পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, বর্ণমালা সংস্কার প্রচেষ্টা, অর্থনৈতিক অসন্তোষ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্যের প্রচেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক আবহাওয়া পাকিস্তান বিরোধী হয়ে ওঠ। এই সময় পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলন (পরবর্তীকাল সর্বহারা পার্টি) প্রণীত স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার আহ্বানের দলিল সংযোজিত হয়েছে ৩৮২-৩৯৬ পৃষ্ঠায়।

 গণ-অসন্তোষের এই পরিস্থিতির মধ্যে ১৯৬৮ সনের ৬ ডিসেম্বর মওলানা ভাসানী ঘেরাও ও হরতালের ডাক দেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং ছাত্র সংগঠন কর্তৃক এই আন্দোলনকে দেশব্যাপী বিস্তৃত করার দলিল পাওয়া যাবে ৩৯৮-৪৩৮ পৃষ্ঠায়। “সংগ্রামী ছাত্র সমাজের” ১১-দফা আন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত দলিল সংযোজিত হয়েছে ৪০৮-৪১২ পৃষ্ঠায়।

 আগরতলা মামলা প্রত্যাহার, গোলটেবিল বৈঠক এবং জেনারেল ইয়াহিয়ার কাছে প্রেসিডেণ্ট আইয়ুবের ক্ষমতা হস্তান্তরের দলিল পাওয়া যাবে ৪৩৮-৪৫০ পৃষ্ঠায়। ১৯৬৯ সনের ২৬ মার্চ ক্ষমতা দখলের পরবর্তী সময় থেকে জেনারেল ইয়াহিয়া খান কর্তৃক সর্বজনীন প্রত্যক্ষ ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচন, বিভিন রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক ও নির্বাচনী প্রচারণা, আইনগত কাঠামো আদেশ এবং তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলসমূহের প্রতিবাদ এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রকাশ্যে স্বাধীনতার পক্ষে বক্তব্য রাখার দলিল দেয়া হয়েছে ৪৫১-৫৯২ পৃষ্ঠায়।

 ১৯৭০ সনের নির্বাচনে পাকিস্তানের ভিত্তিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় সত্ত্বেও পাকিস্তানী শাসকবর্গ কর্তৃক ক্ষমতা হস্তান্তরের সম্ভাবনা সম্পর্কে সংশয়ের এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো কর্তৃক ক্ষমতা হস্তান্তরের বিরোধিতার দলিল রয়েছে ৫৫২-৬৬১ পৃষ্ঠায়। এ ছাড়া পশ্চিম পাকিস্তানী রাজনৈতিক দল যারা গণপরিষদে যোগদান করতে চেয়েছিলেন, পাকিস্তানী শাসকবর্গ কর্তৃক ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতি অন্তরায় সৃষ্টির বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল স্বাধীন বাংলোদশ প্রতিষ্ঠার পক্ষে বক্তব্য পেশ {{SIC|করন|করেন} সেসব বিষয়ের উপর দলিলও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই অংশ।

 ১৯৭১ সনের ১ লা মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া খান কর্তৃক জাতীয় পরিষদে অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণা সংযোজিত হয়েছে ৬৬৪ পৃষ্ঠায়।

 এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে সমগ্র বাংলাদেশে যে অনস্তোষ পরিলক্ষিত হয় তার দলিলও রয়েছে ৬৯২ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হরতাল ও সর্বব্যাপী প্রতিবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অস্ত্র ব্যবহার করে (৬৯১ পৃষ্ঠা) এবং ১৯৭১ -এর ৬ ই মার্চ ইয়াহিয়া খান গণ-অসন্তোসকে পাকিস্তানের সংহতিবিরোধী বলে আখ্যায়িত করেন (৬৯৩ পৃষ্ঠা)।

 ১৯৭১ সনর ৭ ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের দলিল সন্নিবেশিত হয়েছে ৭০৩-৭৪৫ পৃষ্ঠায়। অসহযোগ আন্দোনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সংগে আলোচনার জন্য প্রেসিডেণ্ট ইয়াহিয়া খান, জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং অন্যান্য পাকিস্তানী নেতার ঢাকা আগমন একং ১৬ ই মার্চ থেকে এই আলোচনা সংক্রান্ত দলিলাদিও রয়েছে। আলোচনার সমাপ্তির পূর্বেই ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সামরিক বাহিনী জনগণের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ চালায়।

 এ খণ্ড ৩ টি সংযাজনী দেয়া হয়েছে। প্রথমটিতে (৭৯৩-৮০৮ পৃষ্ঠা) ৬ দফার নিরিখ আওয়ামী লীগের সংবিধান কমিটি-প্রণীত পাকিস্তানের ফেডারেল শাসনতন্ত্রের খসড়ার অংশবিশেষ, দ্বিতীয়টিতে বাংলাদেশের একটি দৈনিকের ১৯৬৪-৬৫ সনের দুটি উপসম্পাদকীয় সহ ১৯৭১ সনের ১লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত বিভিন দৈনিকের সংবাদ শিরোনাম মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণার আনুপূর্বিক বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিচয় ঞ্জাপক কয়েকটি দলিল(৮০৯-৮৩৩ পৃষ্ঠা) সনিবেশিত হয়েছে। তৃতীয় সংযোজনীটি হচ্ছে ইয়াহিয়া-মুজিব বৈঠকের ওপর একটি বিশেষ প্রতিবেদন (৮৩৪-৮৪৩ পৃষ্ঠা)।

হাসান হাফিজুর রহমান
সম্পাদক