পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

464 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড (১৮) সমাজে সাম্প্রদায়িক মনোভাব সৃষ্টি করার জন্য যাহারা প্রচেষ্টা চালাইবে রাষ্ট্র কঠোর হস্তে তাহাদের দমন করিবে৷ (১৯) সাহিত্য ও শিল্পের সৃজনশীল ভূমিকা গ্রহণ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে প্রতিটি নাগরিককে অবাধ সুযোগ করা হইবে। (২০) বুদ্ধিজীবী, কবি, লেখক ও শিল্পীদের সমাজে বিশেষ মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করা হইবে এবং তাহারা যাহাতে নিরুদ্বেগে তাঁহাদের সৃজনশীল কাজ অব্যাহতভাবে চালাইয়া যাইতে পারেন, রাষ্ট্র তাহার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করিবে৷ (২১) মার্কসবাদ, লেনিনবাদ ও তাহার সর্বোচ্চরুপ মাও সে-তুঙের চিন্তাধারার প্রচার ও প্রসারের সুযোগ প্রদান ও জনগণকে তাদের শিক্ষায় শিক্ষিত করিয়া তুলিবার জন্য রাষ্ট্র উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা গ্রহণ করিবে। রাষ্ট্র মার্কসবাদকে বিকৃতকারী সংশোধনবাদী নয়া সংশোধনবাদ ভাবাদর্শে পূর্ণ শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিষিদ্ধ করিবে। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাঃ (১) স্বাস্থ্য বিভাগের উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য রক্ষার ও প্রতিষেধক ব্যবস্থা গ্রহণের আন্দোলন গড়িয়া তোলা, জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষা করা, মহামারী নিরোধের স্থায়ী ও কার্যকরী ব্যবস্থা অবলম্বন করা হইবে। (২) জাতি, ধর্ম, বর্ণ পেশা নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের একই ধরনের চিকিৎসার সুযোগপ্রাপ্তির প্রশ্নে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় যে বিরাট ব্যবধান রহিয়াছে, তাহা বিলুপ্ত করা হইবে। (৩) “জনগণের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা ও সর্বপ্রকার ঔষধ সরবরাহ” এই লক্ষ্যকে সম্মুখে রাখিয়া প্রতিটি ইউনিয়নে অন্ততঃপক্ষে একটি সর্বাধুনিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদিসহ হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হইবে। (৪) ব্যক্তিগত মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ঔষধ শিল্প ও ঔষধ ব্যবসায় রাষ্ট্রায়ত্ত করা হইবে অর্থাৎ রাষ্ট্র ব্যতীত অন্য কেহ ঔষধ ব্যবসা করিতে পারিবে না। (৫) ঔষধ প্রস্তুতের জন্য দেশজ গাছ-গাছড়া বিদেশে রপ্তানী না করিয়া উহার উপাদান হইতে ঔষধ প্রস্তুত করার ব্যাপক কার্য চালাইয়া যাইতে হইবে এবং উহার মাধ্যমে পূর্ব বাংলার ঔষধ শিল্প গড়িয়া তুলিবার জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হইবে। (৬) পূর্ব বাংলায় যে ঐতিহ্যবাহী কবিরাজি, হেকিমী ও আয়ুৰ্বেদীয় চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত রহিয়াছে, ব্যাপক গবেষণা ও পরীক্ষা চালাইয়া তাহাকে সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে গড়িয়া তুলিবার জন্য রাষ্ট্র গ্রহণ করিবে। (৭) শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া আন্দোলনের বিকাশ সাধন করা হইবে। (৮) শহরে ও গ্রামে সর্বত্র বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও সুষ্ঠ পয়ঃপ্রণালীর ব্যবস্থা করা হইবে। সামাজিক নিরাপত্তাঃ সামাজিক নিরাপত্তা: (১) রাষ্ট্র অনাথ, বৃদ্ধ অক্ষম ব্যক্তিদের বিশেষ যত্ন গ্রহণ করবে। বৃদ্ধদের জন্য ভাতা, প্রত্যেক অন্ধ, আতুর ও অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য রাষ্ট্র নিজ খরচে তাহদের নিজেদের বাড়ীতে, কোন স্বাস্থ্যনিবাস বা ক্লিনিক থাকার ব্যবস্থা করবে। অন্ধ ও আঁতুরদের বৃত্তিমূলক শিক্ষার দৃষ্টি দেওয়া হইবে।