পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চদশ খণ্ড).pdf/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চদশ খণ্ড
১২১

 ১১ই ডিসেম্বর আরেকটি প্রস্তাব নিয়ে পাকিস্তানীরা উপস্থিত হয় এবং সমঝোতার জন্য চাপ দেয়। তারা এই প্রস্তাব পেশ করার জন্য বিচারপতি চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি পাকিস্তানীদের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে একটি ভীতিপূর্ণ ঘটনা ছিল চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে সপ্তম নৌবহরের যাত্রা। আমার বিশ্বাস, যদি কংগ্রেসে ব্যাপারটা ফাঁস না হয়ে যেত তাহলে হয়ত বা সত্যি সত্যি নৌবহর চট্টগ্রামের নিকট এসে যেত।

 এ সময় আমরা সবাই ঢাকার অবস্থা নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত ছিলাম। কংগ্রেসে সদস্য কোরম্যান কর্তৃক আয়োজিত একটি ভোজসভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। সেখানে এশিয়ার ব্যাপার নিয়ে গবেষণারত মার্কিন বুদ্ধিজীবীদের সমাবেশ হয়। সেদিন আমদের প্রধান চিন্তার বিষয় ছিল নতুন বাংলাদেশ কেমন হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অত্যাচারে নিপীড়িত জাতিকে কি অবস্থায় আমরা পাব আর কি করে এর পুনর্বাসন করা যাবে। ১৬ তারিখ দেশ স্বাধীন হলো এবং ১৮ তারিখে জানতে পারলাম বাংলাদেশের বহু বুদ্ধিজীবীকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন আমি ইয়েলে গিয়েছিলাম অধ্যাপক নূরুল ইসলামকে ঢাকার পথে বিদায় দিতে।

 বোষ্টনে একদল বাঙালী মার্কিন বন্ধুদের সহায়তায় স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক রূপরেখা প্রণয়নে মনোনিবেশ করেন অক্টোবরের দিকে। মহিউদ্দিন আলমগীর, হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া, মতিলাল পাল এরা এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা নেন। অধ্যাপক ডর্ফম্যান ও হার্ভার্ড পপুলেশন সেণ্টার এবং অধ্যাপক নূরুল ইসলাম এই উদ্যোগের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিশ্ব ব্যাংকে প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রতিবেদন এ কাজে আমাদের সাহায্য আসে। মার্চ মাসেই বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্বন্ধে আমি একটি প্রতিবেদন তৈরী করেছিলাম। ইষ্ট পাকিস্তান পরিকল্পনা বিভাগের তৈরি পুনর্গঠন পরিকল্পনাও আমাদের হাতে আসে। এই সবের ওপর ভিত্তি করে আমরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠন পরিকল্পনা খসড়া তৈরি করি। অধ্যাপক নূরুল ইসলাম এই খসড়া নিয়ে বাংলাদেশের পথে পাড়ি দেন স্বাধীন হওয়ার অব্যবহিত পরেই।

 মুজিব নগর থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব তওফিক ইমামের কাছ থেকে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ পরিকল্পনা বোর্ড স্থাপনের খবর পাই। বোর্ডে যোগদানের জন্য অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, আনিসুর রহমান ও হারুনুর রশীদের প্রতি আহ্বান আসে। এই প্রসঙ্গে খাদ্য ও দুর্ভিক্ষের ওপর সিনেটের রিফিউজী সাব কমিটির জন্য আমাকে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে হয়। এই সাব কমিটির জন্য পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যা সম্বন্ধেও আরেকটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করি ডিসেম্বরে। ঐ মাসে বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামো সম্বন্ধেও একটি প্রস্তুত করার সুযোগ আমার হয়। এসব কাজে বিশ্বব্যাংক এবং ইউ, এস, এইডের কর্মকর্তাদের সাহায্য ও হারুনুর রশীদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। মোটামুটিভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য নানা ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন আমরা বিদেশে থেকেও অনুভব করি আর তার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নিই।

আব্দুল মুহিত
৩০ জানুয়ারি, ১৯৮৪


এম আর সিদ্দিকী

 It was 1st March 1971. News came on the Radio that the elected National Assembly will not meet. Sheikh Mujibur Rahman was in a meeting in Hotel Purbani. He was enraged. He came out and declared hartal on 2nd for Dhaka and on 3rd for the rest of the country. A meeting was called for 7th March at Race Course Maidan. He declared that there will be no co-operation with the Government. No one will pay any taxes and duties. No bank will payout any fund without clearance from local Awami Leaguc Chicf. The struggle began.