373 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ বাংলা বর্ণমালা ও বানান সংস্কার প্রসংগে দৈনিক পাকিস্তান ১৩ আগষ্ট, ১৯৬৮ বাংলা বর্ণমালা ও বানান সংস্কার প্রসঙ্গবিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্যঃ ংলা বর্ণমালা সংস্কার সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয় যে, বাংলা বানানের ক্ষেত্রে যে ক্রমবর্ধমান বিশৃংখলা দেখা দিচ্ছে তার অবসান এবং উচ্চশিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের ব্যাখ্যা হিসেবে বাংলার উন্নয়নকে সুগম করার জন্যে এই সংস্কার অনুমোদন করা হয়েছে। বানান-বিশৃংখলা অব্যাহতভাবে এগিয়ে গেলে তা ভাষাকেও দুর্বল করে ফেলবে। বাংলা ভাষার উন্নয়নকে ব্যাহত করা এই সংস্কারের উদ্দেশ্য বলে কোন ইঙ্গিত প্রদান করা হলে একাডেমিক কাউন্সিলের মহৎ উদ্দেশ্য ভুল বোঝা হবে। বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে একাডেমিক কাউন্সিল একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলা হলেও ভুল করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ জানান ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ নিজেই এই কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। অসুস্থ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কমিটির সব বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কমিটির রিপোর্টে যেসব সুপারিশ স্থান লাভ করেছে সেসব সুপারিশ গ্রহণের ব্যাপারে কমিটির বৈঠক সমূহে তিনি জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার দরুন রিপোর্টে ডঃ শহীদুল্লাহ স্বাক্ষর দিতে পারেন নি, এই সত্যকে বিকৃত করা চলে না। কতৃপক্ষ জানান যে, অনুমোদিত সংস্কারের বিস্তারিত প্রয়োগের ব্যাপারটি ঠিক করার উদ্দেশ্যে নয় সদস্যবিশিষ্ট আর একটি কমিটি গঠনের ব্যাপারেও একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কর্তপক্ষ জানান, একাডেমিক কাউন্সিলের উক্ত বৈঠকে ৫০ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র দুজন অনুমোদনের বিরোধিতা করেন। কমিটির তিনজন সদস্যের বিরোধিতামূলক বক্তব্যসহ রিপোর্টটি একাডেমিক কাউন্সিলের ৩রা আগষ্টের বৈঠকের আগেই সদস্যদের কাছে পাঠান হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল-এর গত বৈঠকে ডঃ মুঃ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত কমিটির রিপোর্ট রদবদলের রায় গ্রহণ করেন। বাংলা ভাষায় বানান, ব্যাবরণ ও বর্ণমালা সংস্কার ও সহজকরণের উদ্দেশ্যে ১৯৬৭ সালের ২৮শে মার্চ এই কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার সর্বস্তরে যতশীঘ্র সম্ভব বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ, অফিস আদালতে বাংলা ভাষার ব্যবহার এবং শিক্ষা বিস্তারে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্য প্রস্তুতির গতিকে দ্রুততর করা। কমিটি গঠনের ব্যাপারে ডঃ মুঃ শহীদুল্লাহ নিজেই প্রস্তাব দেন এবং একাডেমিক কাউন্সিল কমিটির চেয়ারম্যান ডঃ মুঃ শহীদুল্লাহ ছাড়া আরও ১০ জন সদস্য নিয়ে কমিটি গঠন করেন। কমিটির এই সদস্যরা হলেন, (১) বাংলা একাডেমীর ডিরেক্টর ডঃ কাজী দীন মোহম্মদ, (২) প্রাদেশিক জনশিক্ষা বিভাগের পরিচালক জনাব ফিরদৌস খান, (৩) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ জনাব আবদুল হাই, (৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যক্ষ জনাব সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, (৫) ঢাকা টিচাস ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ মোহাম্মদ ওসমান গনি, (৬) বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ জনাব আবুল কাসেম, (৭) অধ্যক্ষ ইব্রাহীম খাঁ, (৮) ডঃ এনামুল হক, (৯) জনাব মুনীর চৌধুরী (১০) চৌমুহনী কলেজের অধ্যক্ষ জনাব টি, হোসেন।
পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪০০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।