পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৪৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
৪১১

মুক্তিবাহিনীতে যোগদানের জন্য অনুপ্রাণিত করা যায় তার জন্য পার্টি কর্মীগণ বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরগুলিতে সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।

 শরণার্থী শিবির পরিচালনায় কেবলমাত্র নেতিবাচক স্বরূপ উদঘাটন নয় পরন্ত ব্যর্থতা ও দুর্বলতাগুলিকে কাটানোর জন্য পার্টি কর্মীদের সক্রিয় হস্তক্ষেপ করতে হবে যাতে শরণার্থীদের সুষ্ঠু ও কার্যকরীভাবে সাহায্য করা যায়।

 কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য পরিষদ মনে করে, বাংলাদেশের এই সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখতে হবে রাজ্য পরিষদ বাংলাদেশের শরণার্থী বিষয়ে উড়িষ্যা সরকারের মনোভাব এবং মেঘালয়ে দাঙ্গার বিষয়ে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বংলাদেশ প্রসঙ্গে একটি জাতীয় সংহতিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন এবং সীমান্ত রাজ্যগুলির স্কন্ধভার ভাগ করে নেওয়ার প্রয়োনীয়তা সম্পর্কে সকল রাজ্যগুলিকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীসমূহের সম্মেলন আহ্বা‌নের জন্য পার্টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। এ কারণস্বরূপ বলা হয়েছে যে যদি বাংলাদেশের সংগ্রাম ব্যর্থ হয় তাহলে ভারতের গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলো সাম্প্রদায়িকতা ও প্রতিক্রিয়ার জোয়ারে ভেসে যাবে।

 সাম্প্রদায়িক শক্তিসমূহের যারা গোলযোগ করার চেষ্টা করছে তাদের বিষয়ে হুঁশিয়ার থাকার জন্য কমিউনিস্ট পার্টি পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণের কাছে আহ্বা‌ন জানিয়েছে। পার্টি স্থির করেছে যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংহতি জ্ঞাপক অভিযানই বর্তমানে কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম মূল কার্যসূচী। ট্রেড ইউনিয়নসমূহ শ্রমিকদের মধ্য কিষান সভা কৃষকদের মধ্যে এবং যুব, ছাত্র, মহিলাদের মধ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে হবে। এই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সমস্ত মানুষের সমাবেশ ঘটাতে হবে।

 পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে আন্তঃপার্টি ভ্রাতৃঘাতী হত্যাকাণ্ড জনিত গুরুতর পরিস্থিতির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্য পরিষদ এই সিদ্ধান্ত এসে পৌঁছেছে যে খুনীদের গ্রেফতার করতে এবং ব্যক্তি সন্ত্রাস রোধে পলিসী অক্ষমতার পটভূমিকা শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থা নয় প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে এবং রাজনৈতিক দলগুলির সক্রিয় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই ধরনের সন্ত্রাস বন্ধ সম্ভব। রাজ্য পরিষদ এবং ব্যক্তি সন্ত্রাসবিরোধী অন্যান্য পার্টির সদস্যদের সম্মেলন আহ্বা‌ন করে এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচী গ্রহণ করা হোক।

 সর্বশেষে বাংলা কংগ্রেসের ভাঙ্গন জড়িত পরিস্থিতি ও রাজ্য পরিষদে আলোচিত হয়। পর্টির বক্তব্য এই যে শ্রী সুশীল ধারাকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া উচিত নয়।