পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

697 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড “আপোষের বাণী আগুনে জ্বালীয়ে দাও" লেখক প্রতিরোধ’। দ্বিতীয় সংখ্যাঃ ৬ই । ৬ মার্চ, ১৯৭১ শিল্পীদের আহবান মার্চ, ১৯৭১ ; (স্বাধীন সার্বভৌম শোষণমুক্ত বাংলাদেশের জাগ্রত লেখক শিল্পীদের মুখপত্র) আপোষের বাণী আগুণে জ্বালীয়ে দাও ংলার মাটি আরো একবার কুচক্ৰী শাসক মহলের নগ্ন, বর্বর হামলায় লাল হয়ে গেল। আরো একবার শত শত মা হারালো তার প্রাণপ্রিয় সন্তান। স্ত্রী হারালো তার স্বামী । ভাই হারালো তার দোসর। আর এই যেন বাংলার ভাগ্যলিপি। যেন বাঙ্গালী কেবল জন্ম গ্রহণ করেছে। তার বুকের রক্ত দিয়ে শাসক গোষ্ঠীর সুরম্য ইমারত গড়ে তুলতে। আর তারই সাক্ষ্য গত পয়লা মার্চের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ঘোষণায় সুস্পষ্ট। তিনি তার ঘোষণায় একটি গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য জাতীয় পরিষদের সংখ্যালঘু নেতা আইয়ুবের পাচাটা দালাল জুলফিকার আলী ভূট্টোর অন্যায় আবদারকে গ্রহণ করলেন শ্রদ্ধার সাথে। আর সেই সাথে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতামত, যার সাথে এ দেশের সাত কোটি বাঙ্গালীর স্বার্থ জড়িত। সাথে সাথে আজ এ কথাও প্রমাণিত হয়ে গেছে। বাংলার স্বাধীনতা ব্যতিরেকে এ দেশের সাত কোটি জনতার ভাগ্য এমনিভাবেই চিরদিন লাঞ্ছিত হতে থাকবে। বাংলার সচেতন জনতা আজ বুঝে ফেলেছে স্বাধীনতাই একমাত্র মুক্তির পথ। তাই গত পয়লা মার্চ প্রেসিডেন্টের ঘোষণা শোনার সাথে সাথে কোটি কোটি বাঙ্গালী নেমে এসেছে খোলা রাজপথে। অফিস, আদালত, ঘর, বাড়ী ছেড়ে মুক্তিপাগল জনতা তার ভাগ্যের পরীক্ষা দিতে নেমেছে আর তাকেই রুখে দাঁড়াবার জন্যে ক্ষমতাগৃধনু রক্তপিপাসু পাঞ্জাবী শাসক গোষ্ঠী আরেকবার বাঙলার মাটিতে তার শেষ চাল চেলেছে গোল টেবিলের গোলক ধাঁধার ভেলকিবাজি দেখিয়ে। আশ্রয় নিয়ে গণঅভু্যুত্থানকে দমিয়ে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশের জাগ্রত শিল্পী-সাহিত্যিকদের জাগ্রত বিবেক থেকে আজ এ ঘোষনাই করছি, বাঙালী আর মেঘাচ্ছন্ন থাকবে না। শোষণহীন, রোদনহীন, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ কায়েম করে বাঙালী আজ নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করবেই করবে। সাথে সাথে আমরা বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি হুশিয়ারী উচ্চারণ করছি যে, দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আমরা আপনাদের রূপ দেখতে চাইনে বাংলার স্বাধীনতার বিপক্ষ যে কোনরূপ প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে জনগণের হাত থেকে আপনাদের নিস্তার থাকবে না। বাঙলার জয় হোক। স্বাধীন সার্বভৌম শোষনমুক্ত বাংলাদেশজিন্দাবাদ। জনগণের রায়-জিন্দাবাদ। শহীদের রক্ত-বৃথা যেতে দেব না। শেষ শুদ্ধের প্রস্তাত বাংলায় আজ ৬ই মার্চ দুপুর একটা পাঁচ মিনিটের সময় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া তথাকথিত পাকিস্তান জাতির উদ্দেশে এক বেতার ভাষণ প্রদান করেছেন। তিনি এই ভাষণে বাংলাদেশের সাত কোটি স্বাধীনতাকামী জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ন্যস্কারজনকভাবে দসু্যুবৃত্তির সাথে তুলনা করে পাঞ্জাবী সাম্রাজ্যবাদী সামরিক দসু্যদের গ্লানি মোচনের হঠকরিতা করেছেন। আগামী পঁচিশে মার্চ তথাকথিত জাতীয় পরিষদের বৈঠক ডেকে ংলা ও বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রাম বানচালের নতুন টোপও ফেলেছেন তিনি। পশ্চিমা নেতৃবৃন্দের মনোরঞ্জনের জন্য নতুন