পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

394 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড গ্রামাঞ্চল। তাদের লুণ্ঠন করে বেঁচে আছে পৃথিবীর শহরাঞ্চল ইউরোপ ও আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী ও সামাজিক সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো। এই গ্রামাঞ্চলে যেখানে ইউরোপ ও আমেরিকার মত প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি সুদৃঢ় নয় এবং অপেক্ষাকৃত অনেক দুর্বল, সেখানেই বিপ্লবের সূচনা করতে হবে এবং কালক্রমে সমগ্র গ্রামাঞ্চল দখল করে শহর অবরোধ করা এব শেষে শহর দখল করা মাওসেতুঙের চিন্তানুসারী নীতি এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অধিকাংশ দেশের বুর্জোয়ারা সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশবাদের প্রত্যক্ষ শাসন ও শোষণ থেকে নিজেদের দেশ ও জাতিগুলোকে মুক্ত করেছে। সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশবাদবিরোধী সংগ্রামের এটা একটা বড় বিজয়। কিন্তু এই বুর্জোয়া শ্রেণী, শ্রেণী বিকাশের স্বার্থে সাম্রাজ্যবাদ ও সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের সাথে সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করে নিজ দেশকে নয়াঔপনিবেশে পরিণত করছে। এ অসমাপ্ত জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের শর্ত তৈরি করা সর্বহারা শ্রেণীর ঐতিহাসিক দায়িত্ব। ভিয়েতনামের বীর জনগণের মহান মুক্তিযুদ্ধ যখন মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে সম্পূর্ণ পরাজিত করার পর্যায়ে পৌছেছে তখন মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অধঃপতিত দোসর সোভিয়েত সাম্রাজ্যবাদ শাস্তি আলোচনার প্রহসনের ভেতর দিয়ে এ মহান মুক্তি সংগ্রামকে মুছে দেওয়ার জঘন্য ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তবু ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়, বাৰ্মা, নক্সালবাড়ী, বিহার, কঙ্গো, মোজাম্বিক, এ্যাঙ্গোলা, আজানিয়া, প্যালেস্টাইন, বায়াফ্রা, রোডেশিয়া, নিউজিল্যান্ড, বলিভিয়া প্রভৃতি স্থানে সাম্রাজ্যবাদ ও সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম তীব্র গতিতে এগিয়ে চলেছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও সোভিয়েত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ বর্তমান বিশ্বপ্রতিক্রিয়ার কেন্দ্র। ঘটনাবলী প্রমাণ করছে যে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও সোভিয়েত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ দুনিয়ার জনগণের প্রধান শত্র এ দ্বন্দ্ব বর্তমান এবং ইহাই প্রধান দ্বন্দ্ব। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় কমিউনিষ্ট আন্দোলন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় কমিউনিষ্ট আন্দোলনের প্রধান বিপদ হলো সংশোধনবাদ ও নয়া সংশোধনবাদ। সোভিয়েত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বে সংশোধনবাদ বুর্জোয়া শ্রেণীর প্রতিনিধি দ্বারা কু-দেতা ঘটিয়ে ধনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে কয়েকটি সমাজতন্ত্রী দেশে। যে সকল কমিউনিষ্ট পার্টি এখনো ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হয়নি সেগুলোর মাধে বুর্জোয়া দালালদের সহায়তায় প্রতিবিপ্লবী কাজ পরিচালনা করছে এবং কোনো কোনো পার্টির ক্ষমতা এই দালালরা দখল করতে সক্ষম হয়েছে। সমাজতান্ত্রিক দেশে ধনতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার করছে। কোনো কোনো পার্টি সংশোধনবাদীদের এ চক্রান্তের খপ্পরে পড়ে আন্তর্জাতিক কমিউনিষ্ট আন্দেলনে স্বাধীন পথ অনুসরণ করছে, ঘোষণা করে প্রকৃত পক্ষে সুবিধাবাদী পথ অনুসরণ করছে, সংশোধনবাদীদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ মার্কস-লেনিনবাদ-মাওসেতুঙ চিন্তাধারা আর সংশোধনবাদের মাঝে কোন মাঝারি পথ নেই। বর্তমান দুনিয়ায় চীনা কমিউনিষ্ট পার্টি ও আলবেনিয়ার শ্রমিক সঠিক মার্কস-লেনিনবাদ-মাওসেতুঙ চিন্তানুসারী হয়ে সমাজতন্ত্রেও পথে এগিয়ে চলছে। সভাপতি মাওসেতুঙ দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মার্কসবাদী লেনিনবাদী, বর্তমান দুনিয়ার সর্বহার শ্রেণীর মহন নেতা ও পরিচালক। (৩) “সভাপতি মাওসেতুঙ প্রতিভার সঙ্গে সৃজনশীলভাবে ও সামগ্রিকভাবে মাকর্সবাদ লেনিনবাদকে উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেছেন, রক্ষা করেছেন এবং বিকাশ করেছেন, মাকর্সবাদ-লেনিনবাদকে এক নতুন পর্যায়ে উন্নীত