পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

230 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ জনাব আইয়ুব খাঁর জবাবে হাজী পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী অক্টোবর, ১৯৬৪ মোহাম্মদ দানেশ পার্টির পুস্তিকা জনাব আইয়ুব খাঁর জবাবে *এক নায়কত্বের অবসান হোক * গণতন্ত্রের জয় হোক হাজী মোহাম্মদ দানিশ সাধারণ সম্পাদক পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য কনভেনশন লীগ মনোনীত প্রার্থী জনাব মোহাম্মদ আইয়ুব খাঁ পূর্ব পাকিস্তানে নির্বাচনী অভিযানে প্রদত্ত বক্তৃতাসমূহে তাঁহার শাসন আমলের অনেক গুণগান বয়ান করিয়া গণমনে নানা বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করিতেছেন। জনাব মোহাম্মদ আইয়ুব খাঁ বৃটিশ আমলে সৈন্য বাহিনীতে যোগ দিয়া তাঁহার কর্মজীবন শুরু করিয়াছিলেন। পাক-ভারত উপমহাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে দেশের জনগণ যখন বিদেশী শাসকদের পুলিশ ও সেনা বাহিনীর গুলিতে নিজেদের বুকের রক্ত ঢালিয়া দিতেছিলেন, তখন জনাব আইয়ুব খাঁ বৃটিশ সামরিক বাহিনীর একজন অফিসাররুপে নিষ্ঠার সহিত ঐ বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীদের সেবা করিয়াছিলেন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁহার কোন অবদান নাই; বরং তখন তিনি ছিলেন বৃটিশ একান্ত অনুগত। বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে দেখা যায় যে, স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশের রাষ্ট্র নেতারা রাষ্ট্ৰীয় ব্যবস্থা ও সামরিক বাহিনী হইতে বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা শিক্ষিত ও পদলেহনকারী অফিসারদের অপসারণ করিয়া সে স্থলে নূতন দেশপ্রেমিক ব্যক্তিগণকে নিয়োগ করিয়া থাকেন। আমাদের দেশে সে ব্যবস্থা গৃহীত হইলে আজিকার অনেক বড় বড় রাষ্ট্র-নেতা স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরই দেশ-বিরোধী বলিয়া সমাজের আঁস্তাকুরে নিক্ষিপ্ত হইত। কিন্তু আমাদের দেশে স্বাধীনতা পাওয়ার পরও পুরাতন আমলতন্ত্রকেই অটুট রাখা হয়। সামরিক বাহিনীতে কোন রদবদল করা হয় নাই। সেই সূত্রে জনাব আইয়ুব খাঁও স্বাধীনতার পরও সামরিক বাহিনীর একটি উচ্চপদে অধিষ্ঠিত এবং পাকিস্তান কায়েম হওয়ার পর পরই পাকিস্তানের জি.ও.সি হিসাবে নিযুক্ত হন। এই পদ হইতে তিনি পরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অধিনায়কের পদে অধিষ্ঠিত হন। এই চাকুরীতে বহাল থাকাকালে তিন তিনবার তাঁহার চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। মরহুম খাজা নাজিমুদিন তাঁহার মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন পূর্বে লাহোরে বলিয়াছিলেন যে, তাঁহার প্রধানমন্ত্রিতুকালে জনাব আইয়ুব খাঁ তাঁহার (জনাব আইয়ুব খাঁ'র) চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য তদ্বির করিয়াছিলেন। খাজা নাজিমুদ্দিন উহাতে অস্বীকৃতি জানাইলে জনাব আইয়ুব খাঁ তদানীন্তন গর্ভনর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদের শরণাপন্ন হন। ইহার কিছুদিন পরই গোলাম মোহাম্মদ মরহুম খাজা নাজিমুদ্দিনকে শাসনতন্ত্র বিরোধী উপায়ে প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ হইতে অপসারণ করেন। অপরদিকে, জনাব আইয়ুব খাঁ’র চাকুরীর মেয়াদও বৃদ্ধি পায়। ‘এবডো’র অধীনে মরহুম শহীদ সোহরাওয়ার্দীর তথাকথিত বিচারের সময় যখন তাঁহার বিরুদ্ধে অফিসারদের পদোন্নতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা “অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয় তখন তিনি