গত ১২ মে মুক্তিবাহিনী কসবা অঞ্চলে পাকফৌজের উপর হামলা চালান। মুক্তিবাহিনী এখানে দু’মুখী এমন আক্রমন চালান যে পাকপৌজ দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী ও পাকফৌজের মধ্যে এই ভয়াবহ আক্রমণে একশত ২৭ জন পাকফৌজ নিহত হয়। এদের মধ্যে একজন মেজরও ছিলেন।
মুক্তিফৌজের অতর্কিত আক্রমণে পাকসেনারা নাজেহাল
আগরতলা, ১৮ই মে (পিটিআই)- গতকাল কুমিল্লা জেলায় মুক্তিফৌজের কমাণ্ডো আক্রমণে আড়াই শতাধিক পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়েছে। মুক্তিফৌজের জনৈক কমাণ্ডার জানান, পাকসেনাদের কয়েকটি দল যখন লাকসাম থেকে ফেনী যাচ্ছিল, সেই সময় তাদের উপর অতর্কিতে আক্রমন চালানো হয়।
ইউ-এন-আই জানাচ্ছেঃ গত রবিবার সকালে মুক্তিফৌজের কমাণ্ডোরা রাজশাহীতে পাক-বাহিনীকে আক্রমণ করলে প্রায় ৫০জন পাকসৈন্য নিহত হয় বলে সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে। প্রায় চারঘণ্টা স্থায়ী এই সংঘর্ষে মুক্তিফৌজের হতাহতের সংখ্যা খুবই নগণ্য। গত চারদিনে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় গেরিলা বাহিনী হানা দেয়। শিবগঞ্জ থানা এলাকায় সোনামসজিদে পাক বাহিনীর ওপর গেরিলারা আক্রমণ করলে ৫ জন পাকসৈন্য নিহত হয় এবং ৫জন আহত হয়। পাক-বাহিনীর সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগের মুসলীম লীগ ও জামাতে ইসলামীর ১১ জন সদস্য মনাকশায় মুক্তিফৌজের হাতে প্রাণ হারায়।
গেরিলা বাহিনীর হাতে ৬১ জন পাকসেনা খতম
কৃষ্ণনগর ২০ শে মে (পিটিআই)- বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পাকসৈন্যদের সঙ্গে মুক্তিফৌজের গেরিলাবাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৬১ পাকসৈন্য খতম হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়াছে। আজ সকলে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দর্শনায় মুক্তিফৌজ কমাণ্ডাদের আক্রমণে দু’জন পাকসৈন্য নিহত হয়েছে।
জলপাইগুড়ি থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা জানিয়েছন যে, উত্তরবঙ্গে মুক্তিফৌজ আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে এবং পাঁচগড় ও অমরখানায় পাকবাহিনীর ওপর বেশ কয়েকবার অতর্কিত আক্রমণ চালিয়েছে। পাকসৈন্যরা আতঙ্কিত হয়ে শিবির থেকে বেরিয়ে আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছে। একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, পাকসেনারা দিনাজপুরের বিভিন্ন পুকুরে সাঁতার শিখছে। ঠাকুরগাঁয়ে অবস্থিত পাক সেনারা একটি গীর্জা বাড়ীকে রান্নঘরে রূপান্তরিত করেছে।
ঢাকায় গ্রেনেড আক্রমণের কথা পরোক্ষে স্বীকার
নয়াদিল্লী, ২১মে (পি টি আই) - বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা বাহিনী কর্তৃক খোদ ঢাকা শহরের বুকে গেরিলা আক্রমণ চালাবার যে সংবাদ ইতিপূর্বে ভারতে এসে পৌছেছিল পাকিস্তান পরোক্ষে তা স্বীকার করেছে। আজ সকালে পাক বেতার থেকে বলা হয়, সামরিক আইন প্রশাসক এ বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, নাশকতার কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। ওই ঘোষনায় আরও বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে কাউকে হাতগ্রেনেড ছোড়ার সময় ধরা হলে তাকে ওই শাস্তি দেওয়া হবে।
পাক কর্তৃপক্ষের ওই সতর্কীকরণে আরও বলা হয়েছেঃ শান্তিপ্রিয়, নাগরিকদের মনে অভাব ও ভীতির অবস্থা সৃষ্টির জন্যই ঢাকায় এই হাত বোমা ছোঁড়ার ঘটনা ঘটছে। নাশকতার কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের ধরিয়ে দিলে পুরষ্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।