পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৮৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br○と。 বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খন্ড পর্যবেক্ষণ করা খুবই জরুরী যে, আমাদের বিদেশ নীতি কি এবং আজ আমাদের বিদেশ নীতি কোন দিকে যাচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের বিদেশ নীতি দেউলিয়াতুে পৌছে গেছে। দুর্ভাগ্যবশতঃ আমাদেরকে বলতে হচ্ছে, বিশ্বে আজ আমাদের কোন বন্ধ নেই। ... দূরের কথা থাক, নেপালও আজ আমাদের বন্ধু নয়। বাৰ্মাও আমাদের কাছের মিত্র নয়। শুধু এই নয় বরং আমাদের দেশেও এমন কতকগুলো শক্তি আছে যারা আমাদের পক্ষে নেই। এ অবস্থায় আমাদের বিদেশনীতি কোনদিকে যাচ্ছে, কোন গর্তে আমরা নিপতিত হচ্ছি, এটাও আমাদের দেখা উচিত। পাকিস্তানের সংগে আমরা আজ অবধি কথা বলে আসছি, চীনের সংগে আমাদের যুদ্ধ হয়েছে এবং এতে কোন সন্দেহ নেই যে, শতাব্দীকাল ধরে চীন ও ভারত দুটি বন্ধু ও ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ ছিল, কিন্তু আজ এমন অবস্থা এসেছে যে আবার আমাদেরকে বাংলাদেশ প্রশ্নে চীনের সংগে আলোচনা করতে হবে। বিশ্বের বহু দেশেই তো আমাদের প্রতিনিধি গেছেন, আজ চীনের সংগে আলোচনার জন্যও আমাদেরকে অবশ্যই তৈরী থাকতে হবে, যাতে বাংলাদেশ প্রশ্নে চীন আমাদের প্রশ্নে চীন আমাদের সংগে একমত হতে পারে। আজ বাংলাদেশ যে আমরা বাংলাদেশের পিছনে দাঁড়িয়েছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধির পিছনে সারা দেশ এক হয়ে দাঁড়িয়েছে, তিনি মশাল হাতে সামনে এগুচ্ছেন-এরুপ দৃশ্যকল্প আমরা সামনে রেখেছি, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে এখন কোন দ্বিধা থাকা উচিত নয়, সামান্য সময় অপচয় করাও সমীচীন নয়, কেননা এখন আমাদের ওপর এমন সময় এসে পড়েছে যে, পরে আমাদের আর কিছু করার থাকবে না, বাকী থাকবে শুধু পরিতাপ। শ্ৰী শশীভূষণ (দক্ষিণ দিল্লী): স্পীকার মহোদয়, যে পরিস্থিতি আমাদের দেশ অতিবাহিত করছে তাতে আমাদের সদস্যগণের খুব সংযত ভাষায় বক্তব্য উপস্থাপিত করা উচিত। কিছু লোক আছেন, দিনের আলোতেও তারা অন্ধকার দেখেন, চারিদিকে শুধু নিরাশাই চোখে পড়ে, বিশ্বে তাঁদের কেউ নেই, তাঁরা একেবারে তলিয়ে যান কিন্তু আমি মনে করি যে, যখন আমরা কোন ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তৎপর হই তখন এরকম হতাশার কথা বলা দেশকে ঠেলে দেবার নামান্তর। বিশ্বে আমাদের সহযোগী নেই একথা আমার কাছে দুর্বোধ্য। পৃথিবীর যেখানেই প্রগতিশীল শক্তি আছে যারা সমাজবাদের জন্য যুদ্ধ করছে, তারা আমাদের সংগে আছে, বাংলাদেশের সংসদ সদস্যের সংগে কয়েকটি সমাজতান্ত্রিক দেশে আমার যাবার সুযোগ হয়েছে। সেখানকার জনগণ সহযোগিতা করেছে এবং সেখানকার সরকারও সমর্থন দিয়েছে। দু'তিন মাসের মধ্যে কোন পরিবর্তনকে সারা বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়ে দেবে এটা কখনও হয় না। আমরাও স্বাধিনতা যুদ্ধ করেছিলাম কিন্তু বিশ্ব কতদিন পরে স্বীকৃতি দিয়েছে? ভিয়েতনামের স্বীকৃতি মিলেছে তিন বছর। সুতরাং বিশ্ব আমাদের স্বপক্ষে নেই আমি এ কথা মানি না। ... আমি আরেকটি কথা বলতে চাই, যদি আমরা বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা না করতাম, তারা দশটি দিনও টিকতে পারত না। কারো ওপর যদি তাদের বিশ্বাস থাকে তবে সেটিও হচ্ছে এই মহান দেশ কেননা এদেশের ৫০ কোটি জনসাধারণ আন্তরিকভাবে তাদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বের কোন দেশ এতবড় আন্তরিক স্বীকৃতি কখনও পায়নি, এখন সরকারের স্বীকৃতি দেয়া উচিত। আমি এ কথার পক্ষপাতী যে, বাংলাদেশের জনগণ যারা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছেন, তাদেরও নিজ শক্তিতে সামনে চলা উচিত এবং আমাদের উচিত তাদেরকে সাহায্য করা আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি, ৯ই আগষ্ট সামনে আসছে, তখন পর্যন্ত যদি আমরা কোন সিদ্ধান্তে পৌছুতে না পারি তবে সংসদকে আমি জানিয়ে দিতে চাই যে, আমাকে আমরণ অনশন করতে হবে, সেদিন সমগ্র দেশের যুবকরা বাংলাদেশের স্বাধিনতার ব্রত গ্রহণ করবে। ব্যাস, আমি এটুকুই বলতে চাই। শ্ৰী ফুলচন্দ্ৰ বৰ্মা (উজ্জয়ন) বাংলাদেশে আজ যে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে সেটি শতাব্দির সর্ববৃহৎ গণহত্যা। সত্তর-আশি লাখের মত লোক আমাদের এখানে এসে পড়েছে। তাদের আগমনের ফলে আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস হচ্ছে, আমাদের সমাজে ভাংগন ধরছে, একই সংগে তারা আমাদের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে কেননা বাংলাদেশ হতে আগত লোকদের সংগে অনেক চরও ঢুকে পড়েছে। কিছুক্ষণ আগে কয়েকজন