পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চদশ খণ্ড).pdf/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চদশ খণ্ড
২০৪

জনাব ওয়ালিউল ইসলাম, ডি এস, জেনারেল এডমিনিস্ট্রেশন; জনাব কামাল উদ্দিন আহমেদ, ডি এস, জেনারেল এডমিনিস্ট্রেশন; জনাব মামুনুর রশিদ, ডেপুটি রিলিফ কমিশনার; জনাব সাদত হোসেন, পি এস, ফাইন্যান্স মিনিস্টার; জনাব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, পি এস, ফরেন মিনিস্টার; জনাব কাজী লুৎফুল হক, পি এস, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি; জনাব খায়রুজ্জামান চৌধুরী, ডি, এস, ফাইন্যান্স; জনাব আকবর আলী, ডি, এস; জনাব আহমদ আলী, ডি, এস স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনাব মাখন লাল মাঝি, ট্রেজারী অফিসার; ধীরাজ নাথ, পি, এস, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী; জনাব শিলাব্রত বড়ুয়া, অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি, (আরও অনেকে)।

 শেষ পর্যায়ে জনাব রুহুল কুদ্দুস সাহেব (প্রাক্তন সিনিয়র সি, এস, পি,) মুজিবনগর সচিবালয়ে যোগদান করেন। কিছু দিনের মধ্যে সেক্রেটারী জেনারেল পদটি তুলে দিয়ে তাঁকে প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় তখন নূরুল কাদের খান সাহেব শুধু সংস্থাপন বিভাগের সচিব থাকেন।

 জোনাল এডমিনিস্ট্রেশনে যারা বিভিন্ন জোনে মুখ্যপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তাঁদের কয়েকজনের নাম হলঃ জনাব ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ, জনাব এস, এ, সামাদ, জনাব সামছুল হক, জনাব কাজী রফিক উদ্দিন, জনাব বিভূতিভূষণ বিশ্বাস, জনাব আবদুল মোমেন, (আরও অনেকে)।

 সবশেষে একটা কথা বলা প্রয়োজন মনে করি। অনেককেই মন্তব্য করতে শুনি যে, যারা মুজিবনগরে গিয়ে সরকারের চাকুরীতে নিয়োগ লাভ করেছেন তারা মহাসুখে দিন কাটিয়েছেন। কথাগুলি মোটেই সঠিক নয়। তাদের অধিকাংশই নিদারুণ দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে দিন কাটিয়েছেন। তাদের না ছিল সুস্থ থাকার পরিবেশ, না ছিল আর্থিক সংগতি। মন্ত্রী থেকে প্রথম শ্রেণীর অফিসার পর্যন্ত সবাইকে দেয়া হোত সর্বমোট ৫০০/- টাকা, মাসিক এলাউন্স হিসেবে। তাই দিয়ে অফিসারগণ কোন মতে তাদের পরিবারসহ থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে নিতেন। মন্ত্রীবর্গ ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির জন্য অবশ্য থাকা-খাওয়ার অন্য ব্যবস্থা ছিল। সবার সঠিক খবর বলা কঠিন। তবে একান্ত ব্যক্তিগত হলেও আমি বলতে চাই বাংলাদেশের রিলিফ কমিশনার হিসেবে নিয়োজিত থাকাকালীন আমি আমার এক পুত্র সমেত ৯৩/১এ বৈঠকখানা রোডে এক মেসে এক সিটে থাকতাম। মাসিক ভাড়া ৮ টাকা। কোনমতে কলকাতার মত স্থানে নিজেকে চালিয়ে বাকী টাকা পরিবারের জন্য পাঠাতে হতো। কষ্ট করেছি কম নয়। তবু এ কথা বলব, আমরা অনেকের চেয়েই ভালো ছিলাম। আমাদের মনে বুকভরা আনন্দ ছিল। দেশকে স্বাধীন করবো। স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে আত্মনিয়োগ করবার সুযোগ কজনের ভাগ্যে জোটে। তাই আমরা ধন্য।

জয় গোবিন্দ ভৌমিক
জুন, ১৯৮৪।

দেওয়ান ফরিদ গাজী

 ৭ই মার্চ থেকে এপ্রিলের ২৮ তারিখ পর্যন্ত আমি সিলেটের বিভিন্ন স্থানে সংগ্রাম পরিষদ গঠন, স্বেচ্ছাসেবক, আনসার, সাবেক ই, পি, আর, পুলিশ, ছাত্রকর্মীদের সহযোগে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ব্যবস্থা করি। সিলেট শহর, গোপালগঞ্জ, মৌলভীবাজার, শেরপুর প্রমুখ স্থানে প্রতিরোধ যুদ্ধ পরিচালনায় সক্রিয় অংশ নেই। মেঘালয়ের করিমগঞ্জে অবস্থানকালে আমি প্রায় ৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন করে তাদের থাকা-খাওয়া ও ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করি। আমি বাংলাদেশ সরকারের বেসরকারী উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করি। যুদ্ধ পরিচালনা এবং জনমত সৃষ্টি প্রভৃতি দায়িত্বও পালন করি। উত্তর-পূর্ব জোনের প্রশাসনিক পরিষদের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করি। মিত্রবাহিনরি সহযোগে যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে জাকিরগঞ্জ, খামাইঘাট, গোয়াইনঘাট,