পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

431 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড পল্টনের জনসমুদ্রে গৃহীত ছাত্রসমাজের প্রস্তাবাবলী | দৈনিক পাকিস্তান ৯ ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৯ পল্টনে জনতার মহাসমুদ্রে সংগ্রামী ছাত্রসমাজের শপথনামা সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে গত রবিবার ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক জনসমাবেশে গণমন উৎসারিত এক শপথধ্বনি কেবল বার বার আকাশ বাতাস মুখরিত করিয়া তোলে। সেই ধ্বনি ছিল ‘ডাঙ্গা আর গুলি জনতার হৃদয়বানী স্তদ্ধ করিতে পরিবে না। মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে নির্যাতনের পথে দাবাইয়া দেওয়া যাইবে না’। এই শপথনামা ছাত্রসমাজ জনতার পক্ষ হইতে জনতারই মহাসমুদ্রে উত্থাপন করিয়ানে অঙ্গীকারের দৃপ্ত আশ্বাসে। দৈনিক সংবাদ, ফেব্রুয়ারী ১০, ১৯৬৯ গত (৯ই ফেব্রুয়ারী) সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত পল্টনের জনসভার শোক প্রস্তাব আদ্যকার এই মহতী সমাবেশ গভীর শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করিতেছে, শহীদ আসাদ, মতিউর, মিলন, আলমগীরসহ অন্যান্য বীর শহীদানের মহান স্মৃতি -যাহারা এদেশ হইতে স্বৈরাচারী ও একনায়কত্বের উচ্ছেদ করিয়া ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী তথা সর্বশ্রেণীর গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ছাত্রসমাজের ১দফার সংগ্রামের আত্মাহুতি দিয়াছেন। এই মহতী সমাবেশ অমর শহীদানের প্রতি গভীরতম শ্রদ্ধা জানাইবার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় ঘোষণা করিতেছে যে, শাসক গোষ্ঠির নিষ্ঠুর ও তীব্র আক্রমণে দেশবাসী ও ছাত্রসমাজ ভীত না হইয়া যে কোন মূল্যের বিনিময়ে গণতান্ত্রিক গণঅভু্যত্থানের মহান পতাকা উড্ডীন রাখিবেই গণঅভু্যত্থানের শহীদবর্গের জন্য এই মহতী সমাবেশ সারা দেশ বিশেষতঃ সমগ্র পূর্ব বাংলার সকল জনগণের পক্ষ হইতে অন্তরের গভীর শোক প্রকাশ করিতেছে। শপথ প্রস্তাব অদ্যকার এই মহতী সমাবেশ সমস্ত পূর্ব পাকিস্তানের সংগ্রামী ছাত্র জনগণের পক্ষ বলিষ্ঠ শপথ গ্রহণ করিতেছে যে, শতাধিক শহীদের রক্তে রঞ্জিত সমগ্র পাকিস্তানের বিশেষতঃ পূর্ব পাকিস্তানের সকল জনগণের মহান গণতান্ত্রিক অভু্যত্থানকে যে কোন ত্যাগ ও মূল্যের বিনিময়ে অগ্রসর করিয়া লওয়া হইবে। জনগণের সকল গণতাত্রিক অধিকার নস্যাৎ করিয়া সামরিক শাসনের ছত্রছায়ায় সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, একচেটিয়া পুঁজিবাদীদের স্বার্থে জনগণের ওপর নিরঙ্কুশ শোষণ নির্যাতন এবং পূর্ব পশ্চিম পাকিস্তানের সরহাদ, উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে সিন্ধু, বেলুচিস্তানের জনগণকে দমন ও নিপীড়ন চালাইবার জন্য দেশে যে অত্যাচার, স্বৈরাচারী ও একনায়কত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হইয়াছিল উহার চির অবসান ও উচ্ছেদ না ঘটা পর্যন্ত ছাত্র জনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম অব্যাহত থাকিবেই। এই সমাবেশ ঘোষণা করিতেছে যে, স্বৈরাচারী একনায়কত্ববাদী আইয়ুব সরকারের অবসান ঘটাইয়া অবিলম্বে সারা পাকিস্তানের সকল জনগণের পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার কায়েম তথা প্রত্যক্ষ ও সার্বজনীন ভোটে পার্লামেন্টার ফেডারেল সরকার কায়েম, সকল রাজবন্দীর মুক্তি, জরুরী আইন