পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

590 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড কোন নেতা নয়, কোন দলপতি নয়, আপনারা-বাংলার বিপ্লবী, ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক ও সর্বহারা মানুষ রাতের অন্ধকারে কারফিউ ভেঙে মনু মিয়া, আসাদ, মতিয়ুর, রুস্তম, জহুর, জোহা, আনোয়ারের মতো ংলাদেশের দামাল ছেলেমেয়েরা প্রাণ দিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলে আমাকে তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কবল থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিনের কথা আমি ভুলে যাইনি, জীবনে কোনদিন ভুলবো না, ভুলতে পারবো না। জীবনে আমি যদি একলাও হয়ে যাই, মিথ্যা আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলার মত আবার যদি মৃত্যুর পরোয়ানা আমার সামনে এসে দাঁড়ায়, তাহলেও আমি শহীদের পবিত্র রক্তের সাথে বেঈমানী করবো না। আপনারা যে ভালবাসা আমার প্রতি আজও অক্ষুন্ন রেখেছেন, জীবনে যদি কোনদিন প্রয়োজন হয় তবে আমার রক্ত দিয়ে হলেও আপনাদের এ ভালোবাসার ঋণ পরিশোধ করবো। প্রিয় ভাইবোনেরা, ংলার যে জননী শিশুকে দুধ দিতে দিতে গুলীবিদ্ধ হয়ে তেজগাঁর নাখালপাড়ায় মারা গেল, বাংলার যে শিক্ষক অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে ঢলে পড়লো, বাঙলার যে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তুলতে গিয়ে জীবন দিলো, বাংলার যে ছাত্র স্বাধিকার অর্জনের সংগ্রামে রাজপথে রাইফেলের সামনে বুক পেতে দিলো, বাংলার যে সৈনিক কুর্মিটোলার বন্দী শিবিরে অসহায় অবস্থায় গুলীবিদ্ধ হয়ে শহীদ হলো, বাংলার যে কৃষক ধানক্ষেতের আলের পাশে প্রাণ হারালো-তাদের বিদেহী অমর আত্মা বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে ঘরে -ঘরে ঘুরে ফিরছে এবং অন্যায় অত্যাচারের প্রতিকার দাবী করছে। রক্ত দিয়ে, প্রাণ দিয়ে যে আন্দোলন তাঁরা গড়ে তুলেছিলেন, সে আন্দোলন ৬-দফা ও ১১-দফার। আমি তাঁদেরই ভাই। আমি জানি ৬-দফা ও ১১-দফা বাস্তবায়নের পরই তাদের বিদেহী আত্মা শান্তি পাবে। কাজেই আপনারা আওয়ামী লীগের প্রতিটি প্রার্থীকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি আসনে জয়যুক্ত করে আসেন। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, যে জালেমদের ক্ষুরধার নখদন্ত জননী বঙ্গভূমির বক্ষ বিদীর্ণ করে তার হাজারো সন্তানকে কেড়ে শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। ন্যায় ও সত্যের সংগ্রামে নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন। জয় বাংলা । পাকিস্তান জিন্দাবাদ । নিবেদকআপনাদেরই শেখ মুজিবুর রহমান। DDDuDDDuDDDDDDDDDDDDDDDDDDDDDuDDDDDDDD থেকে মুদ্রিত।