পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (নবম খণ্ড).pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : নবম খণ্ড

সশস্ত্র প্রতিরোধঃ ঢাকা

শিরোনাম সূত্র তারিখ
ঢাকার সশস্ত্র প্রতিরোধের বিবরণ বাংলা একাডেমীর দলিলপত্র ১৯৭১

ঢাকা সেনানিবাস ও শহরে যা ঘটেছিল

সাক্ষাৎকারঃ লেঃ কর্নেল আবু তাহের সালাহউদ্দীন[১]

 অহিংসা ও অসহযোগ আন্দোলনের সময় যে সকল ছোটখাটো গণ্ডগোল আরম্ভ হয় তাতে পাকিস্তান সরকার সম্পূর্ণরূপ আওয়ামী লীগের উপর দোষারোপ করে এবং এই দোষ দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সরকারের সহযোগিতায় ২৫শে মার্চ বাংলাদেশে সীমাহীন গণহত্যা চালায়। কিন্তু এই হত্যার পরিকল্পনা অসহযোগ আন্দোলনের পূর্ব থেকে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর ছিল। তার কারণস্বরূপ-

 যে কোন দেশে সেনাবাহিনীর সৈন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মোতায়েন করতে হলে তার মূল জায়গা অর্থাৎ যেখানে থেকে সৈন্য পাঠান হয় সেই জায়গায় প্রতিরক্ষার উপর প্রথম গুরুত্ব দিতে হয় এবং সেটা করতে পারলেই সেই জায়গা থেকে সরানোর আদেশ হয়। (এখানে উল্লেখ করা যায় যে, পাকিস্তান সামরিক সরকার ফেব্রুয়ারী, ১৯৭১ থেকেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে থাকে। তাতেই প্রমাণ হয় যে পাকিস্তানী সামরিক সরকরের সুপরিকল্পনা ছিল)।

 যেহেতু সীমান্ত এলাকায় শত্রুদেশের সৈন্যের সঙ্গে কোন ছোটখাট গোলাগুলি বিনিময় হয়নি বা দেশের জনসাধারণ ও খবরের কাগজে যুদ্ধের কোন হুমকির আভাসও পাওয়া যায়নি তথাপি পাকিস্তান সরকারের এরূপ সৈন্য মোতায়েনে (বিভিন্ন থানা পর্যায়ে) প্রমাণ হয় যে পাকিস্তানী সামরিক সরকার বাংলাদেশের জনসাধারণের উপর গণহত্যার পরিকল্পনা পূর্ব থেকেই করেছিল।

 ১লা মার্চ, ৭১ থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ জেনারেলগণ বিভিন্ন সময়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন ক্যাণ্টনমেণ্টে গিয়ে সম্মেলন করেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন:

(১) লেঃ জেঃ টিক্কা খান, কমাণ্ডার ইস্টার্ন কমাণ্ড। (২) মেঃ জেঃ খাদেম হোসেন রাজা, জি-ও-সি, ১৪ ডিভিশন। (৩) জেনারেল অবদুল হামিদ খান, চীফ অব আর্মি স্টাফ। (৪) লেঃ জেঃ এ, এ, কে, নিয়াজী, কোর কমাণ্ডার। (৫) মেঃ জেঃ আকবর হোসেন, ডাইরেক্ট জেনারেল, ইণ্টার সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্স। (৬) মেঃ জেঃ ওমর, চেয়ারম্যান, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিশন। (৭) মেঃ জেঃ কমর আলী মীর্জা, প্রাক্তন ডাইরেক্টর, মিলিটারী ইনটেলিজেন্স (তখন- ডাইরেক্টর সাপ্লাই এণ্ড ট্রান্সপোর্ট। (৮) মেঃ জেঃ মিঠ্ঠা খান, স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ কমাণ্ডার এণ্ড কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল। (৯) মেঃ জেঃ খোদা দাদ, এডজুট্যাণ্ট জেনারেল। (১০) মেঃ জেঃ গুল হাসান, চীফ অব দি জেনারেল স্টাফ। (১১) মেঃ জেঃ রাও ফরমান আলী খান, সিভিল এফেয়ার্স এডভাইজার, গভর্নমেণ্ট অব ইস্ট পাকিস্তান। (১২) ব্রিগেডিয়ার আনসারী (মেঃ জেঃ আনসারী) (স্টেশন কমাণ্ডার, ঢাকা), (পরে-পি-ও-সি, ৯-ডিভিশন)। (১৩) মেঃ জেঃ নজর হুসেন শাহ। (১৪) মেঃ জেঃ কাজী আবদুল মজিদ। (১৫) লেঃ জেঃ পীরজাদা, (পি এস ও টু জেঃ ইয়াহিয়া খান। (১৬) মেজর জেনারেল জামশেদ। (১৭) মেঃ জেঃবাহাদুর শের।


  1. ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে ক্যাপ্টেন পদে ঢাকা সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন।