পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

531 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ বন্দী মুক্তি ও দাবী দিবস ন্যাপ (ভাষানী), ছাত্র ইউনিয়ন ও ১৭ এপ্রিল, ১৯৭০ শ্রমিক ফেডারেশন ১৯শে এপ্রিল, রবিবার “বন্দী মুক্তি ও দাবী দিবস’ উপলক্ষে হরতাল \G জনসভা স্থানঃ পল্টন ময়দান, সময়ঃ বিকাল ৩টা প্রধান বক্তাঃ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ভাইসব, দেশ আজ এক চরম অর্থনৈতিক ও খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। ছাঁটাই, লক-আউট ও ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের চাপে মেহনতী জনতার বিভিন্ন অংশ মজুরী ও বেতন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য ন্যায়সংগত দাবী-দাওয়া আদায়ের জন্য ক্রমেই ধর্মঘটের পথ বাছিয়া লইতে বাধ্য হইতেছেন। অন্যদিকে, খাদ্যের উচ্চমূল্য এবং ক্রয়ক্ষমতার অভাব তৎসহ খাজনা-ট্যাক্সের জুলুম গ্রামীন জন-জীবনকে করিয়া তুলিয়াছে দুৰ্বিসহ। আমাদের দেশের তরুণ শিক্ষার্থী সমাজও তাহাদের উপর চাপাইয়া দেওয়া অগণতান্ত্রিক শিক্ষানীতি মানিয়া লইতে অস্বীকৃতি জানাইয়াছে। আর জনগন বিভিন্ন অংশের ন্যায়সংগত দাবী-দাওয়া লইয়া সংগ্রাম করার জন্য মশিহুর রহমান, আনোয়ার জাহিদ, মনি সিংঙ, ছাত্র নেতা মাহবুবউল্লাহ, শ্রমিক নেতা, লুতফুল হক মজুমদারসহ বহুসংখ্যক রাজনৈতিক, ট্রেড ইউনিয়ন, কৃষক ও ছাত্রনেতা জেলখানায় বন্দি। শ্রমিক নেতা কাজী জাফর আহমদ, রাশেদ খান মেনন, ছাত্রনেতা জামাল হায়দারসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার পরওয়ানা এবং শ্রমিক নেতা আবুল বাশার, আবদুল মালেকসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে হুলিয়া ঝুলিতেছে। এই অবস্থায় মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আগামী ১৯শে এপ্রিল, রবিবার সারা দেশব্যাপী “বন্দীমুক্তি ও দাবী দিবস’ পালনের আহবান জানাইয়াছেন। এই দিবসের দাবীগুলো হইতেছেঃ (১) আটক ও সাজা প্রাপ্ত সকল রাজনৈতিক, ট্রেড ইউনিয়ন, কৃষক ও ছাত্র নেতার মুক্তি চাই, গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ও হুলিয়া প্রত্যাহার কর; সাম্প্রতিক ধর্মঘটকালে ধৃত সকল বাস-শ্রমিকের মুক্তি চাই। (২) ২০ টাকা মণ দরে চাল ও ১০ টাকা মণ দরে গম চাই; খাজনা-ট্যাক্সের দায়ে সার্টিফিকেট জারী করা চলবে না; টেষ্ট রিলিফের কাজ চাই। (৩) পূর্ব পাকিস্তানে ৫ একর এবং পশ্চিম পাকিস্তানে ১২.৫ একর পর্যন্ত জমির মালিকদেও খাজনা মওকুফ কর, খাস ও সরকারী জমি গরীব ও ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিলি কর, পেশাগত ট্যাক্স মওকুফ কর, পানির উপর কর মওকুফ কর, বর্গাদার উচ্ছেদ করা চলবে না। (৪) মিল মালিকদের লক-আউটের অধিকার দেওয়া চলবে না, ধর্মঘটের অধিকারসহ শ্রমিকদের যৌথ দর কষাকষির অধিকার কায়েম কর, শ্রমিকের নিম্নতম মজুরি মাসিক দুইশত টাকা নির্ধারণ কর।