পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খণ্ড
375

 অতীতে প্রশ্ন একটাই ছিল কোন পদ্ধতিতে এই সংস্কার করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তরফ থেকে কোন সুনির্দিষ্ট অভিমতের অভাবে বাংলা বানান ক্রমেই জটিল হয়ে পড়েছিল।

 পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই বাংলা বান নের সংস্কার সাধনের দাবীর কথা সবার জানা আছে।

 এই জনদাবী পূরণের জন্য ১৯৩০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কতিপয় সংস্কার সাধন করেন, যা প্রায় সবাই গ্রহণ করেছেন। এসব সংস্কার ছিল অসম্পূর্ণ ও আংশিক।

 একই ধ্বনির একাধিক অক্ষরের (স শ ষ অথবা জ য) উচ্চারণের দরুন সমস্যা তার সমাধান হয়নি। অপ্রয়োজনীয় বাড়তি ও কদাচিৎ ব্যবহৃত প্রতীক অথবা বিশেষ চিহ্নবাহীযুক্ত স্বরধ্বনি (অউ এর স্থলে স্ট্রে, কই এর স্থলে কৈ) সমস্যার সমাধান হয়নি।

 আজও আগামীতে বাংলা ভাষা যে প্রদেশের প্রধান ভাষা সেই প্রদেশে উচ্চতর শিক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে সমাসীন একটি সংস্থা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বাস, বানান সংস্কারের পথ নির্দেশ দানে তার ব্যর্থতা দায়িত্ব এড়ানোর শামিল হবে। বাংলা বানানের জটিলতা অব্যাহত রাখার অর্থ হবে বাংলা ভাষাকে দুর্বল রাখারই নামান্তর।

 প্রস্তাবিত সংস্কারের পিছনে বাংলা ভাষার বিকাশ ব্যাহত করার মতলব আছে এরূপ ইঙ্গিত হবে মারাত্মক। এভাবে দেখলে কাউন্সিলের সামগ্রিক উদ্দেশ্যই ভুল বোঝা হবে।