পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খণ্ড
408

 দর্শানোর নোটিশ জারী এবং কোন বই আটক ও বাজেয়াপ্তকরণের মাধ্যমে সরকার নতুনভাবে চিন্তা ও মত প্রকাশের কণ্ঠরোধে তৎপর হয়ে উঠেছেন। এই হামলার হিড়িক আইয়ুবী আমলের স্বৈরাচারকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থার ফলে কেবল যে লেখকদের স্বাধীনভাবে লেখার উৎসাহ দমিত হচ্ছে তাই নয়, প্রকাশকরাও বই প্রকাশে নিরুৎসাহ হয়ে পড়ছেন এবং ফলে সংস্কৃতির জগতে নেমে আসছে চরম বন্ধ্যাত্ব। বস্তুতঃ স্বৈরাচারী শাসকবর্গের নিকটও একটি জাতিকে অবদমিত রাখার জন্যে এটাই হলো সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা। যখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এই পরিকল্পিত হামলার ব্যাখ্যা কি? এই অসঙ্গতির মূল কোথায়?

 তাই এ মুহূর্তে লেখকদের স্বাধিকার সংরক্ষণ এবং চিন্তা ও মত প্রকাশের ওপর যে কোন প্রকারের হামলার প্রতিরোধে প্রতিটি নাগরিককে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হতে আমরা আহবান জানাচ্ছি। শেষবারের মতো এই সত্য প্রতিষ্ঠিত করা আজ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে যে, আমরা স্বাধীন জাতি এবং আমাদের চিন্তা ও মত প্রকাশের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ। আমরা যে কোনো মূল্যে প্রতিরোধ করব এবং এই অনাচারকে আমরা কিছুতেই কায়েম থাকতে দেব না।

সভার স্থানঃ বাঙলা একাডেমী প্রঙ্গণ 
১৫ই জানুয়ারী, বিকাল ৩টা
সভাপতিঃ ডক্টর এনামুল হক 

 বক্তৃতা করবেন; শিল্পী জয়নুল আবেদিন, ডক্টর আহমদ শরীফ, বেগম সুফিয়া কামাল, সিকান্দার আবু জাফর, কে,জি মোস্তফা, রণেশ দাশগুপ্ত, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক মনসুরউদ্দীন প্রমুখ।


লেখক স্বধিকার সংরক্ষণ কমিটির পক্ষ থেকে প্রচারিত ও সমকাল মুদ্রায়ন থেকে মুদ্রিত।