পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৭১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ყybr(* বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খন্ড কোলের মধ্যে আছি, তিন দিক হতে আমরা ভারতে দ্বারা বেষ্টিত এ জন্য ভারত আমাদের স্বীকৃতিদিক। এও তাদের বক্তব্য যে ২৩ বছর পূর্বে আমরা এক ছিলাম এবং আমাদের রক্ত এক। তাজুদ্দিন সাহেব এতদুর বলেছেন ভারত সরকার স্বীকৃতি দিতে যত দেরী করেছেন তার ফলে এক একদিনে হাজার হাজার লোকের প্রাণহানী ঘটছে তাজুদিন সাহেবের এ কথা সত্ত্বেও ভারত সরকার বলেছেন আমরা তোমাদের স্বীকৃতি দেব না। শ্ৰী শীল ভদ্র ইয়াজীঃ সরকার কোথায় একথা বলেছেন যে স্বীকৃতি দেব না? শ্রী রাজনারায়নঃ হ্যাঁ এটিই তো বলেছেন ভারত সরকার। নিজের দেশের স্বার্থে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কি হবে তা দেখে, যখন সময় হবে, কখন স্বীকৃতি দেয়ার কথা বিবেচনা করব। যাজী মহাশয়কে বলছি আপনার সংগে আছি। কিন্তু প্রশ্ন এটিই যে, আজ আপনার ৫০ টাকার দরকার হলো, তিনি বলেন, এখন তোমার দরকার নেই, তোমার কখন দরকার হবে সেটা আমি বুঝব। অনুরূপ ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ বলেছে আমাদেরকে অভিলম্বে সাহায্য দিন, এখই স্বীকৃতি দিন, এক এক দিনে হাজার হাজার মানুষকে প্রাণপাত করতে হচ্ছে। কিন্তু ভারত সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, এখনও উপযুক্ত সময় আসেনি, দৈর্য ধারণ কর, যখন সময় হবে তখন স্বীকৃতি দেব। এখনও ভারত সরকার ভাবছেন যে কখন স্বীকৃতি দেবেন কখন দেবেন না। যেখানে গ্রামের পর গ্রাম সম্পূর্ণ ধবংস হয়ে গেছে, যেখানে কোন ফসল অবশিষ্ট নেই, যেখানে মানুষের খাবার নেই, সেখানের জন্য ভারত সরকারের বক্তব্য হচেছ স্বীকৃতি দেবার সময় হয়নি। .....যখন পর্যন্ত সরকারের মাথায় এ ধরনের বুদ্ধি থাকবে তখন পর্যন্ত ওই সময় কখনো আসবে না। এ কারণে বুদ্ধি ঠিক করার জন্য আমি ভারতে মানুষের কাছে আহবানজানাব হে ভারতবাসী, ওঠ, ভারত সরকারকে চাপ দাও যাতে অবিলম্বে স্বাধীন বাংলাদেশ স্বীকৃতি লাভ করে এবং স্বীকৃতি পেয়ে সে সর্বপ্রকার সহায়তা পায় এবং অন্যরাও তাকে সহায়তা দান করে। আমি আজ আবার একটি পুরাতন বিষয় আপনাদের সামনে রাখতেচাই, হতে পারে সম্মানিত সদস্যগণ বিস্মৃত হয়েছে। আমি ডঃ লোহিয়ার লেখা একটি উদ্ধৃতি করছি। সে সময়ের চিন্তাধারা কি ছিল এবং আমাদের কাছে সময়ের চাহিদা কি আমরা সেটা জানতে পারব। ডঃ লোহিয়া মহোদয় লিখেছেন, একথা ভারতের জন্য প্রযোজ্য হয় না। কেননা ভারতে এমন কোন অংশ নেই যা তার স্বাভাবিক অংগ নয় কিংবা তার থেকে আলাদা নয়। অন্যদিকে পাকিস্তানের বৃষ্টি সম্পূর্ণ কৃত্রিম, তার দুই অংশের মাঝখানে এক হাজার মাইল ভারতের ভূখণ্ড । পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বর্তমান সম্পর্ক টিকতে পারে না। পূর্ব পাকিস্তান হয় পশ্চিম পাকিস্তানের দাস হয়ে পড়বে নয়ত পশ্চিম পাকিস্তানের সংগে তার সম্পর্ক শিথিল হতে থাকবে এবং তাকে ভারতের প্রতিবেশীর ভূখণ্ডের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। পশ্চিম পাকিস্তানের কাছে এমন সামরিক শক্তি নেই যে, সে পূর্ব পাকিস্তাণকে দাসে পরিণত করবে, ........ প্রভাব নিঃসন্দেহে আছে কিন্তু কতদিন পর্যন্ত টিকে থাকবে বলা যায় না। এরূপ দাসত্ব অপেক্ষা স্বাধীনতা চিন্তা ভাল। ইতিহাসের পরিণতি হতে অব্যাহতি নেই। শ্রী শীলভদ্র ইয়াজী মহাশয়, একটু শুনে রাখুন, ভারত যদি তাকে কোন সাহ য্য নাও করে তথাপি পাকিস্তান সন্দেহ করবে এবং স্বাভাবিকভাবে বিকাশমান স্বাধীন বাংলাদেশের ব্যাপরটি ভারতের ওপর চাপাবে। এখনই ...ভাষা ও আমলাতন্ত্র ( নওকর শাহী) প্রশ্নে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে কিছুটা বিবাদ সৃষ্টি হয়েছে, আর সামনেও হবে। এসকল বিবাদ বুদ্ধিমত্তার সাথে মীমাংসার পরিবর্তে পাকিস্তান হিন্দু মুসলিম ও হিন্দুস্থান - পাকিস্তানের সীমান্ত নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির মারাত্মক পন্থা গ্রহণ করেছে। শ্ৰী মহাবীর ত্যাগীঃ এটা কে লিখেছেন ? শ্রী রাজনারায়নঃ ডাঃ লোহিয়া। জনৈক মাননীয় সদস্যঃ কবে লিখেছেন? শ্রী রাজনারায়নঃ ১৯৪৮ সালে। আপনি একটু মনোযোগ দিন, এটি ১৯৪৮ সালে লেখা হয়েছে। ১৯৪৮ সালেরই একটি ভবিষ্যদ্বাণী আমি আবার করতে চাই।