি। শ্রী ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত (সি পি আই) তাঁর দলের পশ্চিমবঙ্গ কমিটির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি দেন। শ্রী এ কে গোপালন (সি পি এম) বলেন যে, পাকিস্তানকে ভয় না করে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সব রকমের সাহায্য দেওয়া হোক। শ্রী কে মনোহরণ (ডি এম কে) শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী (জঃ সঃ) শ্রী চিত্ত বসু (ফঃ বঃ), শ্রী ত্রিদিব চৌধুরী (আর এস পি) শ্রী এন জি গোরে (পি এস পি) ও শ্রী এস এন মিশ্র (আদি কং) একই দাবি তোলেন।

 ত্রাণকার্য সম্পর্কে একটি আলাদা বৈঠক বসবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে পাকিস্তানী ফৌজের অত্যাচার থেকে বাঁচাবার জন্য এ পর্যন্ত প্রায় পনেরো লক্ষ লোক ভারতে এসেছেন। আরও আসবেন। এ জন্য ত্রাণকার্য সম্পর্কে কী করা যায় সে বিষয়ে আলোচনার জন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিরোধী নেতাদের সঙ্গে পৃথক একটি বৈঠকে বসবেন। (অর্থমন্ত্রী শ্রী চ্যবন নাকি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এ জন্য মোট ষাট কোটি টাকা দরকার)। তবে ওই বৈঠকে কবে বসবে আজ তা ঠিক হয়নি। ভারত চায় যে, এই ত্রাণকার্য আন্তর্জাতিক রুপ নিক।

 ইন্দিরাজী আরও বলেন যে, বাংলাদেশে আগে দুই ডিভিশন পাক ফৌজ ছিল। এখন আছে চার ডিভিশন। শহরগুলি অধিকাংশ পাক ফৌজের দখলে আছে। গ্রামাঞ্চলের বহু এলাকাই এখনও মুক্তিফৌজের নিয়ন্ত্রণে। গেরিলা তৎপরতা চালিয়ে তাঁরা পাক ফৌজের তৎপরতা সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করছেন।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক

 নয়াদিল্লী, ৭ মে—প্রকাশ বাংলাদেশ সম্পর্কে আলোচনার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আজ এক বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকে পূর্বনির্ধারিত ছিল না।

 বিরোধী দলনেতাদের সঙ্গে আলোচনার পরেই প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি গান্ধী স্বল্প সময়ের নোটিশে তার সহকর্মীদের ঐ বৈঠকে আহ্বান করেন।

 এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে শ্রীমতি গান্ধী বিরোধী নেতাদের সঙ্গে তাঁর আলোচনার বিষয়ে সহকর্মীদের অবহিত করেন।

—পি টি আই