পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (নবম খণ্ড).pdf/৪৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : নবম খণ্ড
৪৪১

 শরণার্থী সেবাদলঃ বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে ৬০ জন শরণার্থী যুবক কলকাতায় সমাজসেবা সম্পর্কে ট্রেনিং লাভ করছেন। গান্ধী শান্তি সংস্থা ঐ শরণার্থী যুবকদের প্রাথমিক চিকিৎসা, নাসিং, আহার তৈরী ও বণ্টন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্ক ট্রেনিং দিচ্ছেন। এই যুবকরা বিভিন্ন শিবির খোলা হবে বলে শান্তি সংস্থার জনৈক মুখপাত্র জানান। পুর্বাঞ্চলে শরণার্থী যুবকদের জন্য ছয়টি ট্রেনিং কেন্দ্র খোলা হবে বলে শান্তি সংস্থার জনৈক মুখপাত্র জানান। পুর্বাঞ্চলে শরণার্থী যুবকদের জন্য ছয়টি ট্রেনিং কেন্দ্র খোলা হবে আশা করা যায়।

 নৌকার মধ্যে ৩ হাজার শরণার্থীঃ ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদ সীমান্তে ইছামতী নদীর ওপর দেশী নৌকার মধ্যে প্রায় তিন হাজার শরণার্থী বাসকরছেন।

-যুগান্তর, ৭ জুন ১৯৭১

মুক্তিফৌজের ব্যাপক ও প্রচণ্ড আক্রমণে বহু পাকসৈন্য খতম

 আগরতলা, ৮ই জুন (পি টি আই)- বাংলাদেশের পুর্বাঞ্চলে কুমিল্লা জেলার সামরিক গুরুত্বপূর্ণ কসবা এলাকায় মুক্তিফৌজ আবার নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছে। আজ এখানে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে যে, গতকাল মুক্তিফৌজ মর্টার ও মেশিনগান নিয়ে প্রচণ্ড আক্রমণ চালালে তেত্রিশজন পাকসৈন্য নিহত হয় এবং পাকসৈন্যরা কসবা থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়। পাকসৈন্যদের জন্য যুবতী নারী সংগ্রহ করে দেওয়ার অপরাধে মুক্তিফৌজ ৬জন পাক দালালকেও গুলি করে হত্যা করেছে।

 মুক্তিফৌজ গেরিলাবাহিনীও গতকাল কসবার নিকটবর্তী গঙ্গাসাগরে ত্রিমুখী আক্রমণ চালিয়ে ২৮ জন পাকসৈন্য খতম করে।

 আরও দক্ষিণে মুক্তিফৌজ গতকাল নোয়াখালী জেলার চাঁদগাজী, ছাগলনাইয়া, বান্ধুরা, আমতলী ও জগন্নাথদিঘী এলাকায় তাদের তৎপরতা বিস্তৃত করে এবং পাকসৈন্যদের পশ্চাদপসরণ করে ফেনী শহরে সরে যেতে বাধ্য করে।

 রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, এই সকল অঞ্চলে মুক্তিফৌজ কমাোবাহিনীর সঙ্গে দু’দিনব্যাপী প্রচণ্ড যুদ্ধে বহু পাকসৈন্য হতাহত হয়েছে। ফেনী শহরের উপকণ্ঠে মুক্তিফৌজের গেরিলা দল লুকিয়ে থেকে অতর্কিত সাফল্যের সঙ্গে এক প্লাটুন পাকসৈন্যকে আক্রমণ করে। পাকসৈন্যরা ঐ সময় একটা ছোট নদী পার হচ্ছিল গেরিলাদের আক্রমণে সাতজন পাকসৈন্য এবং অপর কয়েকজন আহত হয়।

 রংপুর জেলায়ও তৎপরতাঃ কোচবিহার থেকে পিটিআই জানাচ্ছেন যে মুক্তিফৌজ গতকাল রাতে বাংলাদেশের রংপুর জেলার নাগেশ্বরী থানার এলাকাধীন মুকসী গ্রামে অতর্কিত আক্রমন চালিয়ে অন্যূন বারজন পাকিস্তানী সৈন্য খতম করেছে। আজ এখানে সংবাদ পাওয়া গেছে যে, ঐ অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগরত একটি পাকিস্তানী সেন্য খতম করেছে। আজ এখানে সংবাদ যে, ঐ অঞ্চলের গ্রামে গামে অগ্নিসংযোগরত একটি পকিস্তানী টহলদার বাহিনীর সৈন্যদের ওপরই মুক্তিফৌজ এই আক্রমণ চালায়। মুক্তিফৌজ ভূরুঙ্গামারীতে একটি পাকঘাঁটির ওপর হানা দিয়ে দুজন পাকসৈন্যকে গুরুতরভাবে জখম করেছে। মুক্তিফৌজ পাকসৈন্যদের সঙ্গে গুলী বিনিময় করে এবং তাহাতে কয়েকজন পাকসৈন্য নিহত হয়। এই সকল অভিযানে মুক্তিফৌজের মাত্র দু’জন আহত হয়েছে।

 মুজিবনগর থেকে প্রাপ্ত খবরে বলা হয়েছে যে, রবিবার রাতে রাজশাহী খণ্ডে মুক্তিফৌজ অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে জনৈক মেজরসহ ৪৯ জন পাকিস্তানী সেনাকে বন্দী করেছে।

-যুগান্তর, ৯ জুন, ১৯৭১