পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

137 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড মীরজাফরেরা তেমন নিক্রিয় নয়। দেশবন্ধু তাই একসময়ে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, “পরাধীন দেশের সবচেয়ে বড় অভিশাপ এই যে, মুক্তিসংগ্রামে বিদেশীদের অপেক্ষা দেশের লোকদের সঙ্গেই মানুষকে যুদ্ধ করতে হয় বেশী।” সোনার বাংলার লক্ষ লক্ষ নীরিহ ‘মাসুম নরনারী, শিশু, যুবক-যুবতীকে নির্বিচারে হত্যার অপরাধে, লক্ষ লক্ষ নারীর শ্লীলতাহানি ও সতীত্ব নষ্ট করার অপরাধে, বাংলার কোটি কোটি টাকার ধন-সম্পদ বিনষ্ট করা, লুটপাট ও চুরি-ডাকাতির অপরাধে, প্রায় ৯৫ লক্ষ নরনারী-আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা নির্বিশেষে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করার অপরাধে এবং অপর প্রায় ২ কোটি লোককে গৃহহারা-বাস্তুহারা এবং ছিন্নমূল করার অপরাধে, লক্ষ লক্ষ কর্মক্ষম ব্যক্তিকে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ হতে বঞ্চিত করা তথা চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করার অপরাধে ইয়াহিয়া-টিক্কা-ভুট্টো-হামিদ যেমন অপরাধী- তেমনি এই জলল্লাদচক্রের ক্রীড়নক সহযোগী মাহমুদ আলী, ডাঃ মালিক, নুরুল আমীন গং এবং তাদের প্রত্যেকটি সক্রিয় সমর্থক ও তাঁবেদারগণও সমভাবে অপরাধী এবং সমভাবে শাস্তির যোগ্য। ফৌজদারী দণ্ডবিধি আইনের বিধানানুসারে হত্যাকরী এবং তার সহযোগীকে একই আইনে ফাঁসি দেয়ার বিধান চালু আছে। সহযোগী বা FREETRFso Toff Toof São Tosi SIC. As if he himself Committed murderঅর্থাৎ, সহযোগী যেন নিজেই খুন করেছে। কাজেই ইয়াহিয়া চক্রের দালালদের সম্পর্কে এই চালু ফৌজদারী Teff SIĘī Hoff 2IFITSIJI IHotel, "Truth shall prevail" -aĚ universal truth HI HIÁSĪTI সত্য- অর্থাৎ সত্যের জয় হবেই, আমাদের পবিত্র কোরানেও আছে قل جاء الحق وزهق الباطل ان الباطل كان زهوقام অর্থাৎ “সত্য সমাগত- মিথ্যা অপসৃয়মাণ, এবং মিথ্যা অবশ্যই ধ্বংসপ্রাপ্ত হইবে।” আমাদের এই আজাদীর সংগ্রাম মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের সংগ্রাম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রাম, জালেমের বিরুদ্ধে সাড়ে সাত কোটি বঞ্চিত মজলুমের সংগ্রাম। আমাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুর ভাষা‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” এই যুদ্ধে ইনশাল্লাহ আমরা কামিয়াব হবই। আমাদের মনজিলে মকসুদে আমরা পৌছবই। দুনিয়ার সমস্ত আজাদীর ইতিহাসে দেখা যায় স্বাধীনতা “অর্জন করা হয়েছে”। স্বাধীনতার জন্য লক্ষ লক্ষ দেশপ্রেমিক কোরবান হয়েছে, নানাভাবে আজাদী পাগল মানুষ নির্যাতন ভোগ করেছে- কিন্তু শির দিয়েছে তবু আমামা দেয়নি। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে হেসে হেসে ফাঁসির রজ্জ্ব বরমাল্যের মত কণ্ঠে বরণ করে আজাদীর জয়গান গেয়েছে, তবুও জাতির স্বাধীন সত্তাকে বিলিয়ে দেয়নি- স্বাধীন পতাকাকে অপমানিত হতে দেয়নি। ইতহাসে মহাচীন, আমেরিকা, ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়া যুগ যুগ ধরে যুদ্ধ করে স্বীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কেহই স্বাধীনতা দান হিসাবে বিনা রক্তপাতে পায়নি। অবশ্য ওদের মুক্তিসংগ্রামে সহায়তা পেয়েছে সভ্য জাতির নিকট হতে, সক্রিয় বা পরোক্ষ সমর্থন পেয়েছে। আমরাও আশা রাখি, দুনিয়ার সমস্ত সভ্য দেশ হতে সাহায্য সমর্থন পাবো। পাক-ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা অর্জন সম্পর্কে অনেকের হয়ত ভ্রান্ত ধারণা যে, মেহেরবানী করে বৃটিশ সরকার আমাদিগকে স্বাধীনতা দান করে গিয়েছেন। বাস্তবপক্ষে কি তাই? ১৮৫৭ ইং সনের সিপাহী বিদ্রোহ, ক্ষুদিরাম, ভগৎসিং এবং হাজার হাজার সিপাহীর ফাঁসির কি কোন দাম নেই? তোজী সুভাষ বসুর পরিচালনায় বার্লিন, সিঙ্গাপুর, মালয়, বৰ্মা ও বিভিন্ন স্থানে যে প্রায় পঞ্চাশ হাজার আজাদ হিন্দু ফৌজ গঠন করা হয়েছিল, তা কি কম চাঞ্চল্যকর? মনিপুর ও ইম্পল অপরেশনে যে প্রায় ছয় হাজার আজাদ হিন্দু ফৌজ (INDIAN NATIONAL ARMY) অনাহারে-অর্ধাহারে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, এবং ১৯৪২ থেকে ১৯৪৬ সন পর্যন্ত বিভিন্ন রণাঙ্গনে মিত্র পক্ষ তথা ব্রিটিশ আর্মির হাতে যে বিভিন্নভাবে প্রায় ২০ হাজার আজাদ হিন্দু ফৌজ বন্দী হয়েছিল, নির্যাতন ভোগ করেছিল বা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল, তা কি এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যায়নি? বৰ্মা, রেঙ্গুন, সুমাত্রা, সিঙ্গাপুর, জার্মানী, জাপান ও অন্যান্য স্থানের লক্ষ লক্ষ ভারতীয় (তদানীন্তন) নাগরিকগণ কেহ কেহ তাদের সমস্ত ধন-সম্পত্তি ও কোটি কোটি টাকা এবং কেহ কেহ