পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

459 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড সেইজন্য রাষ্ট্র তাঁতীদের নিয়ন্ত্রিত স্বল্পমূল্যে সুতা সরবরাহ করবে। (গ) পূর্ব বাংলার লবণশিল্প ও ক্ষুদে লবণ উৎপাদকেরা যাহাতে রক্ষা পাইতে পারে, সেইজন্য রাষ্ট্র লবণ কর বাতিল করিবে ও বিদেশ হইতে লবণ আমদানী নিষিদ্ধ করিবে। লবণ চাষীরা যদি জোতদারের জমিতে লবণ চাষ করে তাহা হইলে উক্ত জোতদারের জমি বাজেয়াপ্ত করিয়া লবণ চাষীদের মধ্যে বিতরণ করা হইবে। জোতদার নয় এমন জমির মালিকদের জমিও উপযুক্ত মূল্য দিয়া রাষ্ট্র ক্রয় করিয়া লইবে এবং লবণ চাষীদের মধ্যে বিতরণ করবে। এইভাবে লবণ উৎপাদনের উপযোগী জমির উপর প্রকৃত লবণ চাষীর স্বত্ব প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা হইবে লবণ চাষীরা যাহাতে যৌথ সমবায় প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলে সেইজন্য রাষ্ট্র তাহদের উৎসাহ প্রদান করিবে। (৬) বনজ শিল্প সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে। (৭) পূর্ব বাংলার খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ ও উন্নয়নের উপর রাষ্ট্র বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করিবে। পূর্ব বাংলার ভূগর্ভে কয়লা, তৈল, পেট্রোলিয়াম প্রভৃতি খনিজ সম্পদ আবিষ্কৃত হওয়ার যে উজ্জ্বল সম্ভাবনা রহিয়াছে রাষ্ট্র ব্যাপক অনুসন্ধান, পরীক্ষা ও খননকার্য্যের মাধ্যমে তাহা আহরণের সর্বপ্রকার ব্যবস্থা অবলম্বন করিবে। (৮) নদী-নালা, খাল-হাওর-বিলের দেশ পূর্ব বাংলার মৎস্য শিল্প গড়িয়া তুলিবার জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিশেষভাবে যত্নবান হইবে। এই জন্য মাছ ধরা ও মাছ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য চলিতেছে তাহা দূর করা হইবে এবং ইহাকে পূর্ব বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও লাভজনক শিল্পে পরিণত করার জন্য রাষ্ট্র নিম্নোক্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করিবেঃ (ক) মৎস্য চাষের বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা অবলম্বন করা হইবে। কৃত্রিম উপায়ে মৎষ্য প্রজননের ব্যবস্থা করা | (খ) নদী-নালা, খাল-বিল ও হাওরে জেলেদের মাছ ধরার জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ হইতে মাছ ধরার যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী স্বল্পমূল্যে তাহদের সরবরাহ করা হইবে। “জাল যার জল তার” এই নীতির ভিত্তিতে ইজারাদারী প্রথা ও জলকর গ্রহণ প্রত্যাহার করা হইবে। (গ) বড় বড় নদী, গভীর সমুদ্রে রাষ্ট্র নিজেই সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা মাছ ধরার ব্যবস্থা করিবে। (ঘ) মৎস্য সংরক্ষণের জন্য কোলড ষ্টোরেজ ও দেশী-বিদেশী বাজারে চালান দিবার জন্য পরিবহনের ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে। (ঙ) আধুনিক পদ্ধতিতে মৎস্য যাহাতে বিদেশে রপ্তানী হইতে পারে তাহার উপর রাষ্ট্র বিশেষ দৃষ্টি প্রদান করিবে ও মৎস্য রপ্তানী ব্যবসাকে রাষ্ট্রায়ত্ত করা হইবে। (৯) বিদ্যুৎ শক্তির উন্নয়নকল্পে আণবিক প্রকল্প নির্মাণ করা হইবে। (১০) জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও গ্যাস শিল্পের উন্নয়ন করা হইবে। (১১) সমস্ত শহর ও গ্রামঞ্চলকে বৈদ্যুতিকরণ করা হইবে। শ্রমনীতিঃ শ্রেণী সংগ্রামের বিকাশের এবং ভবিষ্যত সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার নেতা হিসাবে গড়িয়া তুলিবার লক্ষ্যকে সম্মুখে রাখিয়া শ্রমনীতি নির্ধারিত হইবে। ইহার রুপরেখা হইবেঃ