পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৬৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&Ꮈ© বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খন্ড আমরা বাংলাদেশের ওপর নির্যাতন রোধ করাতে চাই, সৈন্যদের দ্বারা পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ করাতে চাই স্বীকৃতি লাভের পর বাংলাদেশ সরকার আমাদের কাছে এ কাজের জন্যই সাহায্যের আবেদন রেখেছেন অতএব এ প্রশ্নে আমাদের আর বিলম্ব করা উচিত নয়। বাবু জয়প্রকাশ নারায়ণও এটি সমর্থন করেছেন। তিনিও বিশ্বসফর করে...তিনি এতদূর বলেছেন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে পাকিস্তান যদি যুদ্ধ ঘোষণা করে তবে পাকিস্তান যুদ্ধ ঘোষণা করবে শুধু এই ভয়ে আমাদের এটি এড়ানো উচিত হবে না। বাংলাদেশের প্রতিও আমাদের একটি কর্তব্য আছে, আমরা তা পালন করব। সরকারের এতে বিলম্ব করে আপন কর্তব্য হতে পেছনে সরে আসছে এতে আমরা ক্ষুব্ধ এবং এ আশঙ্কা সারা দেশে বিস্তারিত হচ্ছে। এ কারণে একটা অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে এই অসন্তোষ এখন প্রকট হবে। সরকারকে তার কর্তব্যদের প্রতি সজাগ করার জন্য, সরকারকে তাঁর অবধারিত কর্ম সত্বর বাস্তাবায়ন করানোর জন্য কাল থেকেই আমার পার্টি সত্যগ্রহের ঘোষণা করেছে। আমার নেতা শ্ৰী পীতাম্বর দাস এই সত্যগ্রহের নেতৃত্ব করেছেন। এটি সরকারের এই কর্তব্যবোধের প্রেক্ষিতে সত্বর মীমাংসা করার জন্য। কিন্তু সরকার যদি কোন পদক্ষেপ না নেন তবে তার ফলে উদ্ভুত পরিস্তিতির কুপরিনতি সারা দেশে দেখা দিতে পারে। এমন এক বিষয় যার ওপর নীতিগত দিক থেকে আমরা সবাই একমনা আমি চাই না, তার ওপর দেশে কোন প্রকার দ্বৈত সৃষ্টি হোক আমরা আজ পর্যন্ত মিলেমিশে একাজ করছি সামনেও একাজ মিলেমিশে করবার অবকাশ আছে। এজন্য এ প্রস্তাবের মাধ্যমে একটি আবেদন করা হয়েছে। ----- সংশোধনের মারফ শ্রী জগদম্বী প্রসাদ যা এনেছেন---- যে শুধু স্বীকৃতি দিয়ে চলবে না স্বীকৃতির সংগে সংগে তাদেরকে সামরিক তথা অন্য সাহায্য দিতে হবে। এখন একথাও সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আবশ্যক যাতে এ থেকে পেছনে সরে যাবার কোনঅবকাশ না থাকে। প্রস্তাবক মহোদয় বলেছেন যে, স্বীকৃতি দেয়া হোক, আমরা আরেকটি সংশোধন চাই যে, স্বীকৃতি দিয়ে তাদেরকে সামরিক সাহায্যও দেয়া হোক। এই সংশোধনীর সংগে প্রস্তাবকেও মেনে নেয়া হোক, আমরা এটাই চাই। শ্ৰী শলিভদ্র ইয়াজী (বিহার) উপ-সভাপতি মহোদয়, বাংলাদেশে মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে সরকার গঠিত হয়েছে তাকে স্বীকৃতি দেবার ব্যাপারে শ্রী প্ৰণব কুমার বাবুর প্রস্তাব আমি সমর্থন করছি কিন্তু তিনি যে পার্লামেন্টের এই অধিবেশন চলাকালেই স্বীকৃতি চাচ্ছেন আমি তার বিরোধিতা করি। এই সংগে আমি শ্রী পুরকায়স্থ ও শ্রী সোনারাম কেশরীর সংশোধনী সমর্থন জানাই যাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার বিষয়টি সরকারের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত। -- উপ-সভাপতি মহোদয়, ২৫ মার্চের পর উভয় পরিষদে বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রস্তাব পাস করার পর হতে বাংলাদেশে হিটলারশাহী চলছে। যখন প্রস্তাব পাস হয়েছিল তখন বাংলাদেশকে সর্বপ্রকার সাহায্য দানের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। এখন প্রশ্ন উঠছে, স্বীকৃতি দিয়ে যদি সাহায্য দেয়া হয় কিংবা না দিয়েও দেয়া হয়, আমি এর গভীরতায় যেতে চাই না, আমি সরকারের কাছে একটি কথা রাখতে চাই যে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের দেশে যে স্বাধীনতার সংগ্রাম গণতন্ত্রের সংগ্রাম করছে সেটা কি তাদেরই সংগ্রাম? না। তারা তো সারা বিশ্বের জন্য সংগ্রামরত, ভারতের জন্যও তারা সংগ্রাম করছে। দোষী কে? মুসলিম লীগ ও কংগেসের নেতারা দেশ ত্যাগ করেছে। দেশ ভাগের পর মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসীরা গদীতে বসেছে। এ ব্যাপারে জনসাধারণের রায় মোটেই নেয়া হয়নি। দেশ ভাগের পর জনসাধারণ যদি মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ইলেকশনে আসতো এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হতেন তাহলে তার পরে পাকিস্তানকে ভাঙ্গবার প্রশ্ন কোথা হতে উঠতো। কিন্তু কাইয়ূম খাঁ ও ভুট্টো বলেছেন দুইজন প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং ইয়াহিয়া খাকে প্ররোচনা দিয়েছে যে এমন কোন কিছু হওয়া উচিত নয়। মুজিবুর রহমানের পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে শাসনের বাগডোর দেয়া হয়নি। ইয়াহিয়া খাঁ ও টিক্কা খাঁ ডাণ্ডা নিয়ে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে জনগণকে প্রহার করছে। এজন্য আমি বলতে চাই, এ যুদ্ধ শুধু বাংলাদেশেরই নয় ধরে নিন, আমদের দেশেও কোন পাগল