পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (নবম খণ্ড).pdf/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : নবম খণ্ড
৪৬৮

 ১৫-৮-৭১- একদল মুক্তিযোদ্ধা কর্তৃক ভায়াবহ ঘাটে পাকবাহিনী একটি দলের সাথে অবিরাম ৪ ঘণ্টা গুলি বিনিময়ের ফলে ১৯ জন রাজাকার নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়। উক্ত রাজাকারদের নিকট থেকে ৪ টি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।

 ২৬-৮-৭১- মেজর আফছার সাহেবের নির্দেশে প্লাটুন কমাণ্ডার আইয়ুব আলীর নেতৃত্বে একদল মুক্তিসেনা ভালুকা থানার ভায়াবহ এলাকা দিয়ে অগ্রসর হয়ে মল্লিকবাড়ী ঘাঁটি আক্রমণ করেন। ফলে পাকসেনাদের ৮ জন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। ২৭-৮-৭১- ভালুকা থানার বাটাজুর এলাকায় পাকসেনাদের একজন গুপ্তচর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হাকিম সাহেবের দলভুক্ত প্লাটুন কমাণ্ডার নারায়ণচন্দ্র পালের হাতে ধরা পড়ে, তাকে পরে হত্যা হরা হয়। ২৮-৮-৭১- ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হাকিম সাহেবের নেতৃত্বে প্লাটন কমাণ্ডার ফজলুল হক বেগ, নুরুল ইসলাম ও হাফিজুর রহমান তাদের দলের মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ঢাকা জেলার কালিয়াকৈর থানার শালদাহপাড়া এলাকায় হানা দেন। এই হামলায় পাকবাহিনীর কুখ্যাত দালাল ও রাজাকার সাহেব আলী গ্রেপ্তার হয় ও তাকে হত্যা হরা হয়। অনেক লুটের মাল উদ্ধার করা হয় এবং এই সমস্ত মালামাল তাদের প্রকৃত মালিক ও গরিবদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। ২৯-৮-৭১-প্লাটন কমাণ্ডার কাছিমউদ্দিন তার দল নিয়ে মল্লিকবাড়ী ঘাঁটিতে গেরিলা অক্রমণ চালান, ফলে পাকসেনাদের ৪ জন নিহত ও ৩জন আহত হয়।

 ১-৯-৭১- প্লাটুন আইয়ুব আলী ও সেকশন কমাণ্ডার আমজাদ হোসেন মিলিতভাবে মল্লিকবাড়ী ঘাঁটি আক্রমণ করেন, ফলে ১২ জন রাজাকার নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। ২-৯-৭১- প্লাটুন কমাণ্ডার কছিমউদ্দিন তার দল নিয়ে ভালুকা পাকসেনাদের ঘাঁটিতে গেরিলা আক্রমন চালান। ফলে ২জন সান্ত্রী নিহত ও ৩ জন আহত হয়। ৩-৯-৭১- সেকশন কমাণ্ডার আমজাদ হোসেন ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ভালুকা থানার ভরাডুবা গ্রামে একদল রাজাকারের উপর আক্রমণ করেন। ফলে ৫ জন রাজাকার নিহত হয়। ৪-৯-৭১-এই তারিখে বিকাল ৩ ঘটিকায় ভালুকা থেকে ভরাডুবা ও মেদুয়ালী এলাকায় ২ শতাধিক রাজাকার ও পাকবাহিনীর একটি দল বাজার ও বাড়ি ঘর লুট করে এবং বাংলাদেশ সরকারের সমর্থক ৭৬ জন লোককে গ্রেপ্তার করে তাদের মাথায় লুট করা মালের বোঝা চাপিয়ে ভালুকায় ফিরতে থাকে। এই খবর পেয়ে প্লাটুন কমাণ্ডার মোঃ হাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, দিলদার আহমেদ, মোঃ আবদুল মোতালেব, মনিরউদ্দিন ও আব্দুল মান্নানসহ মোট ১৪ জন মুক্তিসেনা নিয়ে ৪ মাইল রাস্তা দৌড়ে যেয়ে ভাণ্ডার গ্রামের সীমান্তে পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। আক্রমণের ফলে ১২ জন রাজাকার নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। গ্রেফতারকৃত সমস্ত লোক ও লুট করা জিনিসপত্র ফেলে পাকাসেনারা ভালুকা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। পাকসেনাদের নিকট থেকে ১০টি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।

 ১০-৯-৭১-পাকবাহিনীর একটি দল ভালুকা ঘাঁটির পাকসেনাদের খাদ্য সম্ভার বড় বড় ৫টি নৌকা বোঝাই করে ভালুকা আসার পথে কোম্পানী কমাণ্ডার চাঁন মিয়া তার দল নিয়ে ঝালপাজা গ্রামে আক্রমণ করেন। যুদ্ধে ৪ জন পাকসেনা নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। নৌকাসহ ৫৭০ মণ আটা ও ২০ মণ চিনি মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। উক্ত আটা ও চিনি রাজৈ ইউনিয়নের গরীব দুঃখীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। ১৩-৯-৭১- অধিনায়ক মেজর আফছার সাহেবের ব্যাটালিয়নের কোম্পানী কমাণ্ডার আবুল কাশেম একটি কোম্পানী ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসার পথে রায়ের গ্রাম এলাকায় এক স্কুলে রাত্রি যাপন করেন। গ্রাম্য রাজাকার ও দালালরা খবর দেওয়ার ফলে ত্রিশাল ও গফরগাঁও ঘাঁটি থেকে পাকবাহিনী ভোর রাত্রে তিন দিক থেকে আতর্কিত আক্রমণ চালায়। দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা যুদ্ধের পর কাশেম সাহেবের দল কর্তৃক ১৬ জন পাকসেনা ও ৫ জন রাজাকার নিহত হয়। এই যুদ্ধে ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

 ১৫-৯-৭১- প্লাটুন কমাণ্ডার আইয়ুব আলী, দিলদার আহমেদ, হাফিজুর রহমান, মোঃ আবুল কাশেম যথাক্রমে কুমারঘাট, মুচারঘাট, বান্দিয়া ও নিমুরী এলাকায় দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা যাবৎ পাকসেনাদের সাথে যুদ্ধ করেন। ফলে ৫জন রাজাকার নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। ১৮-৯-৭১- কোম্পানী কমাণ্ডার মোমতাজউদ্দিন খানের