পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

391 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের সাধারণ কর্মনীতি ১। সর্বহারা পার্টির নেতৃত্বে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও গেরিলা যুদ্ধের জন্য সর্বাপেক্ষা সুবিধাজনক এমন স্থানে অর্থাৎ জঙ্গলাকীর্ণ পার্বত্য গ্রামাঞ্চলে যেতে হবে। ২ ২ গ্রাম্য মজুর, গরীব চাষী ও মাঝারি চাষীকে উজ্জীবিত করতে হবে সামন্তবাদ ও উপনিবেশবাদ বিরোধী গেরিলা যুদ্ধে। ৩। কৃষি বিপ্লবঃ উপনিবেশবাদ সমর্থক জমিদার, ধনী চাষীদের জমি দখল করে তা ক্ষেতমজুর ও গরীব চাষীদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। সরকার কর্মচারী (পুলিশ, সার্কেল অফিসার) এবং বিডি-দের মাঝে উপনিবেশবাদ সমর্থকদের ধবংস করতে হবে। দেশপ্রেমিক জমিদার, ধনী চাষী ও অন্যান্যের বর্গা বদলানো বাতিল, পত্তনি বদলানো বাতিল, বর্গা শোষণ ও পত্তনি শোষণ কমানো প্রভৃতি কার্যকর করতে হবে। সুবিধাজনক অবস্থায় দৃঢ়ভাবে ভূমি সংস্কার করাতে হবে। ৪। গেরিলা বাহিনী থেকে নিয়মিত বাহিনী সৃষ্টি ও ঘাটি এলাকা তৈরী করতে হবে। ৫। ঐক্যফন্ট প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ৬। গ্রাম্য এলাকা দখল করে তা দিয়ে শহর ঘেরাও শেষ পর্যন্ত শহর দখল করতে হবে। ৭। পাকিস্তানী উপনিবেশবাদ ও তার দালাল পূর্ববাংলার বুর্জোয়া, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও সোভিয়েত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ, অন্য যে সকল বৈদেশিক শক্তি ঔপনিবেশিক শাসক শ্রেণীকে সমর্থন করে (যদি তাদের সম্পত্তি এ দেশে থাকে) এবং বৈদেশিক শক্তিসমূহের দালালদের (যখন তারা জাতীয় বিপ্লবের বিরোধিতা করে) সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। ৮। দখলকৃত এলাকায় জাতীয় গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে হবে। এ সরকার গণতান্ত্রিক একনায়কত্বের মাধ্যমে, সর্বহারা শ্রেণীর নেতৃত্বে, শ্রমিক-কৃষক মৈত্রীর ভিত্তিতে এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক শ্রেণী ও স্তরের সহযোগিতায় শত্রর উপর একনায়কতু ও জনগণের মাঝে গণতন্ত্র কায়েম করবে। ৯। বিচ্ছিন্ন হবার অধিকারসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতিকে স্বায়ত্তশাসন ও বিভিন্ন উপজাতিকে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন দেয়া হবে। ১০। সকল বাঙালী দেশপ্রেমিক জনগণের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বিকাশের পূর্ণ সুযোগ দেয়া হবে। ১১। জনগণের ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করা হবে। বিপ্লবী যুদ্ধের সাধারণ কর্মনীতি ১। নিয়মিত বাহিনী গড়ে না ওঠা পর্যন্ত গেরিলা যুদ্ধ বিপ্লবী যুদ্ধের প্রধান রূপ; ২। প্রধানতঃ চাষীদের নিয়ে গঠিত লালফৌজ প্রধান সংগঠন; ৩। গেরিলা যুদ্ধের গতিপথে নিয়মিত বাহিনী গড়ে উঠবে: ৪। দীর্ঘস্থায়ী দুরুহ যুদ্ধ চলবে। প্রধান কাজঃ মার্কসবাদী লেনিনবাদী ও মাওসেতুঙ চিন্তানুসারী সর্বহারার রাজনৈতিক পার্টি প্রতিষ্ঠা