পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৪৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
৪২৬

দেওয়াই ভারতের পক্ষে স্বার্থসম্মত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সম্বন্ধে বলেছেন ‘রাইট টাইমে রাইট ডিসিশন’ নেওয়া হবে। এই সঠিক সিদ্ধান্তের ঠিক সময়টি কখন আসবে? ঠিক সময় ও ঠিক সিদ্ধান্তের নিয়ামক বা নির্ণায়ক অথবা পারিপার্শ্বিকতার সূচকই বা কি?

সরকারী ধারনা নির্ভুল নয়

 বাংলাদেশের গণঅভ্যূত্থানের পরে ভারত সরকার মনে করেছিলেন যে, পিণ্ডি সরকার পশ্চিম পাক সীমান্ত থেকে পূর্ব বাংলায় ফৌজ পাঠাতে সাহসী হবে না। প্রধানমন্ত্রীর সংগে বিরোধী দলের নেতাদের বৈঠকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী জগজীবন রমা বলেন যে, ৩০ লক্ষের বেশী শরণার্থী ভারতে আসবেনা। ভারত সরকারের আরও ধারণা হয়েছিল। সামরিক খরচ এবং পূর্ব বাংলার বিপর্যয়ের কারণে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়বে। ভারত সরকারের এই তিনটি ধারণার একটি ধারণাও সঠিক প্রমাণিত হয়নি।

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের বিকল্প

 পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ পরিহারের একমাত্র রাজনৈতিক বিকল্প পন্থা হলো বাংলাদেশের আশু স্বীকৃতি দান। বাংলাদেশের সরকার স্বীকৃতি লাভ করলে যে রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্যমের স্বাধীনতা লাভ করবে তার সুযোগে শুধু ভারতের কাছ থেকেই নয় বিশ্বের আরও কয়েকটি রাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ যে সামরিক ও রাজনৈতিক এবং আর্থিক সহযোগিতা লাভ করবে তার সংবাদ ভারত সরকারেরও অজানা নয়।

 স্বীকৃতি লাভ করলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ভারতে আগত উদ্বাস্তুদের ভিতর থেকে এক লক্ষ শক্তির গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলাও অসম্ভব হবে না। স্বীকৃতি লাভ করে যে প্রকাশ্য ও প্রত্যক্ষ সাহায্য লাভের সুযোগ বাংলাদেশ সরকার পাবে, সেই সুযোগ গ্রহণ করে মুক্তিফৌজের পক্ষেই পাক ফৌজের কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে।