পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৭০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

とかbr○ বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খন্ড হিন্দু ও মুসলমানের নামে এদশে সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারা কখনই প্রচার করা উচিত হবে না। এর ফলে বাংলাদেশের কাজে অনেক বড় আঘাত আসছে। আমি আরেকটি কথা বলছি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সংকটে নিবীকতা ও বিশ্বস্ততার সাথে তাঁরা যে রায় প্রদান করেছেন সেজন্য তিনি প্রশংসার পাত্র। এজন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানকে আমি ধন্যবাদ জানাই। অন্যদিকে আমেরিকা আমাদের শত্ররাষ্ট্র চীনের সাথে হাত মিলিয়ে নীচতাপূর্ণ কাজ করেছে। সে পাকিস্তানকে তার এজেন্ট বানিয়েছে, তেলেসমাতীরূপ কিসিঞ্জারকে চীনে পাঠিয়ে বাংলাদেশের অসহায় জনগণের ও তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আশা-আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে বিশ্বের দেশে দেশে এক বিষাক্ত আবহাওয়া সৃষ্টি করেছে। এটা নিন্দনীয়। আমি আরেকটি কথা বলেছি আমেরিকা কি চায়? চীন কি চায়? এরা উভয়ে চাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হোক। তারা চায়না বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হোক। তারা চায় সমাজবাদের ভিত্তিতে প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধশীল ভারতকে পাকিস্তানের সাথে এভাবে জড়িয়ে দেয়া যায় কিনা যার মধ্যে সে হাবুডবু খায়। এজন্য আমি উভয়কে বলব বাংলাদেশে একটা ক্রান্তি চলছে, আর সে ক্রান্তির পেছনে ওই দেশের মানুষের ভাগ্য নিহিত, এই ক্রান্তির পেছনে ওই দেশের মানুষ অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে, পাকিস্তানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে, ইয়াহিয়া সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটা আন্দোলন চালাচ্ছে, এই আন্দোলনে কোন প্রকার ঘা লাগে আমাদের এমন কোন কথা বলা উচিত হবে না। এজন্য আমি আমার বন্ধুদের বলব...... আমি আরেকটি কথা বলছি। বাংলাদেশে যা ঘটছে সারা বিশ্ব তা জানে। আমাদের দেশের সকল লোক বাংলাদেশের স্বীকৃতি চায়, আমি চাই কিন্তু স্বীকৃতির সময় হতে হবে। অনেক অবস্থা, অনেক ব্যাপার আছে যা স্বীকৃতি দেবার আগে দেখতে হয়। কাকে সমর্থন করতে প্রস্তুত এমন রাষ্ট্র কটি আছে, এমন কত লোক আছে। আমি আরেকটি কথা বলছি, যাঁরা মনে করেন, ভারত বিদেশী শক্তির ওপর নির্ভর করে যুদ্ধ করবে, তাঁরা ভুল বুঝছেন। এটা বিদেশী লোকদের মন জয় করার জন্য, বিদেশীদের ভাবার জন্য, বিদেশীদের মূল্যায়নের, বিদেশীদের ধারণার একটা রীতি ও অভ্যাস। এটা কথা বলার একটা পদ্ধতি। মীমাংসা আমরা করব, পদক্ষেপ আমরা নেব ইস্পাত দৃঢ় পদক্ষেপ, আমরা সিদ্ধান্ত নেব যুদ্ধ কখন বাধাতে হবে আর কখন নয়। একটা কথা আমি জানাতেচাই। আপনারা জানতে চাচ্ছেন এর পরে কি আছে। প্রধানমন্ত্রী যখন বলেছেন, ভারতে আগত শরণার্থীদের ফিরে যেতে হবে। আমি বলব, আপনারা সত্য উপলদ্ধির চেষ্টা করুন। এ সত্যের পেছনে কোন দুর্ভাবনা নেই। এই সুচিন্তিত কথার পেছনে কি মস্ত ইস্পাত কঠিন ধারণা আছে নীতির মানদণ্ডে তা ইন্টারপ্রেট করুন বিচার রীতি অনুসারে এই বিবৃতির ব্যাখ্যা করুন। যদি আপনারা নিজেদের জন্য নিজেদের ধারনায় ব্যাখ্যা করেন তাহলে সেটি সম্ভব হবে না। আমি জানি দেশে একটা ষড়যন্ত্র চলছে। কি সেটা ? নির্বাচনে কিছু লোক হেরে গেছে, কিছু দলের বিলোপ ঘটেছে, তারা চাচ্ছে এ অবস্থার সুযোগ নিতে। কিন্তু আপনারা সুবিধা করতে পারবেন না কেননা ভারতবাসী আপনাদেরকে ভালভাবে চিনে আপনাদের এসব প্রচার ও এরূপ প্রোপাগাণ্ডার পেছনে কি অভিসন্ধি কাজ করছে। আপনি দেখেছেন তারা আন্দোলন চালাচ্ছে না। আপনি দেখেছেন, তরা আপনার পথে চলছে না, আপনাকে জনসাধারণ নির্বাচিত করছে না তাই আপনি হিন্দু মুসলমান প্রশ্নে কথা বলতে শুরু করেছেন। শ্রী রাজনারায়নঃ মহোদয়, বাংলাদেশকে এখন পর্যন্ত স্বীকৃতি না দেয়া আমাদের ভুল এ ব্যাপারে আমি সুনিশ্চিত আমি আরো সুনিশ্চিত যে, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে যত বিলম্ব হবে ততই নতুন নতুন সমস্যার উদ্ভব হবে এবং ভারত প্রতিনিয়ত তার জটাজালে জড়িয়ে পড়বে। নিত্যদিন আমাদের জটিলতা বাড়তেই থাকবে। এখন যারা তাৎক্ষনিক স্বীকৃতি দেবার পক্ষপাতী নন আমি তাঁদের জবাব দিচ্ছি স্বীকৃতি দিতে কেন বিলম্ব হচ্ছে। ৩১শে মার্চ সংসদ সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব পাশ করেছে- “এ মহাদ্বীপের মানুষ বহু শতাব্দী ধরে ভারতে ভৌগোলিক অবস্থান ও ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কারণে এই সভা তার আপন সীমান্তে এত কাছাকাছি ঘটমান থাকতে পারে না। বর্তমান সময়ে