পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

724 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড তিনি বলেন, পূর্ব বাংলা স্বাধীন হবেই। এই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য এখন হতে প্রস্তুতি নিতে হবে। এ ব্যাপারে বাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। চরিত্র গঠন গরতে হবে। বাংলাদেশ হতে একটি কানাকড়িও যেন বাইরে পাচার না হয় তৎপ্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য তিনি আহবান জানান। মওলানা ভাসানী বাঙালী, অবাঙালী, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ইত্যাদি ভেদাভেদ ভুলে সকলকে মিলেমিশে থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন, বিহারীদের আমি বড় ভালবাসি। ওরা অত্যাচারিত হয়ে এদেশে এসেচে। ওরা পশ্চিম পাকিস্তানী নয়, হিন্দুস্তানের অধিবাসী ছিল। তাদের ওপর বহু নির্যাতন হয়েছে। তিনি বলেন, এদের সকলের সম্পত্তি রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। কারণ এগুলো আমাদের দেশের সম্পদ। সভার শুরুতেই গণআন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাঁদের জন্য মওলানা ভাসানীর ইমামতীতে গায়েবী জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আতাউর রহমান পল্টন ময়দানের জনসভায় বক্তৃতাকালে জাতীয় লীগ প্রধান জনাব আতাউর রহমান খান বিলম্ব না করে ংলায় জাতীয় সরকার ঘোষণা করার জন্যে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আহবান জানান। জনাব আতাউর রহমান খান বলেন, আজ আর আমাদের মধ্যে কোন কোন্দল নেই। বাংলার কৃষকশ্রমিক, ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বাঙালী জজ, সিএসপি ও সরকারী কর্মচারীরাও আজ জনগণের সার্থে ঐক্যবদ্ধ। তাঁরা রক্ত দিচ্ছেন এবং প্রয়োজন হলে আরো রক্ত দেবেন। তাই এই মুহুর্তে শেখ মুজিব জাতীয় সরকার গঠন করলে সবাই তাঁর হুকুম মেনে নেবে। আজকের এই মুহুর্ত আর বারবার ফিরে আসবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। জাতীয় লীগ নেতা বলেন, বাংলার আজ মহা দুদিন। বাঙালী জাতির সামনে আজ চরম পরীক্ষা। বাঙালী এখন জীবন্মত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবে স্বাধীনতার যে ওয়াদা করা হয়েছিল তা পূরণ করা হয়নি। বাঙালীদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা শোসকদের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে জনাব আতাউর রহমান খান বলেন, তাঁরা বাঙালীদের শাসন ক্ষমতায় অংশিদারিতু করতে চায় না। শেরে বাংলা ও সোহরাওয়ার্দীকেও তারা বিশ্বাস করেনি। আজও সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁরা ক্ষমতা দিতে চাচ্ছে না। তাই একবার জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডেকে আবার তা বন্ধ করে দেয় এবং পরে আবার তারিখ ঘোষণা করে। শেখ হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের জাল ভেদ করতে হবে। কাজেই আপনি পরিষদের কথা ভুলে যান এবং জাতীয় সরকার ঘোষণা করুন। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বাঙালী জাতি আজ মৃত্যুকে উপেক্ষা করছে। বাংলাদেশের ৭ কোটি মুক্তিপাগল মানুষকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। ইতিপূর্বে জনসভার প্রস্তাব পাঠকালে এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় ন্যাপ সম্পাদক জনাব মশিহুর রহমান বলেন, আজ রাজনৈতিক কোন্দলের দিন নয়। ন্যাপ কোন্দলে বিশ্বাস করে না। তাই আজ আমরা ঐকবদ্ধ।