পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

777 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন যে, আমি অনেক আগেই দাবী করেছি যে, আমাদের দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা পরিষদের অধিবেশনে বসবো না। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট পরিষদের অধিবেশণ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ মুজিব বলেন যে, আজ (মংগলবার) অথবা আগামীকাল প্রেসিডেন্টের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হতে পারে। তিনি আরও বলেন যে, ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাগণ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টাদের সাথে আলোচনা বৈঠকে মিলিত হবেন। শেখ মুজিব অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন যে, ইতিমধ্যে বাংলাদেশের গুরুতর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনগণের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। বেলা প্রায় ১১টার সময় সেনাবাহিনীর অভূতপূর্ব প্রহরার মধ্যে জনাব ভুট্টো তাঁর হোটেল থেকে প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। এর প্রায় পাঁচ মিনিট পরে শেখ মুজিব তাঁর নির্ধারিত বৈঠকে যোগদানের জন্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে উপস্থিত হন। প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে উপস্থিত জনতা জনাব ভুট্টোর প্রতি বিদ্রুপ ধ্বনি করেন এবং শেখ মুজিবকে অভিনন্দন জানান। পরে তাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে ভুট্টো-বিরোধী তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকনে। জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টো গতকাল সকাল ১০-৫০ মিনিটে তিনটি ট্রাক ও জীপ ভর্তি সৈন্যদের পাহারায় সামরিক বাহিনীর একটি কালো রং-এর শেদ্রোলেট ইম্পালা কারে করে প্রেসিডেন্ট বভনে যান। হোটেলে ফিরে আসেন একটা পনের মিনিটে। বেলা একটা পর্যন্ত হোটেলের সামনে তুমুল বিক্ষোব চলতে থাকায় পাকিস্তানী সৈন্যরা ভারী ও স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র জনতার দিকে তাক করে রাখে। প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে থেকে জনতাকে অপসারণের জন্য সেনাবাহিনী ভুট্টো-বিরোধী ধ্বনি উচ্চারণরত জনতার কাছাকাছি গিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। জনাব ভুট্টো বেলা একটা পনের মিনিটে আর্টিলারির জনৈক লেঃ কর্নেলের পরিচালনায় সেনাবাহিনীর প্রহরায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রবেশ করেন। ইউনিফর্মধারী সেনাবাহিনী ছাড়াও সাদা পোশাকে হোটেলে ইন্টারকন্টিনেন্টালের কর্মচারীরা গতকালও বাংলাদেশের নতুন পতাকা এবং কালো ব্যাজ লাগিয়ে হোটেলে কাজ করেন।