পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৭০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՆԳ(: বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খন্ড অন্য কেউ আসবে, বাংলাদেশের লোক আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে, (বলবে), যতখানি করেছেন ঠিক করেছেন, কিন্তু শুধু বাংলাদেশই নয়, সম্পূর্ণ ইষ্টাৰ্ণ জোন আপনার হাত থেকে বেরিয়ে যাবে, এরূপ ফোর্সেস আছে, আমি আপনাকে সাবধানী দিচ্ছি। সরকার কখন এ্যাকশন নেবেন, কখন কি করবেন, আমি জানি না। কিন্তু সরকার বাংলাদেশে যুদ্ধরত মুক্তিফৌজের সাহায্য করা উচিত এটা নিশ্চিত করুক। অনেকেই একথা তোলেন যে, সাহায্য কিভাবে দেয়া হবে? পাকিস্তান কিভাবে করছে, বিদ্রোহী নাগাদের ট্রেনিং ঢাকাতে হয়, মিজোদের হয়--- তারা বলে না, তারা, কিন্তু আপনি করেননি। আমাদের সরকার কি করেছেন? বিজু পেটনায়েক আশ্চর্য কথা বলেন, তাঁর বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, মুক্তিপৌজের যুদ্ধ কাগজের যুদ্ধ, তিনি নিজেকে স্ফুটনিক বলেন কিন্তু সৎবুদ্ধি একটুও নেই। তারা কত বীরত্বের সংগে যুদ্ধ করছে। ফ্রন্টে গিয়ে আপনি তাদের মনোবল দেখুন, আপনি দেখে আশ্চর্য হবেন, নেতাজীর নেতৃত্বে যে আজাদ হিন্দ ফৌজ যুদ্ধ করছিল তাদের চেয়ে এদের মনোবল বেশী উচু। মুক্তিপৌজে যত যোদ্ধা আছেন কারো স্ত্রী নিহত হয়েছে, কারো কন্যা, কারো অন্য কেউ মারা গেছে কিন্তু তাদের চেহারায় কোন উদাসীন্য নেই। তাদের এই হুশও থাকে না যে তারা খেতে পাবে কি না। আজাদ হিন্দু ফৌজ যোদ্ধাদের স্ত্রী কন্যারা তো নিরাপদ ছিল, তাদের চেয়ে এরূপ অতিরিক্ত কষ্ট সয়ে এরা লড়ছে। এজন্য সোজা কথায় আমি সরকারকে বলতে চাই যে, সরকার বাংলাদেশের স্বীকৃতি ঘোষণা করুন বা না করুন কিন্তু তাদেরকে সাহায্য দানের ঘোষণা যেন অবশ্যই করেন। রাজনারায়ন বাবু চলেছেন, শুধু পার্লামেন্টের যুদ্ধ ঘোষণা করলে চলেন। কূটনীতিও সংসারে একটি বড় জিনিষ। উক্ত কূটনীতি হচ্ছে, মিথ্যা কত ভাল বলা যায় তা জানা থাকা চাই। উত্তম কুটনীতি অনুসারে আপনার যা করণীয় তা করুন কিন্তু এটা বলবেন না। আমাদের চাণক্য ও কৃষ্ণের নীতি অনুসরণ করা উচিত “আশ্বহুমা হতৎ নরো ব কুঞ্জরঃ” নীতি গ্রহণ করে আমাদের শ্রীকৃষ্ণ ও চাণক্যের প্রদর্শিত পথে চলে কার্যসিদ্ধি করতে হবে। মুক্তিফৌজকে আমাদের সাহায্য করতে হবে এবং আমরা সাহায্যও করছি কিন্তু আমরা কিছু বলব না। এভাবে আদেরকে আরো রশদ () দিয়ে সাহায্য করা আবশ্যক। যেভাবে চলছে সেভাবে কাজ হবে না। এই পেক্ষাপটে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই সংসদেই ঘোষণা করেছেন যে, বাংলাদেশের জন্য ভারবর্ষের লোকদের যদি জাহান্নামে যাবার প্রয়োজন হয় তাহলে সেখানে যাবার জন্য প্রস্তুত থাকা চাই। আগেও পাকিস্তান যখন গোলমাল (গড়বড়) করেছিল তখন শ্ৰী পীতাম্বর দাসঃ আপনি পরোক্ষভাবে লাহোরকে জাহান্নাম বানিয়ে দিলেন। শ্ৰী শীলভদ্র ইয়াজীঃ এ ব্যাপারে সমাধানের প্রশ্ন যতটুকু তা আর্মিকে করতে হবে আমি তা মানি না। সিভিলিয়ান সরকারই সমাধান করবে। আমাদেরকে অতিসতুর সমাধানে পৌছতে হবে--- জেনারেল কায়ল () এর কথা আমি সমর্থন করি না। আমার বোঝা হয়ে গেছে আমেরিকা কতখানি গণতন্ত্রপ্রিয়, রাশিয়া কতখানি গণতন্ত্রপ্রিয়, চীন কতখানি গণতন্দ্রপ্রিয় সকলের মুখোশ উন্মোচন হচ্ছে। আজ বাংলাদেশে যে যুদ্ধ হচ্ছে তা গণতন্ত্র রক্ষার জন্য। ওটি শুধু মুজিবর রহমান ও আওয়ামী লীগের লড়াই নয়। তাদের থামানোর জন্য সারা বিশ্বের মানুষ উঠে আসতে পারে। সরকারের কাছে আমার নিবেদন, বাংলাদেশের স্বীকৃতির প্রশ্নে আমি রাজনারায়ণ মহাশয়ের সংগে একমত। কিন্তু আমি এও চাই যে, তাদেরকে এমন সাহায্য দেয়া উচিত যা দিয়ে সেখানে যত জুলুম অত্যাচার হচ্ছে সত্বর তার অবসান ঘটে। এভাবে যে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান রচিত হয়েছি সে তত্ত্বের শেষ আপনা আপনি হয়ে যাবে। এর সাথে সাথে সেখানে সমাজবাদের প্রতিষ্ঠার জন্য যে ঘোষণা হয়েছে, সমাজবাদের নামের ওপর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে কৃত্রিম প্রাচীর দাঁড়িয়ে আছে তাকে ধুলিসাৎ করতে আমরা সফল হবো। আজ বিশ্বে যখন কোরিয়া ও জার্মানীর একত্রীকরণের কথা হচ্ছে, তখন পাকিস্তানের ব্যাপারে বিশ্বশক্তিসমূহের আপন নীতির ওপর লজ্জা হয় না। বিশ্বশক্তিসমূহ যখন বলছে জার্মানীর একত্রীকরণ হওয়া উচিত, ভিয়েতনামের একত্রীকরণ হওয়া উচিত, তাহলে তাঁরা আজকে বাংলাদেশের ব্যাপারে নীরব কেন? সমাজবাদের নামে অতিসত্ত্বর