পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

528 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ আইনগত কাঠামো আদেশের প্রতিবাদ ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন ১২ এপ্রিল, ১৯৭০ সার্বভৌম পালামেন্টের দাবী সার্বভৌম পার্লামেন্টের দাবীতে এবং ইয়াহিয়ার নির্বাচনী আইনগত কাঠামো ও শাসনতন্ত্রের মূলনীতি ঘোষণার প্রতিবাদেপূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে (মতিয়া গ্রুপ) ১৩ই এপ্রিল, সোমবার, প্রতিবাদ দিবস’ পালন করুন সংগ্রামী ভাই ও বোনেরা, বিগত গণ-অভু্যত্থানের ফলে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকারের অবসান ঘটিয়েছে। সারা দেশের মানুষ গভীরভাবে আশা করিয়াছিল যে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে যে জাতীয় পরিষদ গঠিত হইতে যাইতেছে ঐ পরিষদে জনগণের আশা-আকাঙ্খার ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে একটি শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করিতে পরিবেন। এবং এইভাবে দেশের শাসনতান্ত্রিক সংকট ও সমস্যার প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাধান হইবে। সামরিক প্রধান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় আসিয়া একটি সার্বভৌম জাতীয় পরিষদের মাধ্যমে নির্বাচিত জনগণপ্রতিনিধিগণ কর্তৃক শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকরণের প্রতিশ্রুতি প্রদান করিয়াছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যে আইনগত কাঠামোর আদেশ ঘোষণা করিয়া দেশবাসীর আশা-আকাঙ্খার বিরুদ্ধে এক রুঢ় আঘাত হানিয়াছেন। “কর্তার ইচ্ছায় কৰ্ম” করণের তথাকথিত পরিষদে পরিণত করা হইয়াছে। “কর্তার ইচ্ছায় কর্ম’ করিলে এই পরিষদ কর্তৃক শাসনতন্ত্র গৃহীত হইলেও উহাকে বাতিল করিবার নিরংকুশ ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতেই রাখিবার পাকাপাকি আইনও প্রণয়ন করা হইয়াছে। শাসনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য নির্ধারিত পরিষদের সার্বভৌমত্ব বলিতে কিছুই নাই। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ কর্তৃক জনগণের আশা-আকাঙ্খার তথা ১১-দফা ও ৬দফা দাবীগুলোর ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র প্রণয়নের সকল স্বাধীনতা ও অধিকার হরণ করা হইয়াছে। এই অবস্থায় জনগণের আকাঙ্খা অনুযায়ী ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অবাধ গণতন্ত্র, পূর্ব বাংলাসহ সকল ভাষা-ভাষী মানুষের স্বায়ত্তশাসন, মৌলিক অধিকার প্রভৃতির স্বীকৃতি প্রদানকারী কোন শাসনই জনগণের দ্বারা রচনা করা সম্ভব হইবে না। ফলে জনগণের আশা-আকাঙ্খা অনুযায়ী দেশের শাসনতান্ত্রিক সংকট সমাধান করা সম্ভব হইবে না। শুধু তাহাই নহে, নির্বাচনের আইনগত কাঠামো আদেশ দ্বারা দেশের ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্রের প্রায় সকল মৌলিক প্রশ্নই প্রেসিডেন্ট স্বয়ং নির্ধারিত করিয়া দিয়াছেন। শাসনতন্ত্রের মূলনীতি সম্পর্কে যে পাঁচটি ধারা আইন হিসাবে বাধ্যতামূলকভাবে পালনের নির্দেশ ঘোষিত হইয়াছে স্বায়ত্তশাসন সম্পর্কে ব্যাখ্যা করিতে গিয়া কেন্দ্র ও প্রদেশসমূহের মধ্যে বিষয় বন্টনের যে নীতি নির্ধারিত হইয়াছে তাহতে ৬-দফা ও ১১-দফা কার্যকরী হইয়াছে। এইভাবে প্রত্যক্ষ ভোটের অধিকার স্বীকার করা হইলেও মহিলাদের সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে পুরাতন আইয়ুবী ব্যবস্থাই চালু করা হইয়াছে।এইভাবে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পাকিস্তানে আরেকটি শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করিয় উহা গণতন্ত্রের নামে চাপাইয়া দেওয়ার ব্যবস্থা এবং উহাতে প্রকৃতপক্ষে জনগণ কর্তৃক বাতিলকৃত ১৯৫৬ সালের প্রতিক্রিয়াশীল শাসনতন্ত্রের মূলনীতিগুলো চাপাইবার ব্যবস্থা হইয়াছে এবং এইভাবে সরকার এককভাবে দেশবাসীর উপর শাসনতন্ত্র চাপাইয়া