পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ১। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র টেপ থেকে উদ্ধৃত ২৬-৩০ মার্চ, ১৯৭১ প্রচারিত অনুষ্ঠান (অংশ) “এবার তোমাদের বিদায় নিতে হবে, তবে অক্ষত অবস্থায় নয়। যে রক্ত এতদিন তোমরা নিয়েছো, সে রক্ত এবার আমরাও নেব।” বলেছেন বাংলার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। “বাঙালী রেজিমেন্ট, ই-পি-আর, পুলিশ বাহিনী, মুক্তিসেনা- এগিয়ে যাও। তোমাদের সাথে রয়েছে বাংলার বিপ্লবী বীর জনতা। এরা সবাই রক্ত দিতে প্রস্তুত, আজ এরা রক্ত দেবেই এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে পাকিস্তানী হানাদারদের ওপর এরা আক্রমণ চালাবে।” বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। “পাক সৈন্যদের খতম করুন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ রাখুন। যে পতাকা একবার বাং -- মানুষ উড়িয়েছে,শেষ রক্তবিন্দু থাকতেও সেই পতাকা কোনোদিন তারা ভুলে যাবে না।” বলেছেন স্বাধীন বাংলার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চারজন নেতা। মনে রাখবেন, শত্রসৈন্য ধ্বংস হওয়া না পর্যন্ত এই যুদ্ধাবস্থা চলবেই। তাই আরাম-আয়েশ বিসর্জন দিয়ে, রাতের ঘুম হারাম করে আপনারা আপনাদের বিজয়ের পথে এগিয়ে যান। পশ্চিমা হানাদারেরা এখনো চিনতে পারেনি বাঙালী রেজিমেন্ট, ই-পি-আর, পুলিশ বাহিনী আর মুক্তিসেনা কি জিনিস। তারা ভুলে গেছে, এই বাহিনী বিভিন্ন যুদ্ধে যে শৌর্য ও বীর্য দেখিয়েছে তা তারা এখনো আন্দাজ করতে পারেনি। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস রাখি, যে সমস্ত হানাদার পাকিস্তানী সৈন্য এখনো রয়েছে তাদের বাঙালীরা নিশ্চিহ্ন করে দেবে। জয় বাংলা। সংগীতঃ জয়, জয়, বাংলার জয়... ...। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মরণপণ সংগ্রাম চলেছে। বাংলার বীর সৈনিক, ইষ্ট বেঙ্গল রাইফেলস, ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস, পুলিশ বাহিনী এবং এদেশের প্রতিটি ছাত্র, কৃষক, জনতা, হানাদার পশ্চিমা গুণ্ডা বাহিনীর আক্রমণ সাফল্যের সাথে প্রতিহত করে চলেছে। এবং বাংলার বীর সৈনিকদের আক্রমণে দিশেহারা পশ্চিমা বাহিনী পিছু হটে চলেছে এবং মর্টার, কামান এবং ট্যাঙ্কের সাহায্যে বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গণহত্যা করে চলেছে। পশ্চিমা হানাদার বাহিনী যখন প্রতিটি আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে গতকাল রাত্রে হাসপাতালে পর্যন্ত বোমাবর্ষণ করেছে- বাংলার সাত কোটি মুক্তিপাগল মানুষের উপর যেভাবে পশ্চিমা হানাদার বাহিনী আক্রমণ করে চলেছে, তার প্রতিরোধে বাংলার মানুষকে সর্বাত্মক সহায়তা করা প্রত্যেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নৈতিক কর্তব্য বলে আমরা মনে করি। তাই বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ আজ বিশ্বের কাছে আহবান জানাচ্ছে তারা যেন বাংলার মুক্তিপাগল জনগণের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন। আপনাদের অবগতির জন্য আমরা আরও জানাচ্ছি যে, পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর মেজর জেনারেল টিক্কা খান- যাকে বাংলার বীর জনতা গর্ভনর হিসাবে মেনে নিতে .......... (অস্পষ্ট) অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন, সেই কুখ্যাত টিক্কা খানকে বাংলার বীর স্বাধীন বাংলা বেতারের প্রথম সম্প্রচার কেন্দ্র ছিল চট্টগ্রাম বেতারের কালুরঘাট ট্রান্সমিটার ভবন। ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠান প্রচারের পর হানাদার বাহিনীর বিমান আক্রমণে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায় এবং চট্টগ্রাম সীমান্তবর্তী মুক্তাঞ্চল থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠান পুনঃপ্রচার শুরু হয়। পরবর্তীতে ২৫ মে থেকে মুজিব নগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে বেতার সম্প্রচার পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়।

  • বন্ধনীযুক্ত অংশের টেপ অস্পষ্ট ও বাংলা ভাষণের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।