পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

395 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড করেছেন।” মাকস ও এঙ্গেলস মাকর্সবাদের প্রতিষ্ঠাতা। লেনিন মার্কসবাদকে সাম্রাজ্যবাদী যুগে সর্বহারা বিপ্লবে পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সমাধান করেন, সর্বপ্রথম সমাজতান্ত্রিক দেশের প্রতিষ্ঠা করেন, মার্কসবাদ-লেনিনবাদ প্রতিষ্ঠা করেন। স্তালিন লেনিনবাদকে রক্ষা করেন ও সর্বহারা বিপ্লবের কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সমাধান করেন। সভাপতি মাওসেতুঙ সাম্রাজ্যবাদের সামগ্রিক ধ্বংসের যুগের মার্কসবাদলেনিনবাদকে বিকাশ করেছেন। তিনি সমাধান করেছেন কিভাবে সমাজতান্ত্রিক দেশে ধনতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রতিরোধ করা যায় এবং যে সকল দেশে ধনতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখানকার সর্বহারা বিপ্লবীরা কিভাবে পুনরায় রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে পারে। তিনি প্রতিভার সঙ্গে দুনিয়ার প্রথম মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা ও পরিচালনা করেন। এভাবে তিনি মার্কসবাদকে এই সম্পূর্ণ নতুন স্তরে উন্নীত করেন, যে স্তর হলো মাওসেতুঙ চিন্তাধারার স্তর। বিশাল সাগর পার হবার জন্য নির্ভর করি কর্ণধারের ওপর, বিপ্লব করার জন্য নির্ভর করি মাওসেতুঙ চিন্তাধারার ওপর। কাজেই বর্তমান যুগের বিপ্লবীদের চেনার উপায়- মাওসেতুঙ চিন্তাধারা অধ্যয়ন, অনুশীলন ও তার ভাল সৈনিক হওয়ার ওপর। বর্তমান আন্তর্জাতিক কমিউনিষ্ট আন্দেলনে এক নতুন ধরনের সংশোধনবাদ দেখা দিয়েছে। এরা মুখে মাওসেতুঙ-এর বুলি ঝাড়ে এবং কাজে তার বিরোধিতা করে; কথায় ও কাগজে মাওসেতুঙ চিন্তানুসারী ও অনুশীলনে সংশোধনবাদী পথ অনুসারী। মাওসেতুঙ চিন্তাধারার মুখোশ এঁটে জনগণকে ও বিপ্লবীদের ধোঁকা দেয়ার বুর্জোয়া দালালদের এ এক অভিনব কারসাজি ও ইহাই নয়া সংশোধনবাদ। বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতে কমিউনিষ্ট আন্দোলনের বিরাট পুনর্গঠন পুনর্বিন্যাসের সময়। বিভিন্ন দেশে যেখানে সংশোধনবাদী ও নয়া সংশোধনবাদীরা নেতৃত্ব কুক্ষিগত করছে, সেখানে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী মাওসেতুঙ চিন্তানুসারীরা নতুন পার্টি সৃষ্টি করে সর্বহারা শ্রেণীর নেতৃত্বে জনগণকে বিপ্লবের পথে পরিচালিত করছে। সভাপতি মাও বলেছেন, “যদি বিপ্লব করতে হয় তাহলে অবশ্যই একটি বিপ্লবী পার্টি থাকতে হবে। বিপ্লবী পার্টি ছাড়া, মার্কসবাদী-লেনিনবাদী বিপ্লবী তত্ত্বেও ও বিপ্লবী রীতিতে গড়ে ওঠা, একটি বিপ্লবী পার্টি ছাড়া শ্রমিক শ্রেণী ও ব্যাপক জনসাধারণকে সাম্রাজ্যবাদ ও তার পদলেহী কুকুরদের পরাজিত করতে নেতৃত্ব দান করা অসম্ভব।” আমাদের দেশে গতানুগতিক যে মার্কসবাদী নামধারী পার্টি ছিল তা মস্কোপন্থী’ ও পিকিংপন্থী’ নামধারী দুই উপদলে বিভক্ত হয়, তাদেরকে, তাদের থেকে বেরিয়ে আসা অথবা বিতাড়িত এবং অন্যান্য বিচ্ছিন্ন দল ও উপদলগুলোকে এ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করা প্রয়োজন। পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিষ্ট পার্টি নামধারী সংশোধনী পার্টি এই পার্টি মার্কসবাদী-লেনিনবাদের সকল মূল তত্ত্বকে সংশোধন করে প্রকৃতপক্ষে শোষকশ্রেণী অর্থাৎ পূর্ববাংলার শ্রমিক-কৃষকদের বিপথে পরিচালিত করছে। এই অধঃপতিত দলদ্রোহী গোষ্ঠী অর্থনীতিবিদ, বাৰ্ণষ্টাইনবাদের অনুসারী। শ্রমিক-কৃষক জনগণকে বিভ্রান্ত করে শোষকশ্রেণীর স্বার্থসিদ্ধি এদের লক্ষ্য। এরা মস্কোপন্থী’ নামে পরিচিত। এরা পূর্ববাংলার শ্রমিক-কৃষক জনগণের জাতীয় শক্ৰ পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিষ্ট পার্টি (মার্কসবাদী)নামধারী নয়া সংশোধনবাদী পার্টি এরা কথায় ও কাগজে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওসেতুঙ চিন্তানুসারী ও অনুশীলনে সংশোধনবাদী। অর্থাৎ এরা লাল পতাকা ওড়ায় লাল পতাকার বিরোধিতা করার জন্য। এরা পূর্ববংলার ওপর পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শোষণ স্বীকার করে না এবং জাতীয় সংগ্রাম না করায় এরা পূর্ববাংলার জনগণের নিকট ঔপনিবেশিক সরকারের দালাল হিসেবে পরিচিত। জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য সশস্ত্র প্রস্ততি না নিয়ে তারা একটিকে ঔপনিবেশিক