পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

719 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ অসহযোগ আন্দোল ত্যাগ করে গেরিলা পূর্ব পাকিস্তানের ৯ মার্চ, ১৯৭১ লড়াইয়ে আহবান জানিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিষ্ট পার্টি কমিউনিষ্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) (মার্কসবাগী-লেনিনবাদী) নল থেকে রাজনৈতিক ক্ষমতা বেরিয়ে আসে-মাও সেতুং পূর্ব বাঙলার মুক্তির জন্য শান্তিপূর্ণ অসহযোগ অস্ত্র হাতে লড়াই করুন শত শত মানুষের হত্যার বদলা নিন গ্রামে কৃষকদের গেরিলা লড়াই-এ সংগঠিত করুন পূর্ব বাংলার মেহনতি গরীব ভাইসব, গত কয়েক দিনে শাসকগোষ্ঠীর পুশিল-মিলিটারী পূর্ব বাংলার শত শত মেহনতি মানুষকে হত্যা করেছে। আরো হত্যা করার নতুন হুমকি দিয়েছে। অথচ, হত্যাকারীদের একটি চুলও খসেনি। অতীতেও তারা জনতার উপর হত্যালীলা চালিয়েছে। মরেছে, মার খেয়েছে শুধু গরীব জনসাধারণই। কিন্তু গরীব লোকের উপর শোষণ কমেনি, অত্যাচার কমেনি বরং বেড়েই চলেছে। শাসকগোষ্ঠীর হত্যালীলা ও শোষণের বিরুদ্ধে আজ যখন সারা পূর্ব বাঙলায় বিক্ষোভের আগুন দাউ দাউ করে জুলছে, পূর্ব বাঙলার পূর্ণ মুক্তির জন্য মেহনতি মানুষ পাগল হয়ে উঠেছে, তখন তথাকথিত বাঙলার দরদি নেতারা অস্ত্ৰহাতে লড়াই শুরু করার আহবান না দিয়ে বিপ্লবী জনগণকে এত হত্যালীলার পরও শান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দোলনের নির্দেশ দিচ্ছে। এই ধোঁকাবাজ নেতারা গরীব জনতাকে আন্দোলনে নামিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে। মন্ত্রী হয়েছে, ধনী হয়েছে। যখনি জনতা অস্ত্র হাতে নিয়ে শোষক শ্রেণীকে খতম করার চেষ্টা করেছে, তখনি তারা শান্তির কথা বলে জনতাকে লড়াই থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তারপর নিজেরা ক্ষমতার হালুয়া-রুটির ভাগাভাগি করেছে। ফলে, গরীব জনতা জান দিয়েছে, কিন্তু পায়নি কিছুই। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী এবং পূর্ব বাংলার তথাকথিত দরদি বিশ্বাসঘাতক নেতাদের পরামর্শদাতা হলো কুখ্যাত নরপশু মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফারল্যান্ড। এই নরঘাতক শুয়োরের বাচ্চাটি চকান্ত করে ইন্দোনেশিয়ার লক্ষ লক্ষ নিরীহ গরীব মানুষকে হত্যা করেছে। গত কিছুদিন যাবৎ ঘন ঘন পূর্ব বাংলায় এসে এখানেও ব্যাপক হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। বিশ্বের মেহনতি মানুষের বড় দুশমন এই হিংস্র জানোয়ারদের সাথে যেসব তথাকথিত ংলার দরদি নেতারা বৈঠক করে, ষড়যন্ত্র করে এবং লাঞ্ছিত-শোষিত মেহনতি মানুষকে শান্ত থাকতে উপদেশ দেয়, তারা গরীব কৃষক-শ্রমিকদের বন্ধু হতে পারে না। তারা শোষকগোষ্ঠী ও সাম্রাজ্যবাদের পা চাটা কুকুর। এই দালালদের চিনে নিন। এই শয়তানদের শান্তির আবেদনে ঝাঁটা মেরে হত্যার বদলা নেয়া শুরু করুন। অস্ত্র হাতে নিয়ে ছোট দলে (৪/৫ জন) বিভক্ত হয়ে অতর্কিতে দেশী-বিদেশী সকল শোষকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ুন। শহরের বস্তিতে বস্তিতে, পাড়ায় পাড়ায়, প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে গেরিলা লড়াই (গোপন যুদ্ধ) চালিয়ে অত্যাচারী জোতদারী মহাজন ও দালালদের খতম করুন। গণবাহিনী গড়ে তুলুন। গ্রামে গ্রামে গরীবের রাজতু কায়েম করুন।