পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

713 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিষ্ট পার্টি ৯ মার্চ, ১৯৭১ রাখার আহবান শক্ৰবাহিনীকে মোকাবেলায় প্রস্তত হউন গণস্বার্থে স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখুন ভাইসব, বাংলাদেশের জনগণ আজ গণতন্ত্র ও নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এখানে একটা পৃথক ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র কায়েম করিতে বদ্ধপরিকর হইয়াছেন ও এই জন্য এক গৌরবময় সংগ্রাম চালাইতেছেন। এই সংগ্রামে জনগণ সশস্ত্র সেনাবাহিনীকে অসম সাহসিকতার সহিত মোকাবেলা করিতেছেন এবং নিজেদের আশা-আকাঙ্খা পূরণের জন্য বুকের রক্ত ঢালিতেও দ্বিধা করিতেছেন না। কমিউনিষ্ট পার্টি পূর্ব বাংলার সংগ্রামী বীর জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাইতেছে। পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্টরা দীর্ঘকাল হইততেই বাঙালীসহ পাকিস্তানের সকল ভাষাভাষী জাতির বিচ্ছিন্ন হইয়া পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অধিকার তথা আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার দাবী করিয়া আসিতেছে। পূর্ব বাংলার জনগণ আজ অনেক ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাতের ভিতর দিয়া পূর্ব বাংলায় একটি পৃথক ও স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের যে দাবী উত্থাপন করিয়াছেন, আমরা উহাকে ন্যায্য মনে করি, তাই পূর্ব বাংলার জনগণের বর্তমান সংগ্রামে আমরাও সর্বশক্তি লইয়া শরিক হইয়াছি। জনগণের দুশমন কাহারা? বাংলাদেশে পৃথক ও স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের এই সংগ্রামে জনগণের দুশমন হইল পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠী ও বর্তমান সামরিক সরকার। পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠী বিদেশী সাম্রাজ্যবাদ বিশেষতঃ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বড় বড় জোতদার-জায়গিরদার-মহাজন ও একচেটিয়া পুঁজির মালিক ২২টি পরিবারের কায়েমী স্বার্থ রক্ষার জন্য গত ২৩ বৎসর বাংলাদেশের শ্রমিক-কৃষক, মধ্যবিত্ত-ছাত্র প্রভৃতি জনগণকে শোষণ এবং নিপীড়ন করিয়াছেন সাম্রাজ্যবাদ, সমাজবাদ ও একচেটিয়া পুঁজির স্বার্থে শাসকগোষ্ঠী পূর্ব বাংলার সমগ্র জনগণকে জাতীয় অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হইতে আগাগোড়া বঞ্চিত করিয়াছে। আজও উহাদের স্বার্থেই ইয়াহিয়া সরকার প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীসমূহের নয়া নেতা ভুট্টোর সহিত ষড়যন্ত্রের লিপ্ত হইয়া জাতীয পরিষদের অধিবেশন নস্যাৎ করে ও গণতন্ত্র, জাতীয় অধিকার এবং শাসন ক্ষমতা হস্তান্তরের বিরুদ্ধে লিপ্ত রহিয়াছে এবং সেনাবাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে নিয়োগ করিয়াছে। সেনাবাহিনী পূর্ব বাংলায় ইতিমধ্যেই গণহত্যা ঘটাইয়াছে ও রক্তের বন্যায় পূর্ব বাংলায় জনতার সংগ্রামকে স্তব্ধ করিবার জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তত হইয়া রহিয়াছে। তাই বাংলাদেশের দুশমন হইল সাম্রাজ্যবাদ-সমান্তবাদ ও একচেটিয়া পুঁজির স্বার্থ রক্ষাকারী সরকার ও উহাদের সেনাবাহিনী। পশ্চিম পাকিস্তানের পাঠান, বেলুচ, সিন্ধি, পাঞ্জাবী জাতিসমুহের মেহনতি জনতা পূর্ব বাংলার জনগণের শত্রু নয়। বরং পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের গণতন্ত্র ও বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর জাতীয় অধিকারকেও পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠীই নস্যাৎ করিয়া রাখিয়াছে। পূর্ব বাংলার অবাঙালী উর্দু ভাষাভাষী মেহনতি জনগণকেও ঐ শাসকগোষ্ঠী শোষণ ও নিপীড়নে করিতেছে। তাই ঐ দুশমনদের পরাজিত