পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

479 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ বৈষম্য সম্পর্কে পিয়াসন কমিশন রিপোট দৈনিক পূর্বদেশ ১৬ নভেম্বর, ১৯৬৯ পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন-ব্যয় ও উৎপাদন বৃদ্ধির হার হাসের সুপারিশ (পূর্বদেশ রিপোর্ট) চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে “পাকিস্তানে দুই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য অবিলম্বে পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন পরিকল্পনার ব্যয় এবং সামগ্রিকভাবে উন্নয়নের হার হ্রাস করতে হবে।” বৈষম্য দূর করার জন্য কমিশন পূর্ব পাকিস্তানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক একটি সুষ্ঠু ও সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তাতে অধিক অর্থ ও বিশেষজ্ঞ নিয়োগের সুপারিশ করেছেন। অন্যথায় অবহেলার মারাত্মক বিপদ ডেকে আনবে বলে রিপোর্টে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে। পিয়ার্সন কমিশনের রিপোর্ট নামে পরিচিত এই আন্তর্জাতিক রিপোর্টটি সম্প্রতি প্রকাশত হয়েছে এবং পাকিস্তানে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। পিয়ার্সন কমিশনের রিপোর্টে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত পাকিস্তানের উন্নয়ন এবং উন্নয়ন সমস্যা সম্পর্কে সংক্ষেপে নানা তথ্য প্রদান করা হয়েছে এবং দেশের দু'অংশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। পাকিস্তানের উন্নয়ন পরিকল্পনায় আঞ্চলিক বৈষম্য সম্পর্কে কমিশনের সতর্ক ও রক্ষণশীল মতামতও অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অনেকের কাছে চাঞ্চল্যকর মনে হয়েছে। শুধু রিপোর্ট স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছেঃ “রাজনৈতিক অধিকারের ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের অংশীদার হওয়া অনেকটা সান্তনা লাভের মত। এছাড়া পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রমবর্ধিষ্ণু অর্থনৈতিক বৈষম্য আঞ্চলিক অসন্তোষকে আরো তীব্র করে তুলেছে।” (পৃষ্টা ৩০৫)। পিয়ার্সন কমিশনের রিপোর্টে প্রদত্ত তথ্যাদি পাকিস্তানের সরকারী হিসাবপত্র থেকেই সংগৃহীত এবং দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যার জন্য মুখ্যতঃ আইয়ুব শাসনামলেও সরকারী ভাষ্যের উপরই নির্ভর করা হয়েছে। এসত্ত্বেও কৃষি ও শিল্প অর্থনীতির ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে দ্রুত বর্ধিষ্ণু বৈষম্য, বৈদেশিক ঋণ ও সাহায্যের টাকার ন্যায্য ভাগ পাওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের দুর্ভাগ্যের কথা কমিশন গোপন করেননি। পিয়ার্সন কমিশন নামে পরিচিত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কমিশনের রিপোর্ট পাকিস্তান সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ “দেশটির আভ্যন্তরীণ সমস্যার দিকে তাকালে দেখা যাবে, দু'অঞ্চলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যই রাজনৈতিক বিরোধ ও স্থিতিহীনতার কারণ হয়ে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদ বৃদ্ধির সরকারী প্রচেষ্টা, দক্ষতা এবং সম্পদের সদ্ব্যবহার করার সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থনৈতিক কাঠামোর অভাবে