পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

224 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড নেই। যশোর দুর্গ পতনের পর, ময়নামতি দুর্গ অবরুদ্ধ হওয়ার পর, সিলেট জেলা, রংপুর এবং যশোর খুলনার বিস্তীর্ণ অঞ্চল মুক্ত হওয়ার পর আর কি ভাবছে বাংলার স্বার্থবিরোধী, বাঙলার চরম শত্রু পাকবাহিনী এবং তার অনুচরেরা? আজ মুক্তিবাহিনীর পথ রোধ করবে কে? কোথায় সে শক্তি? নিঃশেষিত শক্তি পাকিস্তানের আজ দুঃসাহসী মুক্তিবাহিনীর দৃঢ়পণ, বজ্ৰমুঠিতে ধরে রাখা হাতিয়ার আজ বদ্ধপরিকর সব অনাচারী, অত্যাচারী, জুলুমবাজদের মূলোচ্ছেদ করার জন্য। লাখো শহীদের রক্তলাল-বাঙলায় উদিত আজ স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। উত্তাল বিজয়-উল্লাসে মুখরিত বাংলা আকাশ-বাতাস। আজ শোন বর্বরের দল, হয় মৃত্যুবরণ করো নয় পরাজয়ের কালি ললাটে লেপন করে আত্মসমর্পণ করো। বাংলার মাটিতে ঠাই নেই তোমাদের। দুর্জয়, দুর্বার বাঙলার মুক্তিবাহিনী এগিয়ে চলো। সংহার করো, নিঃশেষ করো অনাচারী বর্বরদের। বাঙলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ তোমাদের বিজয়-আহবান জানাতে প্রস্তুত। সুদূর দিনাজপুরের বাংলাবান্ধা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দৃঢ় দুর্দমনীয় হোক তোমাদের পদক্ষেপ। মনোবলহীন, ক্লাব, কুৎসিৎ হানাদার আজ মৃত্যুর দিন খুঁজছে বন্দীপ্রায় বিবরে। তোমাদের জয়যাত্রায় শরীক সাতে সাত কোটি বাংলার মানুষ। গণহত্যাকারীদের নিঃশেষ করো বাংলার মাটি থেকে (মুস্তাফিজুর রহমান রচিত) এখন অনেক কাজ ২২ ডিসেম্বর, ১০৭১ বাংলাদেশ এখন মুক্ত, কিন্তু আসলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এই সবে শুরু। মুক্ত বাংলার আকাশে নতুন সূর্যের প্রভাতী আবিরে সদ্য স্নান করে উঠেছি আমরা একটা জাতি। তাই নতুন জাতির জন্ম হোল-এখনই না বলে-একটি বাস্তব সত্য মিথ্যার কারামুক্ত হোল একথাই ঠিক। সত্য বনাম মিথ্যার চূড়ান্ত এই মুখোমুখি সংঘর্ষে পতন হয়েছে মিথ্যার, কিন্তু এ রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে সত্যও হয়েছে মারাত্মক ক্ষতবিক্ষত। সে জন্যেই এখন বিজয়ের উল্লাসে বুদ হয়ে আমাদের খুখীর তুফানে ভেসে যাওয়া চলবে না। এখন অনেক কাজ। কারামুক্ত হলেই মুক্তি নয়, মুক্তির জন্য দরকার বেশুমার ত্যাগের-অনাবিল একতার। দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে আমরা শোষিত, ধর্মের নামে ভণ্ডের অত্যাচারে জর্জরিত। আমাদের আকাশে এখন নতুন সূর্য- কিন্তু মাটিতে ২৪ বছরের ভাগাড়ের ধ্বংসাবশেষ। শকুনেরা চব্বিশ বছর ধরে- আমাদের মরা আত্মাকে নখ দিয়ে ছিড়েছে, গায়ের