পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (নবম খণ্ড).pdf/৪৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : নবম খণ্ড
৪৭১

 ২৮-১০-৭১- মেজর আফছার সাহেবের নির্দেশে কোম্পানী হাকিম ঢাকা জেলায় কালিয়াকৈর থানার কচিঘাটা এলাকায় পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা যুদ্ধে ৫২ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৩০- ১০-৭১- অধিনায়ক আফছার সাহেব নিজেই একদল মুক্তিসেনাসহ ঢাকা জেলার কালিয়াকৈর থানার ফুলবাড়িয়া এলাকায় পাকসেনার ওপর হামলা করেন। ফলে জন পাকসেনা নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। মুক্তিসেনারা মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পুল সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেন। ৩১-১০-৭১- অধিনায়ক আফছার সাহেব কোম্পানী কমাণ্ডার মোমতাজউদ্দিন খান, সিরাজুল হক, হালিমউদ্দিন এবং তাদের জোয়ানদের নিয়ে গফরগাঁও থানার রসুলপুরে (আমলীতলা) রাজাকার ঘাঁটি আক্রমণ করেন। এই যুদ্ধে মোট ৬৮ জন রাজাকার নিহত হয়। ৬৫ টি রাইফেল, একটি স্টেনগান ও ৩ বাক্স গুলি উদ্ধার করা হয়। ঘাঁটিখানা মুক্তিসেনাদের দখলে আসে। এই যুদ্ধে অসীম সাহসী যোদ্ধা মোমতাজউদ্দিন খান শহীদ হন।

 ৯-১১-৭১- মেজর আফছার সাহেব নিজে কোম্পানী কমাণ্ডার সামছউদ্দিন আহমেদ, ফয়েজউদ্দিন ও মোতালেব হাবিলদার এবং মুক্তিসেনাদের নিয়ে মল্লিকবাড়ী ঘাঁটি আক্রমণ করেন। এই যুদ্ধে ৩৩ জন পাকসেনা ও ৬ জন রাজাকার নিহত হয়। পাকবাহিনী ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় এবং ঘাঁটিটি মুক্তিসেনাদের আয়ত্তে আসে। ১০-১১-৭১- কোম্পানী কমাণ্ডার চাঁন মিয়া রাজৈ এলাকায় পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ চালিয়ে পাকসেনাদেরকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেন এবং একটি রাইফেল ও ৪৪ রাউণ্ড গুলিসহ একজন রাজাকারকে গ্রেপ্তার করেন। ১১ নভেম্বর অধিনায়ক আফছার সাহেব কমাণ্ডার চাঁন মিয়া, সিরাজুল হক ও দুলু একত্রিত হয়ে ভালুকায় পাকঘাঁটি আক্রমণ করেন। দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা যুদ্ধের ফলে ৯ জন পাকসেনা ও ৭ জন রাজাকার নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়। পরদিন ভালুকা থানার চান্দের আটি গ্রামে একদল পাকসেনা লুট করতে গেলে কোম্পানী কমাণ্ডার চাঁন মিয়া তার দল নিয়ে পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ করেন। ১১ ঘণ্টা এই যুদ্ধে ১১ জন পাকসেনা ও ৯ জন রাজাকার নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। মুক্তিবাহিনীর প্লাটুন কমাণ্ডার সমশের আলীসহ ৫ জন মুক্তিসেনা শহীদ হন। ১৩-১১-৭১- কোম্পানী কমাণ্ডার ফজলুল ওয়াহাব ও চাঁন মিয়ার পরিচালনায় ভালুকা থানার ও ভাওয়ালিয়া বাজু এলাকায় পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়। ৩ জন পাকসেনা ও কয়েকজন রাজাকার আহত হয়।

 ১৫ নভেম্বর- পাকবাহিনী ও রাজাকার বাহিনী প্রায় ৪ শতাধিক সৈন্য ধানশুর গ্রামে ঢুকে অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ করতে থাকে। মেজর আফছার সাহেবের পরিচালনায় তিনদিক থেকে পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ করা হয়। এই যুদ্ধে পাকবাহিনী ও রাজাকার সমন্বয়ে ৩৪ জন নিহত হয়। মুক্তিসেনা জহিরউদ্দিন শহীদ হন। ২-১২-৭১- কোম্পানী কমাণ্ডার মোছলেহ উদ্দিন আহমেদ, প্লাটুন কমাণ্ডার এমদাদুল হক ও নাজিম উদ্দিন খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ধানশুর ও কাটালী গ্রামের বড় রাস্তায় পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করেন। এই যুদ্ধে ১৪ জন পাকসেনা ও ১৩ জন রাজাকার নিহত হয়। একই দিন মশাখালী ও কাওরাইদ থেকে পাকবাহিনী রাজৈ গ্রামে লুট করতে আসলে কোম্পানী কমাণ্ডার চাঁন মিয়া প্লাটুন কমাণ্ডার মজিবর রহমান ও নজরুল ইসলাম মুক্তিবাহিনীর দল নিয়ে পাক সেনাদের ওপর গুলি চালান। এই যুদ্ধে একজন পাকসেনা নিহত হয়। ৩ ডিসেম্বর প্লাটুন কমাণ্ডার আবুল হাশিম ও কোম্পানী কমাণ্ডার ফজলুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে ভালুকা থানার ভাওয়ালিয়া বাজু এলাকায় পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করা হয়। ফলে ৩ জন পাকসেনা ও ২৭ জন রাজাকার নিহত হয়। একজন রাজকার তার নিজ দলের কমাণ্ডারকে ও একজন রাজাকারকে হত্যা করে ৩ টি রাইফেলসহ মুক্তিবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। ৪-১২-৭১- ভালুকা থানার চাপড়াবাড়ী এলাকায় রাজাকারদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে ৩ জন রাজাকার হত্যা করা হয়। একই দিন কোম্পানী কমাণ্ডার মোছলেহ উদ্দিন আহমেদ ও প্লাটুন কমাণ্ডার গিয়াসউদ্দিন আহমেদ একদল মুক্তিসেনা নিয়ে কাঠালী ও বাশিল একালায় পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করেন। ফলে ৭ জন পাকসেনা ও ১০ রাজাকার নিহত ও কয়েকজন আহত হয়।

 ৬-১২-৭১- বিকাল ৪ ঘটিকায় ঢাকা জেলার কালিয়কৈর হতে ৪টি ট্রাক ভর্তি হয়ে পাকসেনারা যাওয়ার সময় কোম্পানী কমাণ্ডার হাকিম সাহেব, প্লাটুন কমাণ্ডার দিলদার আহমেদ ও নারায়ণচন্দ্র পালের নেতৃত্বে